ভারতীয় পড়ুয়াদের আবার দেশে ফিরে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।
রাশিয়ার অভিযানের সম্ভাবনা জোরালো হতেই ইউক্রেনে বসবাসকারী পড়ুয়া-সহ সমস্ত ভারতীয়দের দেশে ফেরার বার্তা দিল নয়াদিল্লি। আজ দ্বিতীয় অ্যাডভাইজ়রি জারি করে ইউক্রেনের ভারতীয় দূতাবাসের তরফে বলা হয়েছে, খুব প্রয়োজন না হলে অবিলম্বে যেন দেশে ফেরেন সমস্ত ভারতীয়। বাণিজ্যিক উড়ানের পাশাপাশি চার্টার্ড ফ্লাইটের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এ জন্য ভারতীয় পড়ুয়াদের ‘স্টুডেন্ট কনট্রাক্টর’-এর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি ভারতীয় দূতাবাসের ফেসবুক, টুইটার এবং ওয়েবসাইটেও নিয়মিত বার্তা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
এ ছাড়া বিদেশ মন্ত্রকের তরফে কন্ট্রোল রুমও খোলা হয়েছে। যাঁরা বিমানের টিকিট পাচ্ছেন না, কিংবা অন্য কোনও সাহায্যের জন্য কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করতে পারবেন। এয়ার ইন্ডিয়া ২২, ২৪ ও ২৬ তারিখ ৩টি বিশেষ বিমান চালাবে ইউক্রেনে। সেখানকার বরিসপিল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ভারতীয়দের ফেরানো হবে বিশেষ বিমানে।
ইতিমধ্যেই পূর্ব ইউক্রেনে রুশ মদতপুষ্ট বিচ্ছিন্নবাদী গোষ্ঠী ও ইউক্রেন সেনার মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। পূর্ব ইউক্রেনে শতাধিক বিস্ফোরণের খবর মিলেছে। পরমাণু যুদ্ধের মহড়াও চালিয়েছে রাশিয়া। থমথমে পরিস্থিতির মধ্যেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জ়েলেনস্কি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উদ্দেশে বৈঠকের বার্তা দিয়েছেন। জ়েলেনস্কি মিউনিখ সম্মেলনে জানিয়েছেন, শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য কূটনৈতিক রাস্তাই অবলম্বন করবে ইউক্রেন। ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে অবিলম্বে তাঁরা প্রত্যাঘাতের রাস্তায় হাঁটবেন না বলেও জানিয়েছেন।
তবে জ়েলেনস্কির বার্তার আগেই রুশ মদতপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী জানিয়েছে, ডনবাসে ইউক্রেন সেনার আক্রমণে নিহত হয়েছেন দু’জন নাগরিক। তাদের অধিকৃত অঞ্চলের বাসিন্দাদের অবিলম্বে রাশিয়ায় সরানোর জন্য ৭ লক্ষ পাসপোর্টের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, ডনবাসের পরিস্থিতি গুরুতর। ইউক্রেনকে সতর্ক করে তিনি জানিয়েছেন, যে কোনও ছোট ঘটনাও পরিস্থিতি বদলে দিতে পারে। এর পরিণাম হতে পারে ভয়ঙ্কর। রাশিয়া কোথাও আক্রমণ চালানোর পরিকল্পনা করছে না বলে পশ্চিমী দেশগুলিকে বার্তাও দিয়েছেন পেসকভ।
আজ জ়েলেনস্কি রুশ মদতপুষ্ট বিচ্ছন্নতাবাদী গোষ্ঠীকে সংঘর্ষবিরতির আবেদন জানান। তবে জ়েলেনস্কির বার্তা তাঁদের প্রতিপক্ষ কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। কারণ বেলারুশের ইউক্রেন সীমান্তবর্তী অঞ্চলে রাশিয়া ও বেলারুশের যে যৌথ মহড়ার চলছিল, তা শেষ হওয়ার কথা ছিল আজ। কিন্তু মহড়ার মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংশ্লিষ্ট দুই দেশ।
যুদ্ধের আশঙ্কায় ইউক্রেনে বসবাসকারী দেশবাসীকে ফেরার বার্তা দিয়েছে জার্মানি ও অস্ট্রিয়াও। কিভে অবস্থিত নেটোর লিয়াজ়োঁ অফিস তাদের কর্মীদের ব্রাসেলসে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে। ইউক্রেনে অভিযান চালালে রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে বলে জানান ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেয়েন। জ়েলেনস্কিও জানান, এখনই রাশিয়ার উপরে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করা হোক। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানিয়েছেন, যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া। যা ১৯৪৫ সালের পরে সব চেয়ে বড় যুদ্ধাভিযান হতে চলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy