ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রাক্তন আইনজীবী মাইকেল কোহেন। ফাইল চিত্র।
আগামী মাসে নির্ধারিত সময়ে হাউসের তদন্ত কমিটির সামনে সাক্ষ্য দেবেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রাক্তন আইনজীবী মাইকেল কোহেন। বুধবার তাঁর উপদেষ্টা এই খবর জানিয়েছেন। কোহেনের দাবি, ট্রাম্পের হুমকিতেই নাকি পিছিয়ে গিয়েছেন তিনি। কোহেন নির্ধারিত সময়ে সাক্ষ্য না দেওয়ায় ট্রাম্পকে আক্রমণ করার বড় সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে ডেমোক্র্যাটদের। হাউসে সদ্য মজবুত জায়গা তৈরি করার পরে কোহেন-অস্ত্রে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হওয়ার আশা ছিল ডেমোক্র্যাটদের।
ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট পদে বসার আগে রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ দিয়ে পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের মুখ বন্ধ করার মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে কোহেনের মুখ খোলার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু কোহেন ৭ ফেব্রুয়ারির সেই সাক্ষ্যদান পিছিয়ে দিয়েছেন। কবে ফের তিনি সাক্ষ্য দেবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ট্রাম্পের প্রাক্তন আইনজীবীর দাবি, প্রেসিডেন্ট আর তাঁর অ্যাটর্নি মুখপাত্র রুডি জুলিয়ানি হুমকি দিয়েছেন তাঁকে। বিশেষ আইনজীবী রবার্ট মুলারের সঙ্গে কোহেন রুশ তদন্ত সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদে পুরোপুরি সহযোগিতা করছিলেন বলে তাঁর দাবি। আর এই জন্যই ট্রাম্পের তোপের মুখে পড়তে হয়েছে কোহেনকে। কোহেনের উপদেষ্টা ল্যানি ডেভিস জানিয়েছেন, পরিস্থিতি বুঝে আইনজীবীদের পরামর্শমতো ৭ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্যদান পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যথাযথ সময়ে সাক্ষ্য দেবেন কোহেন। আপাতত কোহেনের কাছে পরিবার এবং তাঁদের নিরাপত্তা সব চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ডেভিস সরাসরি প্রেসিডেন্টের হুমকির বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
ট্রাম্প এবং জুলিয়ানি সম্প্রতি আইন দফতরকে প্রকাশ্যে কোহেনের শ্বশুরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করার কথা বলেছেন। তাঁদের দাবি, কোহেনের শ্বশুর অপরাধমূলক কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত। প্রেসিডেন্ট কোহেনকে হুমকি দিচ্ছেন কি না, সে বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে হোয়াইট হাউস থেকে তিনি বলেছেন, ‘‘ওঁকে ‘সত্যই’ একমাত্র হুমকি দিতে পারে। উনি সাক্ষ্য দিতে চাইছেন না, সম্ভবত আমার এবং অন্য মক্কেলদের জন্য। ওঁর তো আরও অনেক মক্কেল আছে। মনে হয়, আমার বা অন্য মক্কেলদের জন্য উনি সত্যিটা বলতে চাইছেন না।’’
নির্বাচনী প্রচারে আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগে কোহেনকে গত বছরে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। প্রচার ছাড়াও আরও নানা ক্ষেত্রের অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। তিন বছরের কারাবাসের সাজা শুরু হওয়ার কথা ৬ মার্চ থেকে। ডেমোক্র্যাটরা এখন ভাবছেন, কোহেনকে সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করার পথে হাঁটতে হবে। হাউস কমিটির চেয়ারম্যান এলিজা কামিংস জানিয়েছিলেন, জেল থেকে কোহেনকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ডাকা যেতেই পারে। পরে সেনেটের তদন্ত কমিটি জানায় কোহেনকে আগামী মাসেই সাক্ষ্য দিতে হবে। কোহেনের প্রতিক্রিয়া অবশ্য জানা যায়নি।
এলিজা এবং হাউসের তদন্ত কমিটির প্রধান অ্যাডাম শিফের মতে, হুমকির কারণে কোহেন সাক্ষ্য পিছিয়ে দিচ্ছেন, তা উদ্বেগের ঠিকই। কিন্তু কংগ্রেসের সামনে হাজির না হওয়াটা কোনও অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না। কমিটি কোহেন ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy