ভূমিকম্পের ধাক্কা সামলাতে কতটা সক্ষম বহুতলগুলি? ৩০তলা নির্মীয়মাণ ভবন ভেঙে পড়ার পরে তা পুনরায় খতিয়ে দেখার কথা ভাবছে তাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককের স্থানীয় প্রশাসন। সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, ব্যাঙ্ককের ভবনগুলি ভূমিকম্প থেকে কতটা সুরক্ষিত তা পর্যালোচনা করে দেখা হবে। ভূমিকম্পের সময়ে কী কারণে ওই ৩০তলা নির্মীয়মাণ ভবনটি ভেঙে পড়ল, তা-ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ব্যাঙ্ককের প্রশাসন। মায়ানমারে গত শুক্রবারের ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছে তাইল্যান্ডেও। তবে তাইল্যান্ডের রাজধানীর বাইরে ক্ষয়ক্ষতির কোনও খবর মেলেনি। ব্যাঙ্ককের প্রশাসনের মতে, ওই ৩০তলা ভবনটি ভেঙে না-পড়লে ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হত। সেই কারণেই বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা।
ব্যাঙ্ককের ওই নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ার পর থেকে অন্তত ৫০ জনের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। সংবাদমাধ্যমের একাংশে দাবি, প্রায় ৭৮ জন নিখোঁজ। নিখোঁজদের মধ্যে বেশির ভাগই ওই নির্মীয়মাণ ভবনে শ্রমিকের কাজ করছিলেন। সোমবার ওই ৩০তলা ভবনের ধ্বংসস্তূপে উদ্ধারকাজ তদারকিতে যান ব্যাঙ্ককের গভর্নর সি সিত্তিপুন্ত। ধ্বংসস্তূপের নীচে আরও কেউ চাপা পড়ে রয়েছেন কি না, সেটির উপরেই আপাতত বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, যদি এক জনেরও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থাকে, তাঁকেও উদ্ধারের জন্য সম্পূর্ণ চেষ্টা করতে হবে। তবে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হিসাবে, শহরের ভবনগুলি ভূমিকম্প প্রতিরোধে কতটা সক্ষম, তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
বিশেষজ্ঞদের মতে, ব্যাঙ্ককের মাত্র ১০ শতাংশ বাড়িই ভূমিকম্প প্রতিরোধে সক্ষম। শুক্রবারের কম্পনের জেরে তাই শহরের বেশির ভাগ বহুতলেই ফাটল ধরেছে। এমনকি, হোটেলগুলিতেও ফাটল ধরেছে। বিশেষত চাটু চাক বাজার এলাকায়। সারা বছর ব্যাঙ্ককে পর্যটকদের ভিড় জমে। এই অবস্থায় আগামী দিনে এই বিপর্যয় এড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে চাইছে ব্যাঙ্কক প্রশাসন। তাই ওই ৩০তলা ভবনটি কেন ভেঙে পড়ল, তা খতিয়ে দেখে ভবনগুলির ভূমিকম্প প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে চায় তারা। এপি জানিয়েছে, শুক্রবারের ভূমিকম্পে তাইল্যান্ডে এখনও পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। তার মধ্যে বেশিরভাগই ব্যাঙ্ককের ওই নির্মীয়মান ভবনে।
শুক্রবার ওই নির্মীয়মাণ ভবনটি ভেঙে পড়ার পর থেকে এই ধরনের বহুতল তৈরির নকশা, সুরক্ষাবিধি-সহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে। যে সংস্থা ওই নির্মাণের দায়িত্বে ছিল, তাদের শেয়ারদর ২৭ শতাংশ নেমে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তাইল্যান্ডের মন্ত্রী অনুতিন চার্নভিরাকুল একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। কী কারণে এই বিপর্যয় হল, তা খতিয়ে দেখে সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।