বব ডিলান।
এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জয়ী বব ডিলানের কি বিশ্বের সর্বোচ্চ সম্মান নিতে কোনও আপত্তি আছে? তিনি কি নোবেল পুরস্কার নিতে চাইছেন না?
এমন একটা কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, কারণ, লন্ডনের দৈনিক ‘দ্য টেলিগ্রাফ’-এর খবর, পুরস্কার প্রাপক হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণার পর থেকেই ডিলানের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করতে পারছে না নোবেল কমিটি। ডিলানকে ফোন করা হয়েছে, ধরেননি। প্রতিনিধি পাঠিয়েছে নোবেল কমিটি। কিন্তু ডিলান নাকি তাঁদের কারও সঙ্গে দেখা করতে চাননি।
কানাঘুষোর হাওয়ার পালে আরও বাতাস লেগেছে, কারণ, ‘দ্য টেলিগ্রাফ’-এরই খবর, বৃহস্পতিবার লাস ভেগাস ও শুক্রবার কোয়াশেলায় পর পর দু’দিন দু’টি কনসার্ট ছিল ডিলানের। সেখানে এই ৭৫ বছর বয়সে, তিনি কনসার্ট মাতিয়ে দিলেও, গানের ফাঁকে ফাঁকে টুকরো টাকরা কথা ছুঁড়ে দেওয়া যাঁর স্বভাব, সেই ডিলানের মুখে এক বারও শোনা যায়নি নোবেল কমিটি তাঁকে এ বছরের সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী বলে ঘোষণা করেছে। তার পরই জোর রটনা, স্বভাব-বিদ্রোহী ডিলান হয়তো নোবেল পুরস্কার এড়িয়ে যাবেন। হয়তো কমিটিকে চিঠি লিখে নোবেল পুরস্কার নিতে অস্বীকার করবেন। হয়তো বা হাজির হবেন না পুরস্কার প্রদানের মূল অনুষ্ঠানে।
সেই কানাঘুষো এতটাই ছড়িয়েছে যে, ‘দ্য টেলিগ্রাফ’-এর মতো নামজাদা ব্রিটিশ দৈনিককে তাদের অনলাইন এডিশনে বেশ ফলাও করে খবরটা করতে হয়েছে। যার শিরোনাম- ‘হোয়াট হ্যাপেনস ইফ বব ডিলান কিপস ইগনোরিং হিজ নোবেল প্রাইজ?’ তাতে অতীতে যাঁরা নানা কারণে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার নিতে অস্বীকার করেছিলেন, তাঁদের নামোল্লেখ করা হয়েছে। যেমন, জঁ পল সার্ত্রে। ১৯৬৪ সালে যিনি নোবেল কমিটিকে চিঠি লিখে পুরস্কার নিতে তাঁর অনাগ্রহের কথা জানিয়েছিলেন। তবে কমিটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর সার্ত্রের চিঠি গিয়ে পৌঁছেছিল নোবেল কমিটির দফতরে। পরে অবশ্য পুরস্কারের অর্থমূল্য দাবি করেছিলেন সার্ত্রে।
১৯৭০ সালে সাবেক সোভিয়েত লেখক আলেকজান্দার সলঝেনিৎসিন নোবেল পুরস্কার নিতে অস্বীকার করেছিলেন অবশ্য অন্য কারণে। কারণ, সেই সময় তাঁকে দেশ ছেড়ে কোথাও যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। সলঝেনিৎসিনের অনুরোধ ছিল, মস্কোয় সুইডিশ দূতাবাসে এসে তাঁকে দেওয়া হোক পুরস্কার। কিন্তু নোবেল কমিটি সেই অনুরোধ রাখেনি। পরে সলঝেনিৎসিন সাবেক সোভিয়েত থেকে নির্বাসিত হলে ’৭৪ সালে তাঁকে দেওয়া হয় নোবেল পুরস্কার।
নোবেল পুরস্কারের নিয়মকানুন যাঁদের নখদর্পণে, তাঁরা বলছেন, এক বার নির্বাচিত হয়ে কারও নাম ঘোষণা হয়ে গেলে নোবেল পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়া যায় না বা তা বাতিল হয়ে যায় না। তিনি ওই পুরস্কার নিন বা না নিন, তাঁর নামেই ওই পুরস্কার ও তার নগদ অর্থমূল্য রাখা থাকে।
সুইডিশ অ্যাকাডেমির পার্মানেন্ট সেক্রেটারি সারা ডানিয়াস লন্ডনের দৈনিক ‘দ্য টেলিগ্রাফ’-কে বলেছেন, ‘‘ডিলান স্বীকার করতে চান বা না চান, তিনিই এ বছরের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী। ডিলান যদি পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে হাজির না হতে চান, তাতেও কিছুই যায় আসে না। তিনি নাই আসতে পারেন। তার পরেও তাঁর সম্মানে একটি বড় ডিনার পার্টি হবে ওই অনুষ্ঠানে। আর এ বছরের সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারটা তাঁর নামেই রাখা থাকবে।’’
কানাঘুষো নিয়ে বাতাস অবশ্য এখন যথেষ্টই এলোমেলো!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy