Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রাণভয়ে সিরিয়ায় ঘরছাড়া ৬৫ হাজার 

তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্ত লাগোয়া রাস আল-আইন এবং দরবসিয়া শহর এই দু’দিনেই প্রায় খালি।

নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। ছবি: রয়টার্স।

নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। ছবি: রয়টার্স।

বেরুট
সংবাদ সংস্থা  শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৯ ০১:২৪
Share: Save:

প্রাণের ভয়ে ভিটেমাটি ছেড়ে পালাচ্ছেন কাতারে কাতারে মানুষ। কয়েক বছর আগেকার সেই ছবিই ফিরে এল উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায়। সে বার শত্রু ছিল আইএস। এ বার তুর্কি সেনা। বিমান হানায় গুঁড়িয়ে গিয়েছে বাড়ি, কালো ধোঁয়ায় ঢেকেছে আকাশ। তালা পড়েছে বেশ কিছু হাসপাতালে। এর মধ্যেই বাক্সপ্যাঁটরা, টুকটাক আসবাব যা কিছু গাড়ি-মোটররিকশায় তুলে দিয়ে পায়ে হেঁটেই শহর ছাড়ছেন নিরীহ নাগরিকেরা। কোলে-পিঠে বাচ্চা। বেশির ভাগই কুর্দ জনজাতির অংশ। ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি’ বলছে, বুধবার তুর্কি সেনা অভিযান শুরুর পর থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৬৫ হাজার মানুষ ঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমেছেন।

তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্ত লাগোয়া রাস আল-আইন এবং দরবসিয়া শহর এই দু’দিনেই প্রায় খালি। সিরিয়ার একাধিক মানবাধিকার ও ত্রাণ সংগঠনের দাবি, তুরস্ক যে ভাবে লাগাতার বোমা ফেলছে, তাতে সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় বসবাসকারী প্রায় ৫ লক্ষ মানুষের জীবনে বড় ঝুঁকি রয়েছে। তুরস্কের বিদেশ মন্ত্রক আজ দাবি করেছে, ইতিমধ্যেই ৩৪২ জন কুর্দ ‘জঙ্গিকে’ মেরে ফেলেছে তাদের বাহিনী। প্রাণ গিয়েছে এক জন তুর্কি সেনার। সিরিয়ায় কর্মরত একাধিক মানবাধিকার সংগঠনের দাবি,

অন্তত ৯ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আহতের সংখ্যাও।

ভারত, ইটালির মতো দেশ এমনকি রাষ্ট্রপুঞ্জও তুরস্কের অভিযান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ন্যাটোর প্রধানও আজ তুরস্কের সেনাকে সংযত হওয়ার আর্জি জানিয়েছে। আঙ্কারা তবু অনড়ই। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়িপ এর্ডোয়ান ফের বললেন, ‘‘জঙ্গিদের নির্মূল করে তুরস্কের দক্ষিণ সীমান্ত তথা উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় শান্তি এবং স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনাই এই অভিযানের লক্ষ্য।’’ জঙ্গি মানে, তুরস্করে চোখে কুর্দরাই।

আমেরিকা সেনা প্রত্যাহারের দিন তিনেকের মাথায় যে হেতু এই অভিযান শুরু হয়েছে, কুর্দরা তাই পরোক্ষে আমেরিকাকেই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী করছে। আজ ট্রাম্প টুইট করে তিনটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথমত, আমরা হাজার হাজার সেনা পাঠিয়ে এলাকার দখল নিতে পারি। দ্বিতীয়ত, নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে তুরস্কের অর্থনীতিকে গুঁড়িয়ে দিতে পারি। অথবা, দু’পক্ষ রাজি থাকলে আমরা তুরস্কের এবং কুর্দদের মধ্যে মধ্যস্থতা করতেও তৈরি আমরা।’’

এখন অবশ্য শুধু প্রাণ বাঁচাতেই পড়িমরি করে পালাচ্ছেন মানুষ। বাধ্য হয়ে ঘাঁটি ছাড়তে হচ্ছে কুর্দদেরও। আর তাতেই অশনিসঙ্কেত দেখছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর আশঙ্কা, কুর্দরা পাহারা থেকে সরে গেলে এ বার কয়েক হাজার আইএস জঙ্গিও জেল থেকে পালাবে। সিরিয়া ফের স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠবে জঙ্গিদের। তুরস্ক এলাকা খালি করে শরণার্থী রাখার কথা বলছে। কিন্তু আইএস ফের আড়েবহরে বাড়তে শুরু করতে আঙ্কারা আদৌ তা সামাল দিতে পারবে কি না, সন্দেহ প্রকাশ করেছেন পুতিন।

অন্য বিষয়গুলি:

Syria Assault
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy