ফাইল চিত্র।
টিকাকরণ অনেকটাই এগিয়েছে। সেই জোরেই লকডাউন ধীরে ধীরে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে ব্রিটেন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ভারতীয় স্ট্রেনের আতঙ্ক। এ অবস্থায় আজ কিছুটা সুখবর দিল ব্রিটেনের স্বাস্থ্য দফতর। তারা জানাল, ফাইজ়ার-বায়োএনটেক কোভিড ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ় ভারতীয় স্ট্রেন এবং ব্রিটেন স্ট্রেন, করোনাভাইরাসের দুই ভ্যারিয়্যান্টকেই প্রতিরোধে সক্ষম। কাজ দিচ্ছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার কোভিড ভ্যাকসিনও। ব্রিটিশ স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া এই সুখবরে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে বরিস জনসন প্রশাসন।
ধাপে ধাপে করোনাবিধি শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ১৭ মে থেকে খুলে গিয়েছে অধিকাংশ দোকানপাট, রেস্তরাঁ, কাফে, পাব, এমনকি চিড়িয়াখানাও। অফিস-কাছারিতেও যাচ্ছেন লোকজন। এত দিন বাড়িতে অতিথি আসা বারণ ছিল। এখন এক জায়গায় দু’টি পরিবারের জমায়েতকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। বাড়ির বাইরে কাফে, রেস্তরাঁতেও দেখা করতে পারেন তাঁরা। পরিকল্পনা রয়েছে, ২১ জুনের মধ্যে সমস্ত করোনা-বিধি তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এ-ও জানিয়ে রেখেছেন, সবটা নির্ভর করছে পরিস্থিতির উপরে। ভারতীয় স্ট্রেনে সংক্রমিতের সংখ্যা যে ভাবে হু হু করে বাড়ছে, তাতে শেষ মুহূর্তে পিছু হটতে হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। বিজ্ঞানীরাও জানিয়েছেন, ভারতীয় স্ট্রেনটি সম্পর্কে অনেক কিছু অজানা। অন্যান্য স্ট্রেনের থেকে এর ক্ষমতা ঠিক কত বেশি, সেই উত্তর জানা নেই। এ অবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ স্বাস্থ্য দফতর। ‘পাবলিক হেল্থ ইংল্যান্ড’ (পিএইচই)-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, বি.১.৬১৭.২ স্ট্রেনের বিরুদ্ধে ৮৮ শতাংশ কার্যকরী ফাইজ়ার-বায়োএনটেক ভ্যাকসিন। ব্রিটেন বা কেন্ট্র স্ট্রেন (বি.১.১.৭)-এর বিরুদ্ধে ৯৩ শতাংশ কার্যকরী। পিএইচই-র রিপোর্টে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন ব্রিটেনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক। তিনি বলেন, ‘‘সে ক্ষেত্রে টিকাকরণের উপর ভরসা রেখে এক মাসের মধ্যে বন্দিদশা থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পেতে পারে ব্রিটেন।’’
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকার ভ্যাকসিনটিও ভারতীয় স্ট্রেনের বিরুদ্ধে কার্যকারিতা প্রমাণ করেছে। তবে কিছুটা কম। গবেষণায় দেখা গিয়েছে এটি ভারতীয় স্ট্রেনের বিরুদ্ধে ৬০ শতাংশ কার্যকরী। এবং ব্রিটেন স্ট্রেনের বিরুদ্ধে ৬৬ শতাংশ কাজ দিচ্ছে। হ্যানকক বলেন, ‘‘আমার আত্মবিশ্বাস বাড়ছে। আমরা ঠিক পথেই হাঁটছি। পিএইচই-র দেওয়া তথ্যে স্পষ্ট, ভারতীয় স্ট্রেনের বিরুদ্ধে সমান ভাবে কাজ করছে ভ্যাকসিন।’’
নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা একেবারেই কমে গিয়েছিল ব্রিটেনে। কিন্তু সম্প্রতি ফের ১০.৫ শতাংশ বেড়েছে সংক্রমণ। বরিস জনসন দ্রুত টিকার দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়ার কাজ শেষ করতে চাইছেন। আপাতত লক্ষ্য দেশে ৫০-ঊর্ধ্ব সকলের টিকাকরণ শেষ করা। পিএইচই জানিয়েছে, প্রথম ডোজ়ে মাত্র ৩৩ শতাংশ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হচ্ছে। এই তথ্য হাতে আসার পরেই স্বাস্থ্য দফতর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দ্রুত দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy