বাম্প স্টক। —ফাইল চিত্র।
আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জমানায় ‘বাম্প স্টক’-এর উপরে যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল, তা অসাংবিধানিক বলে গত কাল রায় দিল আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট।
উল্লেখ্য আমেরিকায় মেশিন গান-এর উপরে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সেমি অটোম্যাটিক রাইফেলের উপরে কোনও বিধিনিষেধ নেই। বাম্প স্টক সেমি অটোম্যাটিক রাইফেলে লাগিয়ে ব্যবহার করা হলে তা কার্যত মেশিন গানের মতোই দ্রুত গুলি ছুড়তে সক্ষম।
২০১৭ সালের অক্টোবরে লাস ভেগাসের একটি মিউজ়িক কনসার্টে এক আততায়ীর নির্বিচারে চালানো গুলিতে নিহত হন ৫৮ জন। আহতের সংখ্যা ছিল শ’পাঁচেক। ওই আততায়ী বন্দুকে বাম্প স্টক লাগিয়েই গুলি চালিয়েছিল। যার ফলে সেকেন্ডে ৯টি করে বুলেট ছুড়তে পেরেছিল। এই ঘটনার পরেই ২০১৯ সালে
বাম্প স্টকের উপরে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করা হয়।
গত কাল এই নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত মামলায় ৯ বিচারপতির বেঞ্চে ৬ জন নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার পক্ষে রায় দেন। বলা হয়, এ ক্ষেত্রে আইন মোতাবেক ওই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। বিচারপতি ক্লারেন্স টমাস রায়ে জানিয়েছেন, প্রশ্ন হল, সেমি অটোম্যাটিক রাইফেলের ‘অ্যাকসেসরি’ হিসেবে ব্যবহৃত বাম্প স্টক রাইফেলকে মেশিন গানে পরিণত করছে কি না। আদালতের রায় হল, তা করছে না।
এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন।
তবে এই রায় ঘোষণার পরেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বন্দুক নিয়ন্ত্রণের দাবির পক্ষে আন্দোলনরত সমাজকর্মী ও ডেমোক্র্যাটরা। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারেও এই রায়ের বিরোধিতা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, আদালতের রায়ে শিশুদের নিরাপত্তার চেয়ে বন্দুক লবিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হল।
বাইডেনের প্রচারের দায়িত্বে থাকা মাইকেল টাইলার জানিয়েছেন, আমেরিকার রাস্তায় অস্ত্রের কোনও জায়গা নেই। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা বন্দুক লবিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।
হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসে ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যালঘু নেতা হাকিম জেফ্রিস এই রায়কে ভয়ঙ্কর, বিপর্যয়কর এবং বিরক্তিকর বলে মন্তব্য করেছেন।
বন্দুক নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী গিফোর্ডসের তরফে জানানো হয়েছে, অধিকাংশ বিচারপতিই আমেরিকার বাসিন্দার নিরাপত্তার পরিবর্তে বন্দুক লবির পক্ষ নিয়েছেন। অথচ ওই নিষেধাজ্ঞার পক্ষে রয়েছেন প্রতি ১০ জন আমেরিকানের মধ্যে আট জন। এই সিদ্ধান্তকে লজ্জাজনক বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ব্যুরো অব অ্যালকোহল, টোব্যাকো, ফায়ারআর্মস অ্যান্ড এক্সপ্লোসিভের তরফে ১৯৩৪ সালের এক আইন উল্লেখ করে বাম্প স্টকের উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। যা ২০১৯ সাল থেকে কার্যকর হয়।
সেই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বন্দুক বিক্রেতাদের একাংশ।
যে তিন বিচারপতি বাম্প স্টকের নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রাখার পক্ষে রায় দিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম বিচারপতি সনিয়া সোটোমায়োর। তিনি লিখেছেন, ‘আদালত ফের বাম্প স্টক আমজনতার হাতে তুলে দিল।’ বাম্প স্টকের সঙ্গে মেশিন গানের পার্থক্য বোঝাতে গিয়ে আদালতে যে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, তার বিরোধিতা করে বিচারপতি সনিয়া বলেন, ‘যখন কোনও পাখি হাঁসের মতো হাঁটতে, সাঁতার কাটতে এবং আওয়াজ করতে পারে, তাকে আমি হাঁসই বলব।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy