প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সুর চড়াচ্ছেন গত কয়েক মাস ধরেই। এ বার আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স ডেনমার্ক-শাসিত গ্রিনল্যান্ড সফরে গিয়ে নিশানা করলেন কোপেনহাগেনকে! তাঁর অভিযোগ, গ্রিনল্যান্ডের সুরক্ষার বিষয়ে পুরোপুরি উদাসীন ডেনমার্ক।
গ্রিনল্যান্ডে চিন এবং রাশিয়া অনুপ্রবেশের ছক কষছে বলেও শনিবার অভিযোগ করেছেন ভান্স। সেই সঙ্গে গ্রিনল্যান্ডবাসীর প্রতি তাঁর বার্তা— ‘‘ডেনমার্কের তুলনায় আমেরিকার হাতে গ্রিনল্যান্ড অনেক নিরাপদ থাকতে পারবে।’’ ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি উড়িয়ে চলতি মাসেই গ্রিনল্যান্ডের ৩১ আসনের পার্লামেন্টের নির্বাচনের আয়োজন করেছিল ডেনমার্ক। তার পরেই এই হুঁশিয়ারি এল ওয়াশিংটনের তরফে।
ঘটনাচক্রে, ভান্সের সফর শুরুর আগেই গ্রিনল্যান্ডের রাজধানী নুকে সে দ্বীপের তিনটি রাজনৈতিক দল একত্রিত হয়ে ‘জাতীয় ঐক্য সরকার’ গঠনের ঘোষণা করেছিল। আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্টের বিতর্কিত মন্তব্যের পরে তারা যৌথ বিবৃতিতে নিন্দা করে বলেছে— ‘‘গ্রিনল্যান্ড আমাদের। আমরা নিজেরাই আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করব। বাইরের কাউকে প্রয়োজন নেই।’’ ওই দলগুলির মধ্যে ডেনমার্কের নিয়ন্ত্রণমুক্ত হয়ে স্বাধীন ও সার্বভৌম গ্রিনল্যান্ডপন্থীরাও রয়েছেন।
ডেনমার্কের মূল ভূখণ্ড থেকে প্রায় ৩০০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ‘বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ’ প্রায় ৩০০ বছর ধরে কোপেনহাগেনের নিয়ন্ত্রণে। অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলি পরিচালনা ও উন্নয়ন সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করেন দ্বীপটির স্বায়ত্তশাসিত কর্তৃপক্ষ। আর বিদেশ এবং প্রতিরক্ষানীতি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেয় ডেনমার্ক সরকার। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত কয়েক মাসে একাধিক বার ডেনমার্ক দখলের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বস্তুত, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে প্রথম মেয়াদেও গ্রিনল্যান্ডকে কিনতে চেয়েছিলেন তিনি।
এ বার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের পরে ট্রাম্পের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, পানামা এবং গ্রিনল্যান্ডের ক্ষেত্রে সামরিক ও অর্থনৈতিক বলপ্রয়োগ করবেন না, বিশ্বকে তিনি এমন নিশ্চয়তা দিতে পারবেন কি না। জবাবে রিপাবলিকান নেতা বলেন, ‘‘না, ওই দু’টি ক্ষেত্রের কোনওটির বিষয়েই আমি আপনাদের কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারব না। তবে আমি এটা বলতে পারি, অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য আমাদের ওই দু’টিকেই (পানামা খাল এবং গ্রিনল্যান্ড) প্রয়োজন।’’