Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
International News

কোনও শর্ত মানব না, পৃথিবীর হয়ে আমেরিকা সিদ্ধান্ত নেবে না, হুঙ্কার প্রেসিডেন্ট রুহানির

ইরানের সঙ্গে হওয়া পরমাণু চুক্তি থেকে চলতি মাসের শুরুর দিকেই বেরিয়ে এসেছিল আমেরিকা। ওয়াশিংটনের এই একতরফা চুক্তিভঙ্গের তীব্র নিন্দায় সরব হয়েছিল তেহরান। সমালোচনা শোনা গিয়েছিল ওই চুক্তির অন্য অংশীদার রাষ্ট্রগুলির মুখেও।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সংবাদ সংস্থা
তেহরান শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৮ ১৬:৩৮
Share: Save:

পাল্টা হুঁশিয়ারির পথে ইরান। আমেরিকার কোনও নতুন শর্ত মানা হবে না। স্পষ্ট ঘোষণা করল তেহরান।

ইরানের সঙ্গে হওয়া পরমাণু চুক্তি থেকে চলতি মাসের শুরুর দিকেই বেরিয়ে এসেছিল আমেরিকা। ওয়াশিংটনের এই একতরফা চুক্তিভঙ্গের তীব্র নিন্দায় সরব হয়েছিল তেহরান। সমালোচনা শোনা গিয়েছিল ওই চুক্তির অন্য অংশীদার রাষ্ট্রগুলির মুখেও।

সোমবার আমেরিকা জানায়, ইরানের সঙ্গে নতুন করে পরমাণু চুক্তি হতে পারে। কিন্তু তার জন্য ১২টি নতুন শর্ত ইরানকে মানতে হবে বলে মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেয়ো ঘোষণা করেন। তার পরেই কঠোর বয়ান দিয়েছে ইরান। প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি নিজেই জানিয়েছেন, আমেরিকার চাপানো আর কোনও নতুন শর্ত ইরান মানবে না।

আমেরিকার ‘একাধিপত্য’ আর মানবে না পৃথিবী, মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট রুহানি। তিনি বলেছেন, গোটা পৃথিবীর হয়ে সব সিদ্ধান্ত আমেরিকাই নেবে, সে যুগ শেষ হয়ে গিয়েছে। প্রেসিডেন্ট রুহানির কথায়, ‘‘সব দেশই স্বাধীন...। আমাদের জাতির সমর্থনে বলীয়ান হয়ে আমরা নিজেদের পথেই চলব।’’ আমেরিকার উদ্দেশে ইরানের প্রেসিডেন্টের প্রশ্ন, ‘‘ইরানের হয়ে এবং গোটা পৃথিবীর হয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার তোমরা কে?’’

আরও পড়ুন: অস্ত্র কেনা নিয়ে পুতিনকে আশ্বাস মোদীর

২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল আমেরিকা। ইরান ও আমেরিকা ছাড়াও চিন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ব্রিটেন ও রাশিয়া ওই চুক্তির অংশীদার ছিল। কিন্তু সম্প্রতি ইরানের বিরুদ্ধে সুর ক্রমশ চড়াতে শুরু করে আমেরিকা এবং ইরানকে সন্ত্রাসবাদের সবচেয়ে বড় মদতদাতা হিসেবে আখ্যা দিতে শুরু করে। এপ্রিলের শেষ দিকে মার্কিন বিদেশ সচিব পদে আসীন হয়ে মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশে কূটনৈতিক সফরে যান মাইক পম্পেয়ো। প্রতিটি দেশে গিয়েই তিনি ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর মন্তব্য করেন। আমেরিকার সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক যে তলানিতে পৌঁছতে পারে, পম্পেয়ো-র সুর শুনেই তার আভাস দিতে শুরু করেছিলেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশারদরা। খুব তাড়াতাড়িই সেই আশঙ্কা সত্যি প্রমাণিত হয়। বহুজাতিক চুক্তি ‘জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন’ (জেসিপিওএ) থেকে বেরিয়ে আসার কথা ঘোষণা করে দেয় আমেরিকা

সোমবার অবশ্য ইরান নীতি নিয়ে নিজেদের ‘প্ল্যান বি’ প্রকাশ্যে এনেছে আমেরিকা। ইরানের বিরুদ্ধে আরও কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারির পথে না হেঁটে, ফের চুক্তির পথে আমেরিকা হাঁটতে পারে। জানিয়েছেন মার্কিন বিদেশ সচিব। কিন্তু তার জন্য ১২টি নতুন শর্ত মানতে হবে ইরানকে। ঘোষণা তাঁর। যে শর্তগুলি আমেরিকা রেখেছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: সিরিয়া থেকে ইরানকে অবিলম্বে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ও ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাকে (আইএইএ) ইরানের পুরনো সামরিক পরমাণু প্রকল্প সংক্রান্ত যাবতীয় পরিকল্পনা জানাতে হবে এবং হেজবোল্লা, হামাস-সহ বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী সংগঠনকে মদত দেওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে।

আরও পড়ুন: স্বপ্নের আমেরিকায় গিয়ে লাশ হয়ে ফিরলেন পাক তরুণী!

মাইক পম্পেয়ো শুধু নতুন চুক্তির শর্ত ঘোষণা করেই ক্ষান্ত থাকেননি। তিনি জানিয়েছেন, এই নতুন ১২টি শর্ত মেনে নিয়ে ইরান যদি চুক্তিতে না আসে, তা হলে বেনজির কঠোর নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে তাদের।

ইরানের বিদেশমন্ত্রী জাভেদ জারিফ কড়া বয়ান দিয়েছেন মার্কিন বিদেশ সচিবের মন্তব্যের প্রেক্ষিতে। আমেরিকা আগের ভুলের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে এবং তার জন্য নেতিবাচক ফলই তারা পাবে— মন্তব্য করেছেন তিনি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE