মোটা মোটা লোহার শিকল মজুত করা রয়েছে আমেরিকার বিমানবন্দরে। রয়েছে একগুচ্ছ হাতকড়া। অবৈধ অভিবাসীদের বিমানবন্দরে নিয়ে গিয়ে আগে পরীক্ষা করা হচ্ছে। তার পর তাঁদের হাতে পরানো হচ্ছে হাতকড়া। শিকল দিয়ে বেঁধে দেওয়া হচ্ছে দুই পা। সেই অবস্থায় অবৈধবাসীরা বিমানে উঠছেন। ফিরছেন নিজেদের দেশে। এই গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিয়ো প্রকাশ করল হোয়াইট হাউস। অবৈধবাসীদের দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়াকে ডোনাল্ড ট্রাম্প সরকারের বিজ্ঞাপন হিসাবে দেখানো হচ্ছে। ওই ভিডিয়ো নিয়ে পোস্ট করেছেন ইলন মাস্কও।
দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প প্রশাসন অবৈধবাসীদের আমেরিকা থেকে বিতা়ড়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দফায় দফায় একাধিক দেশে মার্কিন বায়ুসেনার বিমানে করে অবৈধবাসীদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে। ভারতেও পর পর তিন বার এসেছে সেই মার্কিন বিমান। দেশের মাটিতে পা রেখে অবৈধবাসীরা জানিয়েছেন, তাঁদের উপর অত্যাচার করা হয়েছে। পায়ে শিকল বেঁধে, হাতকড়া পরিয়ে তাঁদের রাখা হয়েছে বিমানে। এমনকি, ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাউকে শৌচাগার ব্যবহার করতেও দেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন:
ভারতীয় অভিবাসীদের সঙ্গে এই ধরনের আচরণে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারকে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, ভারতীয়দের সঙ্গে আমেরিকার সরকারের এই আচরণ অসম্মানজনক। এর ফলে বিশ্বের দরবারে ভারতের সম্মানহানি হচ্ছে। এমনকি, আমেরিকায় গিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে মোদীর বৈঠকের পরেও পরিস্থিতি পাল্টায়নি। এ বার সেই বিষয়টিকেই বিজ্ঞাপন হিসাবে প্রচার করছে হোয়াইট হাউস।
হোয়াইট হাউসের ৪১ সেকেন্ডের ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, এক যুবকের আপাদমস্তক পরীক্ষা করে দেখছেন বিমানবন্দরের আধিকারিক। তার পর মোটা মোটা শিকল বার করা হচ্ছে বাক্স থেকে। যুবকের পা শিকল দিয়ে বাঁধা হচ্ছে। হাতে হাতকড়া, পায়ে শিকল পরে বিমানের সিঁড়ি দিয়ে ধীরে ধীরে উঠছেন অবৈধবাসী। তবে এই ভিডিয়োয় কারও মুখ দেখানো হয়নি। ক্যামেরার দিকে তাঁরা পিছন ফিরেই ছিলেন।
ভিডিয়োর সঙ্গে লেখা হয়েছে, ‘‘অবৈধ ভিন্গ্রহীদের বিতাড়নের বিমান।’’ মাস্কও এই ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে বিদ্রুপ করেছেন। লিখেছেন, ‘‘হাহা, অসাধারণ!’’
বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর অবৈধবাসী প্রসঙ্গে সংসদে জানিয়েছেন, অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো নতুন নয়। এটা মার্কিন সরকারের নিয়মের মধ্যেই পড়ে। তবে ভারতীয়দের সঙ্গে যাতে দুর্ব্যবহার না-করা হয়, সে বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ভারত সরকারের আলোচনা চলছে, জানিয়েছিলেন তিনি। তাঁর দাবি, মহিলা এবং শিশুদের শিকল বা হাতকড়া পরানো হচ্ছে না।