এখনও নজরবন্দি কাশ্মীর। ছবি: পিটিআই।
নির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই উপত্যকায় যে সমস্ত রাজনীতিককে বন্দি করা হয়েছে, এ বার ধীরে ধীরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়ার পথে এগোক ভারত সরকার। ভারতের উপর কার্যত চাপ বাড়িয়ে মার্কিন সরকারের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া সংক্রান্ত প্রিন্সিপাল ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারিঅ্যালিস ওয়েলস এই মন্তব্য করেছেন। সম্প্রতি ১৫ দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীর থেকে ঘুরে গিয়েছেন অ্যালিস।দিল্লিতে রাইসিনা আলোচনাতেও অংশ নিয়েছিলেন। তার পর দেশে ফিরে এমন মন্তব্য করলেন তিনি।
শুক্রবার ওয়াশিংটনে অ্যালিস বলেন, ‘‘ইন্টারনেট পরিষেবা আংশিক ফিরিয়ে আনা-সহ জম্মু-কাশ্মীরে সম্প্রতি যে পদক্ষেপ করা হয়েছে, তাতে আমি খুশি। সেই সঙ্গে ভারত সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, আমাদের কূটনীতিকদের নিয়মিত সেখানে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক। নির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া সেখানে যে সমস্ত রাজনীতিককে বন্দি করা হয়েছিল, এ বার ধীরে ধীরে তাদের মুক্তি দেওয়ার পথে এগোক ভারত।’’
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)নিয়ে সেইসময় উত্তাল ছিল গোটা দেশ, যা নজর এড়ায়নি অ্যালিসেরও। ওয়াশিংটনে সে নিয়েও মন্তব্য করেন তিনি। অ্যালিস বলেন, ‘‘কাশ্মীর সফর সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়েও অনেক কিছু বুঝতে সাহায্য করেছে। এই মুহূর্তে ভারত গণতান্ত্রিক পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বিরোধীরা সব রাস্তায় নেমে এসেছেন। সংবাদমাধ্যমে তা নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। আদালত পর্যন্তও গড়িয়েছে বিষয়টি। আইনত সকলের সমান সুরক্ষাই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।’’
আরও পড়ুন: পাকিস্তান ও বাংলোদেশি মুসলিমদের দেশ থেকে তাড়ানো উচিত, সামনায় শিবসেনার মন্তব্যে বিতর্ক
আরও পড়ুন: চিঁড়ে দিয়ে বাংলাদেশি ‘চিনলেন’ বিজয়বর্গীয়, শুরু বিতর্ক
জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মেনে নিলেও, গত কয়েক মাস ধরেই সেখানকার পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে আন্তর্জাতিক মহল। তা নিয়ে সম্প্রতি সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে ভারতকে। ব্রিটিশ গবেষণা সংস্থা ইকনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ)-এর বিশ্ব গণতন্ত্র সূচকে সম্প্রতি ১০ ধাপ নেমে এসেছে ভারত। এই পতনের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ-সহ সাম্প্রতিক কালে ভারত সরকার গৃহীত একাধিক সিদ্ধান্তকে দায়ী করে ওই সংস্থা। কীভাবে ছ’মাস ধরে উপত্যকার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে, বন্দি করা হয়েছে সেখানকার রাজনীতিকদের, সে প্রসঙ্গও উঠে আসে তাতে। অন্য দিকে, সিএএ-র মতো আইন এনে মোদী সরকার বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রে বিপদ ডেকে আনছে বলে অভিযোগ করেছে ব্রিটেনের ‘দ্য ইকনমিস্ট’পত্রিকাও। তার মধ্যেই অ্যালিসের এই মন্তব্য ভারতের অস্বস্তি বাড়ানোর জন্য যথেষ্ট বলে মত কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
গতবছর ৫ অগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ করে কেন্দ্রীয় সরকার। তার পর ছ’মাস কাটতে চললেও এখনও গোটা দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন উপত্যকা। তা নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ে ভারত। গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধিদলকে উপত্যকায় প্রবেশের অনুমতি দেয় দিল্লি। তার পর চলতি মাসের শুরুতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভিয়েতনাম, মলদ্বীপ, মরক্কো, ফিজি, নরওয়ে, ফিলিপিন্স, আর্জেন্টিনা-সহ ১৫টি দেশের কূটনৈতিক প্রতিনিধিদলকে উপত্যকার পরিস্থিতি ঘুরিয়ে দেখানো হয়। সেই দলে শামিল ছিলেন অ্যালিসও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy