স্টর্মি ড্যানিয়েলস (ডান দিকে) ও ক্যারেন ম্যাকডোগালের মাঝখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
তাঁর যৌন সম্পর্কের কথা যাতে ফাঁস না হয়ে যায়, তার জন্য প্রচুর ডলার দিয়ে হলিউডের অভিনেত্রী স্টর্মি ড্যানিয়েলস ও প্রাক্তন প্লেবয় মডেল ক্যারেন ম্যাকডোগালের মুখ বন্ধ করতে বলেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর সেই কাজের দায়িত্বটা ট্রাম্প তাঁকেই দিয়েছিলেন বলে জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রাক্তন ব্যক্তিগত আইনজীবী মাইকেল কোহেন।
ম্যানহাটনের আদালতে কোহেন জানিয়েছেন, সেটা ২০১৬। তখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচার চলছে। স্টর্মি ও ক্যারেন বেফাঁস কিছু বলে ফেললে প্রচার ধাক্কা খাবে এই শঙ্কায় প্রার্থীর প্রচার তহবিল থেকে প্রচুর ডলার নিয়ে ওই দুই মহিলার মুখ বন্ধ করা হয়েছিল।
ম্যানহাটন আদালতে কোহেনের বিরুদ্ধে প্রচার তহবিলের গরমিল, ব্যাঙ্ক জালিয়াতি ও করফাঁকি-সহ ৮টি ফৌজদারি মামলা চলছে। তারই একটির শুনানিতে কোহেন মঙ্গলবার আদালতে এ কথা জানান। কোহেন অবশ্য সরাসরি ট্রাম্পের নামোল্লেখ করেননি আদালতে। তবে কোহেনের আইনজীবী ল্যানি ডেভিস পরে একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘কোহেন এ দিন আদালতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথাই বলেছেন। ট্রাম্প ওঁকে প্রচুর ডলার দিয়ে ওই দুই মহিলার মুখ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।’’ আইনজীবী ডেভিসের প্রশ্ন, ‘‘ডলার দিয়ে দুই মহিলার মুখ বন্ধ করাটা যদি কোহেনের অপরাধ হয়ে থাকে, তা হলে কোহেনকে সেই নির্দেশ দেওয়ার জন্য ট্রাম্প কেন অপরাধী হবেন না আইনের চোখে?’’
ম্যানহাটন আদালতে ট্রাম্পের নির্বাচনী ও প্রচার তহবিলের যে হিসেবপত্র দাখিল করা হয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, গরমিল রয়েছে প্রায় ৩ লক্ষ ডলারের। কোহেন আদালতে জানিয়েছেন, তার মধ্যে ১ লক্ষ ৩০ হাজার ডলার দিয়ে মুখ বন্ধ করা হয় হলিউডের অভিনেত্রী স্টর্মি ড্যানিয়েলসের। আর দেড় লক্ষ ডলার দেওয়া হয় সেই সময়ের বিখ্যাত প্লেবয় মডেল ক্যারেন ম্যাকডোগালকে।
আরও পড়ুন- শীর্ষ ব্যাঙ্ককে বিঁধলেন ট্রাম্প, ধাক্কা ডলারে
আরও পড়ুন- সাংবাদিকরা দেশের শত্রু নন, একযোগে ট্রাম্পকে তোপ তিনশো মার্কিন সংবাদপত্রের
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবশ্য স্টর্মি ও ক্যারেনের সঙ্গে তাঁর যৌন সম্পর্কের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর আইনজীবী রুডি গ্যুলিয়ানি বলেছেন, ‘‘কোহেন ডাহা মিথ্যেবাদী। স্টর্মি ও ক্যারেনকে ডলার দেওয়া হয়েছিল ট্রাম্প আর তাঁর পরিবারকে বিব্রত হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে। তার সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারের কোনও সম্পর্ক ছিল না।’’
পরে ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ায় একটি সমাবেশে ভাষণের সময় অবশ্য আদালতে দেওয়া কোহেনের বিবৃতি নিয়ে টুঁ শব্দটিও করেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট। গত কয়েক দশক ধরে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী ছিলেন কোহেন। কিছু দিন আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁকে সেই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেন।
ম্যানহাটনের অ্যাটর্নি অফিসের প্রসিকিউটর রবার্ট খুজামি বলেছেন, ‘‘প্রচার তহবিল থেকে ওই পরিমাণ ডলার (প্রায় ৩ লক্ষ ডলার) তুলে নিয়ে তা দিয়ে দুই মহিলার মুখ বন্ধ করার পর সেই অর্থ ফেরত চেয়েছিলেন কোহেন, একটি ‘ইনভয়েস’-এর মাধ্যমে। যাতে লেখা হয়েছিল, আইনঘটিত কারণেই ওই অর্থ ব্যয় হয়েছে।’’
আমেরিকা থেকে চিন, ব্রিকস থেকে সার্ক- সব গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy