ফাইল চিত্র।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে বিজয়োৎসব উদ্যাপনের প্রহরকে সুচিন্তিত ভাবে কাজে লাগালেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তৃতায় ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের কারণ হিসাবে দেশভক্তির আবেগঘন সুর বেঁধে দিলেন।
রেড স্কোয়ারে বার্ষিক সামরিক প্যারেড অনুষ্ঠানে পুতিন নাৎসি জার্মানির পরাজয়ের বিষয়টিকে তুলে ধরে জানান, ইউক্রেনেও রুশ সেনা নিজেদের দেশকে বাঁচাতে লড়ছে। ইউক্রেনে যুদ্ধে অংশ নেওয়া সেনাদের উদ্দেশে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘আপনারা দেশমাতৃকার জন্য লড়ছেন। ভবিষ্যতের জন্যও। যাতে কেউ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিণাম ভুলতে না পারেন।’’ ইউক্রেনের প্রশাসনকে নব্য নাৎসি হিসাবে তুলে ধরে প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, এ যুদ্ধ তাদের বিরুদ্ধে। আজ নতুন করে কোনও ঘোষণা না করলেও সূত্রের খবর, বিজয়োৎসবের বর্ষপূর্তির আবহেই ইউক্রেনে আক্রমণের তীব্রতা আরও বাড়াতে চলেছেন পুতিন।
প্রসঙ্গত ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের পরে নিরীহ মানুষের প্রাণহানি, ভিটেছাড়া হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনা সামনে আসতেই বাকি বিশ্বের মতো নিজের দেশেও তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়েছিলেন পুতিন। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিজয় দিবসে সুপরিকল্পিত ভাবেই নাৎসিদের বিরুদ্ধে দেশভক্তির আবেগ উস্কে দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। রাশিয়ার বক্তব্য, ইউরোপে নাৎসি উত্থান ঠেকাতেই যুদ্ধের পথ বেছে নেওয়া হয়েছে।
আজ পুতিনের কথায়, দেশের নিরাপত্তার বিষয়টি বার বার উঠে এসেছে। তিনি জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কূটনৈতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও দেশের নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনও আপস করা হবে না। নেটোর আগ্রাসন রুখতেই যুদ্ধে নামতে হয়েছে বলেও জানান। এর পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‘পরমাণু অস্ত্র তুলে নেওয়া হতে পারে ঘোষণা করেছিল কিভ। আমাদের পার্শ্ববর্তী ভূখণ্ডে ক্রমশ দাপট বাড়ছিল নেটোর। আমাদের সীমান্তমুখী যে চাপ তৈরি করা হয়েছিল, তা মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না।’’ পরিস্থিতির জন্য নব্য নাৎসিদের দায়ী করেছেন পুতিন। সঙ্গে জানান, আমেরিকা ও তাদের মিত্রশক্তিরাও মদত জোগাচ্ছিল। যুদ্ধে যে সমস্ত রুশ সেনা প্রাণ হারিয়েছেন, দেশ তাঁদের পরিজনের পাশে থাকবে বলেও বার্তা দিয়েছেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি অবশ্য নাম না করে পুতিনকেই হিটলারের সঙ্গে তুলনা করে রুশ আগ্রাসনকে নাৎসিবাদের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘নাৎসিবাদের বিরুদ্ধে এই জয় ধরে রাখব। আমরা কাউকে এই জয় ছিনিয়ে নিতে দেব না।’’
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহত সেনাদের শ্রদ্ধার্ঘ্য জানাতে আজ পোল্যান্ডে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রুশ দূত সের্গেই আন্দ্রেয়েভ। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানিয়ে রুশ দূতের মুখে লাল কালি মাখিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের হাতে ছিল ইউক্রেনের পতাকা।
আজ ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বিদেশ নীতির শীর্ষপদাধিকারী জোসেপ বরেল জানিয়েছেন, ইইউ-এর উচিত রাশিয়ার বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার বাজেয়াপ্ত করে তা ইউক্রেন পুনর্গঠনের কাজে লাগানো। ইউক্রেনে হামলার পরেই রুশ সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের উপরে বিধিনিষেধ কার্যকর করেছে ইইউ। বরেল আজ বলেন, তালিবান আফগানিস্তানের মসনদে আসীন হওয়ার পরে আফগান সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের সম্পদ আমেরিকা যেমন বাজেয়াপ্ত করেছিল, তেমনটাই করা উচিত রাশিয়ার ক্ষেত্রেও।
ইউরোপীয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট শার্ল মিশেল আজ ইউক্রেনের ওডেসায় যান। সেখানে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের কথা থাকলেও রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চলতে থাকায় বৈঠক ভেস্তে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy