বস্টন যাওয়ার পথে এই অভিজ্ঞতা হল হাওয়াইয়ের এক বাসিন্দার। ছবি: সংগৃহীত।
টিকিট থাকা সত্ত্বেও বিমানে আসন জুটল না ২৭ মাসের তাইজোর। সাড়ে তিন ঘণ্টার উড়ানের গোটাটাই সে কাটাল মায়ের কোলে।
ওই দীর্ঘ সময় ছেলেকে কোলে নিয়ে বসে, হাত-পা প্রায় অবশ হওয়ার জোগাড় মায়ের। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই ওই যাত্রীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে আমেরিকার ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ।
হাওয়াইয়ের বাসিন্দা শার্লি ইয়ামাউচি ছেলে তাইজোকে নিয়ে শিক্ষকদের একটি সম্মেলনে যোগ দিতে বস্টনে যাচ্ছিলেন। শার্লি মিডল স্কুলের শিক্ষিকা। দু’জনের জন্য ২ হাজার ডলার দিয়ে ওই উড়ানের টিকিট কেটেছিলেন তিনি। হাওয়াই থেকে হিউস্টন পর্যন্ত উড়ানের প্রথম ধাপটা ভালই কেটেছিল।
আরও পড়ুন
ভারত না পিছোলে ‘স্বাধীন সিকিম’এ উস্কানির হুমকিও দিচ্ছে চিন
এর পর বস্টনের দিকে বিমান রওনা হয়। ছেলেকে পাশের আসনে নিয়ে বসেছিলেন শার্লি। সেই সময়ে এক জন এসে শার্লির পাশের আসনে বসার দাবি করেন। তাঁর হাতে ছিল সেই আসনের বৈধ টিকিট। এই ঘটনায় রীতিমতো অবাক হয়ে যান শার্লি। ওই আসনের টিকিটও তো তাঁর কাছে রয়েছে। বিষয়টি নজরে আনার পরে ফ্লাইট অ্যাটেন্টডেন্ট জানান, গোটা বিমানে আর কোনও আসন খালি পড়ে নেই। এর পর তা নিয়ে আর উচ্চবাচ্য করেননি শার্লি।
কিন্তু কেন?
শার্লি জানিয়েছেন, এক সময় তাঁর মনে হয়েছিল প্রতিবাদ করবেন। পরে মত পাল্টান। তিনি বলেন, “ইউনাইটেডের উড়ানে যে ভাবে যাত্রীর দাঁত উপড়ে নেওয়া হয়েছে, আমি চাইনি সে রকম আমার সঙ্গেও ঘটুক।” এর পর ছেলেকে কোলে নিয়ে নিজের আসনে বসেন শার্লি। পাশের আসনে ওই যাত্রী। নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে শার্লি বলেছেন, “তাইজোর ওজন ১১ কেজিরও বেশি। উচ্চতায় আমার প্রায় অর্ধেক। গোটা সফরে কিছু ক্ষণ পর পরই আমার দু’হাঁটুর উপর উঠে দাঁড়িয়ে পড়ছিল সে।” তবে এ ভাবে বসা ছাড়া আর কোনও উপায়ও ছিল না শার্লির।
এই ঘটনার কথা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর শার্লির কাছে লিখিত বিবৃতি দিয়ে ক্ষমা চেয়েছে ইউনাইটেড। বিবৃতিতে ওই এয়ারলাইন্সের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাইজোর বোর্ডিং পাস সঠিক ভাবে স্ক্যান না হওয়াতেই এই বিপত্তি হয়েছে। যার ফলে কম্পিউটার সিস্টেমে তার টিকিটের তথ্য এন্ট্রি হয়নি। ফলে ওই আসনটি ওয়েটিং লিস্টে নাম থাকা এক যাত্রীকে দিয়ে দেওয়া হয়। এ জন্য শার্লিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
গত কয়েক মাসে ইউনাইটেড এয়ারলাইন্সের একাধিক যাত্রী হেনস্থার অভিযোগ করেছেন। কখনও হবু দম্পতিকে বৈধ আসনে না বসার জন্য, কখনও বা ভিয়েতনাম বংশোদ্ভূত এক মার্কিন চিকিৎসককে বিমান থেকে জোর করে নামিয়ে দিয়েছে তারা। প্রথমে তা নিয়ে কোনও পদক্ষেপ না করলেও পরে সমালোচনার মুখে পড়ে ক্ষমা চেয়ে নেয় সংস্থাটি। গত এপ্রিলের সেই সব বিতর্কের রেশ মিটতে না মিটতেই ফের অভিযোগ!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy