কাসেম সোলেমানি।
আত্মরক্ষার জন্যই ইরানি কমান্ডার কাসেম সোলেমানিকে মারতে হয়েছে বলে আজ রাষ্ট্রপুঞ্জে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন মার্কিন দূত কেলি ক্রাফ্ট। পশ্চিম এশিয়ায় মোতায়েন থাকা মার্কিন সেনা ও আমেরিকার স্বার্থ রক্ষার্থে ভবিষ্যতেও ‘প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ’ করতে তাঁরা বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন ওই দূত।
সোলেমানি হত্যার জবাব দিতে গত কালই ইরাকে মার্কিন সামরিক জোটের দু’টি ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। তাদের দাবি ছিল, ৮০ জন ‘মার্কিন জঙ্গিকে’ খতম করেছে তারা। যদিও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরে জানান, কোনও মার্কিন নাগরিক ওই ঘটনায় জখম হননি। ট্রাম্পের বার্তা ছিল, ‘‘পরমাণু চুক্তির সময়ে কোটি কোটি ডলার নিয়ে আমাদের উপরেই ওরা যে ভাবে হামলা চালাল, তা বরদাস্ত করা হবে না। নিষেধাজ্ঞা থাকবেই, যত দিন না ওরা শোধরাচ্ছে।’’ তাই পশ্চিম এশিয়ার উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্বনেতাদের উদ্বেগ কাটছে না।
এর মধ্যেই রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন দূতের এই চিঠি। তাতে বলা হয়েছে, ‘আমরা চাই, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা যেন নষ্ট না হয় এবং পরিস্থিতি জটিলতর করে তুলতে ইরান যেন আর কোনও পদক্ষেপ না করে। পূর্বনির্ধারিত শর্ত ছাড়া ইরানের সঙ্গে আপস-মীমাংসার পথে যেতে আমেরিকা প্রস্তুত।’ বস্তুত কাল ট্রাম্পও বলেছিলেন, ‘‘কেউ শান্তি চাইলে, সেই প্রস্তাবে রাজি।’’
সোলেমানি হত্যা কেন যুক্তিসঙ্গত, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আজ চিঠিতে ক্রাফ্ট লিখেছেন, ‘রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদের ৫১ নম্বর অনুচ্ছেদের আওতায় এই ঘটনা ঘটেছে। ওই অঞ্চলে যদি মার্কিন সেনার জন্য পরিস্থিতি ফের প্রতিকূল হয়ে ওঠে, তা হলে আমেরিকা পদক্ষেপ করার জন্য প্রস্তুত।’
রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদের ৫১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, আত্মরক্ষার্থে কোনও দেশ পদক্ষেপ করলে ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদে তা দ্রুত জানাতে হয়। এর আগে ২০১৪তে সিরিয়ায় আইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সময়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদের ৫১ নম্বর অনুচ্ছেদের আশ্রয় নিয়েছিল আমেরিকা। এ বার ক্রাফ্ট বলেছেন, ইরান যাতে ফের আক্রমণের পথে যেতে না পারে, সেটাই মূল লক্ষ্য ছিল আমেরিকার।
গত কাল অবশ্য ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালানোর পরে ইরানও রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদের ৫১ নম্বর অনুচ্ছেদের আওতায় তাদের কাজ যুক্তিযুক্ত বলে জানিয়েছিল। কূটনীতিকেরা জানান, ইরানের চিঠির পরে আজ এসেছে আমেরিকার চিঠি। ইরানের দূত মাজিদ তখ্ত রাভাঞ্চি চিঠিতে জানিয়েছিলেন, ‘ইরান যুদ্ধ চায় না। আত্মরক্ষার অধিকার আমাদেরও রয়েছে। আমেরিকাকে বার্তা দিতে তাদের ইরাকের ঘাঁটিতে মেপেজুপেই সামরিক পদক্ষেপ করা হয়েছে।’
দুই দেশ যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি না-করার কথা বললেও আজ ফের ইরাকের কড়া নিরাপত্তায় মোড়া গ্রিন জ়োনে দু’টি রকেট হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা। ইরাকের গ্রিন জ়োনেই মার্কিন দূতাবাস-সহ বিভিন্ন বিদেশি দূতাবাসের ঠিকানা। এর আগে ইরানের বিক্ষোভকারীরা বাগদাদের ওই এলাকাতেই মার্কিন দূতাবাস তছনছ করেছিল। গত কাল ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘আমাদের এখন একজোট হয়ে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তির ব্যাপারে এগোনো উচিত।’’ নয়া চুক্তির সেই প্রস্তাব নিয়ে আজ আপত্তি জানিয়েছে চিন। তাদের মতে, পুরনো চুক্তি অনেক পরিশ্রমের ফসল। রাষ্ট্রপুঞ্জও তাকে মান্যতা দিয়েছে। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গেং শুয়াং বলেছেন, ‘‘আন্তর্জাতিক আইন উপেক্ষা করে আমেরিকা নিজের মতো চুক্তি ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছে। সেটাই এই সব উত্তেজনার মূল কারণ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy