রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস। ফাইল ছবি।
বিশ্বে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া এবং সবচেয়ে অনুন্নত দেশগুলির শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস। সেখানেই উন্নত দেশগুলিকে তীব্র ভর্ৎসনা করলেন তিনি। কোনও রকমের রাখঢাক না করে একেবারে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে জানালেন, উন্নত দেশগুলি আকাশছোঁয়া জ্বালানির দাম ও আগ্রাসী সুদের হারের মাধ্যমে গরিব ও পিছিয়ে পড়া দেশগুলির শ্বাসরোধ করে রাখে।
এমনিতে ১০ বছরে এক বার করে হয় ‘লিস্ট ডেভেলপড কান্ট্রিজ়’ (এলসিডি)-এর এই মহাসম্মেলন। কিন্তু করোনা অতিমারির কারণে ২০২১ সাল থেকে দু’বার বাতিল হয়েছিল এই সম্মেলন। গত কাল কাতারের রাজধানী দোহায় সেই শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়ে বক্তৃতা দেন গুতেরেস। ৪৬টি দেশ এ বার এই শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়েছিল। আফগানিস্তান আর মায়ানমারের সরকারকে রাষ্ট্রপুঞ্জের সদস্য দেশগুলি স্বীকৃতি দেয় না বলে ওই দুই দেশের কোনও প্রতিনিধি বৈঠকে ছিলেন না।
বাকি যে ৪৬টি গরিব ও অনুন্নত দেশ এই সম্মলনে যোগ দিয়েছিল, গত কাল তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব। নাম না করেই আমেরিকা ও পশ্চিমের উন্নত দেশগুলিকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন তিনি। স্পষ্ট জানিয়েছেন, প্রতি বছর এই অনুন্নত দেশগুলির মানুষের স্বার্থে অন্তত ৫০০ কোটি ডলার অনুদান দেওয়া উচিত উন্নত দেশগুলির। যাতে অনুন্নত এই সব দেশ ঋণের বিষাক্ত জাল থেকে নিজেদের নাগরিকদের বার করে আনতে পারে, নিজেদের দেশের আর্থিক ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য যথাযথ পরিকাঠামো তৈরি করতে পারে।
উন্নত দেশগুলি বিপুল আর্থিক অনুদান ও সাহায্যের আশ্বাস দিয়েও অনেক ক্ষেত্রেই সেই প্রতিশ্রুতি থেকে পিছিয়ে যায় বলেও অভিযোগ করেছেন গুতেরেস। জানিয়েছেন, কোভিড অতিমারির সময়ে উন্নত দেশগুলি নিজেদের আখের গোছাতে এমনই ব্যস্ত ছিল যে, অনুন্নত দেশগুলির সরকার প্রয়োজন মতো প্রতিষেধকটুকুও পায়নি। ফলে অনেক দেশের নাগরিক এখনও কোভিডের প্রতিষেধক থেকে বঞ্চিত।
দোহার বৈঠকে কোনও উন্নত দেশের প্রতিনিধি যোগ দেননি। গুতেরেস সেই সব দেশকে উদ্দেশ করে দ্বিধাহীন ভাবেই বলেছেন, ‘‘আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা একেবারেই ধনী দেশগুলির তৈরি করা। তারা নিজেদের সুবিধার্থেই এই ব্যবস্থা চালু রেখেছে।’’ জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে পড়া গরিব দেশগুলিকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েও ধনী দেশগুলি মুখ ফিরিয়ে রেখেছে বলে অভিযোগ করেছেন গুতেরেস।
এ বারের সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেছে মালাউই। সে দেশের প্রেসিডেন্ট ল্যাজ়ারাস চাকওয়েরা-ও উন্নত দেশগুলির প্রতিশ্রুতিভঙ্গের প্রসঙ্গ তুলেছেন। বলেছেন, ‘‘উন্নত দেশগুলি অনুন্নতদের আর্থিক সাহায্য করে কোনও দয়া করে না। এটা তাদের নৈতিক কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।’’ সম্মেলনে ঘোষণা করা হয়েছে, ২০২৬ সালের মধ্যে ভুটান, বাংলাদেশ, লাওস, অ্যাঙ্গোলা, সাও টোমে অ্যান্ড প্রিন্সিপে, নেপাল, সলোমন আইল্যান্ডসের মতো দেশের থেকে ‘এলসিডি স্বীকৃতি’ তুলে নেওয়া হবে। এর অর্থ একেবারে অনুন্নত দেশের তকমা থেকে এক ধাপ এগিয়ে যাবে তারা। তবে সেটা হলে নানা ধরনের আর্থিক ও বাণিজ্যিক সুযোগ সুবিধে থেকে বঞ্চিত হবে দেশগুলি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy