দোহায় মহিলা প্রতিনিধিরা।
নখ রাঙানোর জন্য নেলপলিশ লাগানোর ‘দোষে’ চাবুক খেতে হয়েছিল ফজ়িয়া কুফিকে। আফগানিস্তানে তখন তালিবানের রাজত্ব। বোরখা ছাড়া অন্য পোশাকে মেয়েরা রাস্তায় বেরোলেও জুটত চাবুকের বাড়ি। পরকীয়ার অভিযোগ এনে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে শুক্রবারের প্রার্থনার পরে খেলার স্টেডিয়ামের সামনে মুণ্ডচ্ছেদ করা হত তাঁদের।
২০২০ সাল। সেই আফগানিস্তানের ছবিটা এখন কিছুটা হলেও অন্য রকম। এখন সেই তালিবানের সঙ্গেই আফগান সরকারের শান্তি বৈঠকে তাই জায়গা করে নিয়েছেন ফজ়িয়া। সঙ্গে আরও তিন আফগান নারী। ফতিমা গৈলানি, হাবিবা সারাবি এবং শরিফা জ়ুরমাতি। ৭০ ছুঁইছঁই বা ৬০ পেরোনো এই মহিলারাই এখন গোটা বিশ্বের নজর কেড়েছেন। নিজেদের যোগ্যতায় দোহার শান্তি বৈঠকে আফগান সরকারের ১৭ জন পুরুষ প্রতিনিধির পাশে নিজেদের জায়গা করে নিয়েছেন তাঁরা।
‘‘তালিবানকে বুঝতে হবে যে, এখন সময় পাল্টেছে। ওরা যে সময়ে গোটা দেশে ভয়ের রাজত্ব কায়েম করেছিল, সেই সময়ের থেকে আফগানিস্তান এখন অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে,’’ বলছেন ফজ়িয়া। তাঁর উপরে হামলা হয়েছে মোট দু’বার। শেষ বারেরটা গত মাসে। জানালেন, কাবুল বা অন্য বড় শহরে মেয়েরা পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছেন। নিজেদের পছন্দের পেশাও বাছতে পারছেন। কিন্তু গ্রামীণ আফগানিস্তান এখনও অনেক পিছিয়ে। এই ছবিটাই বদলাতে চাইছেন তাঁরা। বললেন, ‘‘আফগানিস্তানের মতো দেশে এত গুরুত্বপূর্ণ একটা দায়িত্ব পালন করা সহজ নয়। অন্যদের এটা বোঝানোও সহজ নয় যে, মেয়েরাও চাইলে সব পারে।’’
আরও পড়ুন: ‘উহান-ল্যাবেই তৈরি করোনা’, বিস্ফোরক চিনা বিজ্ঞানী
ফজ়িয়ার মতোই লড়াইয়ের গল্প শুনিয়েছেন বাকি মহিলা প্রতিনিধিরা। তালিবান আমলে নিজের দেশ ছেড়ে পাকিস্তানে গিয়ে আশ্রয় নিতে হয়েছিল হাবিবা সারাবিকে। তার একমাত্র কারণ ছিল, তিনি ছিলেন শিক্ষিকা। যে কোনও মূল্যে মেয়েদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। তালিবান শাসকরা সেটা মানেনি। পরে দেশে ফিরে দেশের প্রথম প্রাদেশিক গভর্নর হয়েছেন। দু’বারের মন্ত্রীও। শীর্ষ তালিবান নেতৃত্বের মনোভাব পাল্টেছে বলে এখনও বিশ্বাস করেন না তিনি। যদিও শনিবার থেকে শুরু হওয়া শান্তি আলোচনাকে সদর্থক বলেই ব্যাখ্যা করলেন ৬২ বছরের হাবিবা।
সরকারি দলের পুরুষ প্রতিনিধিদের প্রশংসা শোনা গেল ৬৮-র ফতিমা গৈলিনির মুখে। জানালেন, এই ১৭ জন প্রতিনিধির সমর্থন সব সময় পাচ্ছেন তাঁরা। বললেন, ‘‘আমরা যেটা বিশ্বাস করি, এই পুরুষেরাও সেটাই বিশ্বাস করেন। এটাই সবচেয়ে বড় কথা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy