গরম থেকে বাঁচতে মাথা ভেজানো, স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ায়।ছবি: রয়টার্স ও এএফপি।
প্রবল গরমে নাভিশ্বাস দক্ষিণ ইউরোপের একটা বিরাট অংশের। কোথাও কোথাও তাপমাত্রা ছুঁয়েছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কোথাও তারও উপরে ওঠার সতর্কতা। গরমের চোখরাঙানি সব চেয়ে বেশি পর্তুগাল ও স্পেনে। রবিবার পর্যন্ত পর্তুগালের বেশ কিছু অংশে জারি রয়েছে লাল সতর্কতা। লোকজনকে বাইরে বেরোতে নিষেধ করছে প্রশাসন। শনিবার বিকেলে পর্তুগালের আলগার্ভে পারদ ছুঁয়েছিল ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
পর্তুগালের বেশ কয়েকটি জায়গায় দাপট দাবানলেরও। আলগার্ভ এলাকার দমকলবাহিনীর সাতশো লোক নাকানিচোবানি খাচ্ছে পরিস্থিতি সামাল দিতে। ২০০৩ সালে পর্তুগালে এক বার পারদ উঠেছিল ৪৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। একই অবস্থা স্পেনেও। এখানে আবার চড়া তাপমাত্রায় প্রাণ হারিয়েছেন দু’জন। এখানকার ৪১টি প্রদেশে জারি করা হয়েছে কড়া তাপমাত্রার সতর্কতা।
দাবানল পর্তুগালের আলগার্ভে।
ইংল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূলে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো তাপমাত্রা ছোঁয়ার কথা। লন্ডনের আশপাশে এবং মিডল্যান্ডসে চড়ছে তাপমাত্রা। কিছুটা মেঘলা স্কটল্যান্ড এবং নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে স্বস্তি দিতে পারে অল্প বৃষ্টি। কিন্তু ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস-এ গরম বাড়তির দিকে। সোম-মঙ্গলবার লন্ডনে তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছোঁওয়ার কথা। বুধবার থেকে তাপ কমতে পারে বলে আশ্বাস দিচ্ছে হাওয়া অফিস। বিশেষজ্ঞদের দাবি, উত্তরে আফ্রিকার সাহারা মরুভূমি থেকে ধুলো ওড়ানো ভারী বাতাসই এই গরমের জন্য দায়ী। নেদারল্যান্ডসে রাস্তার কিছু অংশ বন্ধ করতে হয়েছে গরমে অ্যাসফল্ট গলে যাওয়ায়। ফ্রান্সে গরমে বন্ধ চারটি পরমাণু চুল্লি।
জল নেই রাইন নদীর একাংশে, জার্মানির ডুসেলডর্ফে।
পরিবেশবিদ এবং আবহবিজ্ঞানীরা বলছেন, এ সবই বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু বদলের নজির। তার ফলে ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন জায়গায় আবহাওয়া মারাত্মক খামখেয়ালি হয়ে উঠছে। এর পিছনে মানুষের তৈরি করা দূষণের অবদানও কম নয়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওশানোগ্রাফি বিভাগের শিক্ষক তুহিন ঘোষ বলছেন, ‘‘আমাদের দেশেও তো রাজস্থানে অতিবৃষ্টি, শিমলায় গরমের মতো অস্বাভাবিক ঘটনা দেখা যাচ্ছে। ইউরোপেও তেমনই অদ্ভুত বদল দেখা যাচ্ছে। আসলে জলবায়ু একটা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। তার ফলে আবহাওয়া কোথায় কেমন হবে, তা বোঝা যাচ্ছে না। যত দিন যাবে, ততই এই বদল প্রকট হবে।’’ কিন্তু এই বদল থিতু হবে কবে? তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না বিজ্ঞানীরা।
আরও পড়ুন: খলিস্তান কাঁটা কি এ বার ব্রিটেনে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy