বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। — ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াবদুল কাদের-সহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি)। ১৮ নভেম্বরের মধ্যে হাসিনা-সহ সব অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তদন্তকারী সংস্থাকে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন পর্বে ‘গণহত্যা এবং মানবতা বিরোধী অপরাধ’-এর অভিযোগে দায়ের হওয়া দু’টি মামলার প্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার এই পদক্ষেপ করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে একটি কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত ছাত্র মহম্মদ মেহেদীর বাবা মহম্মদ সানাউল্লাহ দায়ের করেছিলেন। অপরটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নিহত নেতা আরিফ আহমেদ সিয়ামের বাবা মহম্মদ বুলবুল কবির। শুধু হাসিনা নন, তাঁর সরকারের মন্ত্রী, দল আওয়ামী লীগ ও তার বিভিন্ন শাখা সংগঠন এবং কয়েক জন সরকারি আধিকারিকের নামেও অভিযোগ করা হয়েছিল।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবারের শুনানি পর্বে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর আইনজীবী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘এই অপরাধগুলো বিস্তৃত মাত্রায় সারা বাংলাদেশ জুড়ে সংঘটিত হয়েছে।’’ সেই সঙ্গে ‘প্রভাবশালী তত্ত্ব’ পেশ করে আদালতকে তিনি বলেন, ‘‘এই অপরাধে অভিযুক্ত যাঁরা, তাঁরা অসম্ভব রকমের প্রভাবশালী, তাঁদের গ্রেফতার করা না হলে তদন্তের প্রক্রিয়া পরিচালনা করা কঠিন।’’ তাঁর সেই যুক্তি মেনে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার এবং দুই সদস্য— বিচারপতি মহম্মদ শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
গত ৫ অগস্ট জনবিক্ষোভের জেরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে ঢাকা ছেড়ে ভারতে চলে এসেছিলেন হাসিনা। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার পরে স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শদাতা নুরজাহান বেগম জানিয়েছিলেন, জুলাই এবং অগস্ট মাসে হাসিনা সরকারের মদতে পুলিশি সন্ত্রাসে প্রাণ হারিয়েছেন হাজারেরও বেশি সাধারণ মানুষ। বহু মানুষ জখম হয়েছেন। বিভিন্ন মহলে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা’-র অভিযোগ উঠেছে। সেপ্টেম্বরের গোড়ায় এ নিয়ে হাসিনা-সহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে সক্রিয় হয়েছিল আইসিটি। অন্তর্বর্তিকালীন সরকারের বিদেশ বিষয়ক পরামর্শদাতা মহম্মদ তৌহিদ হোসেন সে সময় জানিয়েছিলেন, বিচারের স্বার্থে হাসিনাকে দেশে ফেরাতে বদ্ধপরিকর তাঁরা।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাগুলির বিচারের উদ্দেশ্যে ২০১০ সালে হাসিনার আমলেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছিল। এই ট্রাইব্যুনালে ইতিমধ্যে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অনেকের বিচার হয়েছে। ফাঁসি-সহ বিভিন্ন মেয়াদের জেলের শাস্তি কার্যকর হয়েছে। হাসিনা জমানায় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আরও কয়েক জনের বিচারও ট্রাইব্যুনালে চলছিল। এ বার গ্রেফতারি পরোয়ানায় মুখে পড়লেন স্বয়ং হাসিনাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy