Thailand King Maha Vajiralongkorn is Under Self Quarantine with his 20 escorts in Germany dgtl
thailand
চার বার বিয়ে, ৭ সন্তান! করোনাত্রাসে ২০ রক্ষিতাকে নিয়ে নিভৃতবাসে যাওয়া এই রাজা সন্ন্যাসীও ছিলেন
নিভৃতবাসে রাজার সঙ্গী হয়েছেন তাঁর কুড়ি জন রক্ষিতা। তাঁদের নিয়ে রাজা মহা বাজিরালংকর্ণের বর্তমান ঠিকানা এখন জার্মানির বাভারিয়ান আল্পসের বিখ্যাত হোটেল ‘গ্র্যান্ড হোটেল সোনেনবিখল’।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২০ ১০:৩০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
তাইল্যান্ডের রাজার নিভৃতবাস তাঁর জীবনযাত্রার থেকেও রাজকীয়। করোনাভাইরাসের আতঙ্কে গত মাসেই স্বেচ্ছায় কোয়রান্টিনে গিয়েছেন ৬৭ বছর বয়সি রাজা মহা বাজিরালংকর্ণ। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত।
০২১৯
নিভৃতবাসে রাজার সঙ্গী হয়েছেন তাঁর কুড়ি জন রক্ষিতা। তাঁদের নিয়ে রাজা মহা বাজিরালংকর্ণের বর্তমান ঠিকানা এখন জার্মানির বাভারিয়ান আল্পসের বিখ্যাত হোটেল ‘গ্র্যান্ড হোটেল সোনেনবিখল’।
০৩১৯
এই হোটেলের একটি বড় অংশে বেশ কিছু পরিবর্তন করা হয়েছে রাজার ইচ্ছানুসারে। আপাতত হোটেলে সাধারণ পর্যটকের প্রবেশ নিষিদ্ধ। কিন্তু রাজার জন্য সেই নিয়ম শিথিল করে খুলে দেওয়া হয়েছে হোটেলের দরজা।
০৪১৯
করোনা পরিস্থিতির জেরে গত ২৬ মার্চ থেকে তাইল্যান্ড জুড়ে জারি হয়েছে জরুরি অবস্থা। তার মধ্যে দেশবাসীকে রেখে রাজা চলে গিয়েছেন নিশ্চিত আশ্রয়ে। এই প্রসঙ্গে তাইল্যান্ডের অ্যান্টি ডিফেমেশন আইনের জোরে সেই দেশের সংবাদমাধ্যমের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেয়েছেন রাজা মহা বাজিরালংকর্ণ।
০৫১৯
কিন্তু বন্ধ করা যায়নি সোশ্যাল মিডিয়ার মুখ। সেখানে তীব্র সমালোচিত হয়েছেন রাজা মহা বাজিরালংকর্ণ। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমও তাঁর এই সিদ্ধান্তকে ‘পলাতক’ মনোভাব বলেই তকমা দিয়েছে। সেখানেই তিনি যথেষ্ট আক্রমণের লক্ষ্য।
০৬১৯
টুইটারে সরাসরি প্রশ্ন করা হয়েছে, প্রজাদের সঙ্কটকালেই রাজা যদি তাঁদের পাশে না থাকেন, তা হলে রাজার প্রয়োজন কী!
০৭১৯
প্রচলিত প্রাচীন রীতি অনুযায়ী রাজা মহা বাজিরালংকর্ণ পরিচিত ‘রাজা দশম রাম’ নামেও। তাঁর জন্ম ১৯৫২ সালের ২৮ জুলাই। বাবা রাজা ভূমিবল আদুলিয়াদেজের মৃত্যুর পর সিংহাসনে বসেন তিনি। বৌদ্ধ ও ব্রাহ্মণ মতে তাঁর রাজ্যাভিষেক হয়। রীতি অনুযায়ী ব্যাঙ্ককে হয় তাঁর রাজ্যভ্রমণ।
০৮১৯
বাজিরালংকর্ণের পড়াশোনা প্রথম থেকে শেষ অবধি পুরোটাই ইংল্যান্ডে। এর পর তিনি অস্ট্রেলিয়ার সিডনি ও ক্যানবেরার নামী প্রতিষ্ঠান থেকে সেনা প্রশিক্ষণ নেন। দেশে ফিরে তিনি প্রথামাফিক সেনাবাহিনীতে কর্তব্যরতও ছিলেন।
০৯১৯
তাইল্যান্ডের প্রাচীন রীতি অনুযায়ী তিনি রাজ্যাভিষেকের আগে সন্ন্যাসজীবনও পালন করেন। ১৯৭৮ সালে তিনি দু’সপ্তাহের জন্য এক বিহারে বৌদ্ধ ভিক্ষু হিসেবে ছিলেন।
১০১৯
১৯৭৭ সালে বাজিরালংকর্ণ বিয়ে করেন তাঁর আত্মীয়া সোওয়ামসায়ালি কিতিয়াকারাকে। সে বছরেই জন্ম হয় তাঁদের একমাত্র মেয়ে, বজ্রকিতিয়াভার।
১১১৯
সত্তরের দশকের মাঝামাঝি যুবরাজ বাজিরালংকর্ণ লিভ ইন শুরু করেন অভিনেত্রী যুবধিদা পলপ্রাসার্থের সঙ্গে। জন্ম হয় তাঁদের পাঁচ সন্তানের। চার ছেলে এবং এক মেয়ের।
১২১৯
কিন্তু দীর্ঘদিন তাঁকে ডিভোর্স দেননি স্ত্রী কিতিয়াকারা। তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয় ১৯৯৩ সালে। ব্যর্থ বিয়ের দায় পুরোটাই স্ত্রীর উপর চাপিয়ে দেন সেকালের যুবরাজ, আজকের রাজা।
১৩১৯
১৯৯৪ সালে যুবধিদা পলপ্রাসার্থকে বিয়ে করেন বাজিরালংকর্ণ। বিয়ের পরে যুবরানির নতুন নাম হয় সুজারিনী ভিভাচারাওয়ংসে। কিন্তু বিয়ের দু’বছর পরে সন্তানদের নিয়ে সুজারিনী নিজের নতুন ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের জেরে পালিয়ে যান আমেরিকায়। পরে বাজিরালংকর্ণ তাঁর কন্যাকে তাইল্যান্ডে ফিরিয়ে আনতে পেরেছিলেন। কিন্তু চার ছেলে থেকে যান তাঁদের মায়ের সঙ্গেই।
১৪১৯
তাঁদের সব কূটনীতিক সুবিধে এবং রাজপরিচয় কেড়ে নেওয়া হয়। যে মেয়েকে নিজের কাছে আনতে পেরেছিলেন, তাঁকে তাইল্যান্ডের রাজকন্যার পরিচয় দেওয়া হয়।
১৫১৯
২০০১ সালে তৃতীয় বিয়ে করেন বাজিরালংকর্ণ। এ বার তাঁর স্ত্রী শ্রীরশ্মি সুওয়াদি ছিলেন সাধারণ তাই-নাগরিক। কোনও রাজপরিচয় তাঁর ছিল না। চার বছর পরে পুত্রসন্তানের জন্মের পরে তাঁদের বিয়ে প্রকাশ্যে আনা হয়।
১৬১৯
বিয়ের ১৩ বছর পরে ভেঙে যায় বাজিরালংকর্ণের তৃতীয় দাম্পত্য। বাজিরালংকর্ণের অভিযোগ ছিল, সুওয়াদির পরিবারের সদস্যরা দুর্নীতিতে জড়িত। ফলে তাঁদের কাছ থেকেও কেড়ে নেওয়া হয় প্রাপ্য রাজোচিত সুযোগসুবিধেও।
১৭১৯
২০১৯-এ তাঁর অভিষেকের তিন দিন আগে চতুর্থ বিয়ে করেন বাজিরালংকর্ণ। সবাইকে চমকে দিয়ে তিনি পাণিগ্রহণ করেন ব্যক্তিগত রক্ষী দলের উপপ্রধান সুথিদাকে। বিয়ের পরই সুথিদাকে ‘রানি’ উপাধি দেন রাজা।
১৮১৯
সুথিদা তিদজাই আগে ফ্লাইট অ্যাটেন্ড্যান্ট ছিলেন। ২০১৪ সালে রাজা মহা বাজিরালংকর্ণ তাঁকে ব্যক্তিগত রক্ষী দলের ডেপুটি কমান্ডার নিযুক্ত করেন। কিছু বিদেশি সংবাদমাধ্যম বিয়ের আগেই সুথিদা ও রাজার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের খবর ফাঁস করে। তবে রাজপ্রাসাদের তরফে বিষয়টি স্বীকার করা হয়নি।
১৯১৯
২০১৯-এই তাঁর এক রক্ষিতার কাছ থেকে বিশেষ পরিচয় ও সুযোগ সুবিধে প্রত্যাহার করেন বাজিরালংকর্ণ। তাঁর অভিযোগ ছিল, ওই রক্ষিতা নিজেকে পদমর্যাদায় রানির সমকক্ষ ভাবছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে রাজা ও রাজপরিবারের বাকি সদস্যের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগও ছিল। (ছবি: আর্কাইভ এবং সোশ্যাল মিডিয়া)