Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Kira Jari

নিশ্চিহ্ন হওয়ার মুখে সোনার চেয়েও দামি ‘হিমালয়ান ভায়াগ্রা’, উদ্বিগ্ন গবেষকেরা

এখনও পর্যন্ত কৃত্রিম ভাবে এই ছত্রাক তৈরি করা সম্ভব হয়নি। তিব্বতি ও চিনা ভেষজ চিকিৎসকদের দাবি, এই কিরা জরি খেলে যৌন আনন্দ আরও বেশি উপভোগ করা যায়। যে কারণে এই ছত্রাককে অনেকে ডাকেন ‘হিমালয়ান ভায়াগ্রা’ নামেও।

ছবি সৌজন্য: উইকিপিডিয়া।

ছবি সৌজন্য: উইকিপিডিয়া।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৮ ১২:২১
Share: Save:

হারিয়ে যাওয়ার মুখে হিমালয়ের এক অমূল্য সম্পদ। গঢ়বাল, কুমায়ুন ও হিমাচল প্রদেশের স্থানীয় মানুষ এই বিস্ময় ছত্রাককে ডাকেন ‘কিরা জরি’ নামে। বিজ্ঞানসম্মত নাম ওফিওকরডিসেপস সাইনেনসিস। নেপালিরা আবার এই দুষ্প্রাপ্য প্রজাতির ছত্রাককে ডাকেন ‘ইয়ার্সা গুম্বা’ নামে। গরম জল, চা, স্যুপ অথবা স্টু-এর সঙ্গে এই কিরা জরি মিশিয়ে খেলে তা সারিয়ে ফেলতে পারে ক্যানসার থেকে বন্ধ্যাত্ব। এই ছত্রাক যৌবন দীর্ঘস্থায়ী করে, এমনটাই বিশ্বাস অনেকের। সেই বিশ্বাস আর গ্লোবাল ওয়ার্মিং-এর জন্য হিমালয়ের পরিবেশের এলোমেলো আচরণের কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে এই দুষ্প্রাপ্য ছত্রাক।

সারা পৃথিবীতে এই ছত্রাক পাওয়া যায় শুধু হিমালয়েই। ভারত, চিন আর নেপালে। এখনও পর্যন্ত কৃত্রিম ভাবে এই ছত্রাক তৈরি করা সম্ভব হয়নি। তিব্বতি ও চিনা ভেষজ চিকিৎসকদের দাবি, এই কিরা জরি খেলে যৌন আনন্দ আরও বেশি উপভোগ করা যায়। যে কারণে এই ছত্রাককে অনেকে ডাকেন ‘হিমালয়ান ভায়াগ্রা’ নামেও। মূলত এই কারণেই সারা পৃথিবীতে এই ছত্রাকের বিপুল চাহিদা। বেজিং-এ সোনার থেকে তিন গুন বেশি দামে বিক্রি হয় এই ‘ইয়ার্সা গুম্বা’।

মার্কিন জার্নাল ‘ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস’-এর রিপোর্ট অনুযায়ী এই ‘কিরা জরি’ সারা পৃথিবীর সব থেকে দামী জৈব পণ্য। নির্দিষ্ট তাপমাত্রা, নির্দিষ্ট আর্দ্রতা, রোদ এবং আরও বেশ কয়েকটি সূচকের সঠিক মেলবন্ধন হলে তবেই জন্ম নেয় এই ছত্রাক। তাপমাত্রা হতে হবে শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে কিন্ত মাটিতে বরফ থাকা চলবে না। আর উচ্চতা হতে হবে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অন্তত ১১,৫০০ ফুট উপরের উপত্যকায়। কেউ কেউ মনে করছেন, বাজারে বিক্রি করে চড়া দাম পাওয়ার জন্য স্থানীয় মানুষেরা হিমালয়ের দুর্গম এলাকায় ঢুকে অত্যন্ত বেশি পরিমাণে কিরা জরি সংগ্রহ করতে শুরু করেছেন। বিপত্তি সেই কারণেই। কিন্তু মার্কিন গবেষকেরা মনে করছেন, পরিবেশগত তারতম্যও এই দুষ্প্রাপ্য ছত্রাক নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার পেছনে একটা বড় কারণ। চিনে এই ছত্রাকের কেনাবেচা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিন্তু চোরাপথে আকাশছোঁয়া দামে মেলে এই ছত্রাক।

আরও পড়ুন: চিনকে রুখতে ভুটানকে বিপুল সাহায্য ভারতের

কী কারণে এই ছত্রাক প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার মুখে, তা জানতে আসরে নেমেছেন পৃথিবীর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। এ জন্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস-এর গবেষকরা কথা বলেছেন প্রায় আটশো জন স্থানীয় সংগ্রাহক, গবেষক, চিকিৎসক এবং ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তাঁদের প্রাথমিক ধারণা, মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে কিরা জারি সংগ্রহ করাই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার একমাত্র কারণ নয়। এর সঙ্গে আছে পরিবেশগত বিভিন্ন ফ্যাক্টরও।

আরও পড়ুন: ব্রিটিশ রাজপরিবারের পোষা কাককে রক্তমাখানো বিস্কুট খাওয়ান ওয়ার্ডেন!

গ্রাফিক- শৌভিক দেবনাথ

(সারা বিশ্বের সেরা সব খবর বাংলায় পড়তে চোখ রাখতে পড়ুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE