বিভিন্ন দেশের উপর ‘পাল্টা’ শুল্ক আরোপের কথা ঘোষণা করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যে সমস্ত দেশ আমেরিকার পণ্যের উপর শুল্ক আদায় করে, সেই দেশের পণ্যেও পাল্টা শুল্ক চাপিয়েছেন তিনি। ভারতীয় সময় অনুযায়ী বুধবার গভীর রাতে শুল্ক সংক্রান্ত ঘোষণা করা হয়েছে হোয়াইট হাউস থেকে। ট্রাম্পের এই নয়া শুল্ক নীতি গোটা বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছে। বৃহস্পতিবার এই শুল্কনীতিকে ‘অস্ত্রোপচার’ বলে উল্লেখ করে সমাজমাধ্যমে নতুন পোস্ট করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্প লিখেছেন, ‘‘অস্ত্রোপচার শেষ হয়েছে। রোগী বেঁচে আছে। দ্রুত সেরে উঠছে। রোগী আগামী দিনে আরও শক্তিশালী, আরও বড়, আরও ভাল এবং আরও উন্নত হয়ে উঠবে। আমেরিকাকে আবার মহান করে তুলব আমরা।’’ বিভিন্ন দেশের উপর চাপানো শুল্ককে যদি ‘অস্ত্রোপচার’ বলে থাকেন ট্রাম্প, তবে তাঁর ‘রোগী’ নিঃসন্দেহে আমেরিকান অর্থনীতি। দেশগুলির উপরে ‘পাল্টা’ শুল্ক আরোপের মাধ্যমে সেই অর্থনীতিকেই চাঙ্গা করে তোলার বার্তা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। শুল্ক ঘোষণা করেও তিনি জানিয়েছিলেন, এই দিনটি আমেরিকার ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সকলে এই দিনটিকে মার্কিন শিল্পের পুনর্জন্মের দিন, আমেরিকার ভাগ্য পুনরুদ্ধারের দিন হিসাবে মনে রাখবেন।
আরও পড়ুন:
দ্বিতীয় বার মার্কিন প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসার পর থেকেই আমেরিকার শুল্ক নীতি বদলে ফেলেছেন ট্রাম্প। তিনি জানিয়েছেন, যে সমস্ত দেশ আমেরিকার পণ্য থেকে যত শুল্ক নিয়ে থাকে, তাদের উপরেও পাল্টা তত শুল্কই চাপানো হবে। এ বিষয়ে আমেরিকার স্বার্থের কথাই শুধু মাথায় রাখবে ট্রাম্প প্রশাসন। ট্রাম্পের তালিকা বলছে, ভারতের পণ্যের উপর ২৬ শতাংশ শুল্ক নেওয়া হবে। এ ছাড়া, চিনের পণ্যে ৩৪ শতাংশ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যে ২০ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যে ২৫ শতাংশ, তাইওয়ানের পণ্যে ৩২ শতাংশ, জাপানের পণ্যে ২৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ভিয়েতনামের পণ্য থেকে ৪৫ শতাংশ, তাইল্যান্ডের পণ্যে ৩৬ শতাংশ শুল্ক নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন ট্রাম্প। চলতি মাস থেকেই এই বর্ধিত শুল্ক প্রয়োগ করা হবে মার্কিন বাণিজ্যনীতিতে।
ট্রাম্পের নতুন নীতিতে প্রায় প্রতিটি দেশের উপরেই ন্যূনতম ১০ শতাংশ হারে শুল্ক চাপানো হয়েছে। তবে আমেরিকায় যে সমস্ত পণ্যের উৎপাদন নেই, যার জন্য অন্য কোনও না কোনও দেশের উপরে আমেরিকাকে নির্ভর করে থাকতে হয়, সেই পণ্যগুলিকে শুল্কের তালিকা থেকে বাদ রেখেছেন ট্রাম্প। ভারতের ওষুধ ও ওষুধ প্রস্তুতকারক পণ্য, তামা, ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের মতো বেশ কিছু পণ্যে আমেরিকায় কোনও বাড়তি আমদানি শুল্ক নেওয়া হবে না।