Tanganyika laughter epidemic in 1962 was not joke dgtl
Tanganyika laughter epidemic
হাসতে হাসতে ‘খুন’! হাসির মহামারিতে আক্রান্ত হয়েছিল এই দেশ
১৯৬২ সালে তানজানিয়ার কাশাশা গ্রাম আক্রান্ত হয়েছিল এই মহামারিতে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২১ ১৩:২৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
হাসি মানেই কি খুশি? খুশিতে মানুষ হাসেন ঠিকই, কিন্তু উল্টো কথাটা সব সময় ঠিক নয়। হাসি মানেই কিন্তু খুশি নয়।
০২১৬
হাসি কিন্তু একটি অসুখও। করোনা আবহে অতিমারি এবং মহামারি শব্দ দু’টির সঙ্গে পরিচিত হয়েছি আমরা সকলেই। কিন্তু অনেকেই জানেন না যে এক বার হাসিও নাকি মহামারির আকার নিয়েছিল!
০৩১৬
১৯৬২ সালে তানজানিয়ার কাশাশা গ্রাম আক্রান্ত হয়েছিল এই মহামারিতে। একের পর এক মানুষ বিনা কারণেই যেন হেসে খুন! পরিস্থিতি এমনই তৈরি হয়েছিল যে সামনের জনকে হাসতে দেখে উপস্থিত সবাই হাসতে শুরু করছিলেন। থামতে পারছিলেন না কেউই।
০৪১৬
এই মহামারি বিশ্ব জুড়ে পরিচিত ‘টানগানইকা লাফটার এপিডেমিক’ হিসাবে। তানজানিয়ার আগে নাম ছিল টানগানইকা। সে সময় জাঞ্জিবারের সঙ্গে যুক্ত ছিল তানজানিয়া।
০৫১৬
উগান্ডার সীমান্তে অবস্থিত তানজানিয়ার ওই গ্রামের একটি স্কুল থেকে সূত্রপাত হয়েছিল এই মহামারির।
০৬১৬
১৯৬২ সালের ৩১ জানুয়ারি কাশাশার একটি বোর্ডিং স্কুলের তিন ছাত্রীর মধ্যে প্রথম এই সংক্রমণ দেখা যায়। বিনা কারণে হাসতে শুরু করে তারা। তাদের থেকে দ্রুত স্কুলের বাকি পড়ুয়াদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে সংক্রমণ।
০৭১৬
স্কুলের ৯৫ জন পড়ুয়া যাদের বয়স ১২ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে তারা সকলেই সংক্রামিত হয়ে পড়ে এই রোগে।
০৮১৬
তবে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে বা অন্যান্য অশিক্ষক কর্মীদের মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়েনি। ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের মধ্যেই শুধুমাত্র ছড়িয়ে পড়েছিল রোগটি। সংক্রমণ আটকাতে স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
০৯১৬
সেখান থেকে নসাম্বা নামে একটি গ্রামের কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে রোগটি। জানুয়ারিতে শুরু হওয়া রোগটিতে ৪-৫ মাসের মধ্যে ২১৭ জন আক্রান্ত হন।
১০১৬
মে মাসের ২১ তারিখে কাশাশা গ্রামের স্কুলটি ফের চালু হয়। কিন্তু পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় কয়েক দিনের মধ্যেই ফের তা বন্ধ হয়ে যায়। পাশের গ্রাম বুকোবার কাছে আরও একটি স্কুলেও রোগটি ছড়িয়ে পড়ে। সেই স্কুলের ৪৮ জন পড়ুয়া আক্রান্ত হয়।
১১১৬
আক্রান্তরা টানা ১৬ দিন ধরে শুধু হাসতেই থাকত। এই ভাবে ১৮ মাস চলতে থাকে। কিন্তু তার পর আর কারও মধ্যে অকারণে হাসির বাড়বাড়ন্ত দেখা যাচ্ছিল না। কিন্তু তখন অন্য এক সমস্যা শুরু হয়, অন্য এক লক্ষ্মণ প্রকাশ পেতে শুরু করে।
১২১৬
আচমকা জ্ঞান হারানো, শ্বাসকষ্ট, শরীরে র্যাশ হওয়া, হঠাত্ হঠাত্ কেঁদে ওঠা, পরক্ষণেই আবার ভয়ে আর্তনাদ করা হাসি... আক্রান্তদের মধ্যে এ বার এই সমস্ত লক্ষ্মণ দেখা দিতে শুরু করে।
১৩১৬
তবে এই রোগে কারও মৃত্যু হয়নি। সব মিলিয়ে তানজানিয়ার মোট ১৪টি স্কুলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল। এক হাজার জন সংক্রামিত হয়েছিল।
১৪১৬
কী এই রোগ? কেন তা ছড়িয়ে পড়েছিল তানজানিয়ায়? ইন্ডিয়ানার পারডিউ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষক এর কারণ সামনে আনেন। মনের উপর অত্যধিক চাপের কারণেই এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন ছাত্ররা, দাবি করেছিলেন তিনি।
১৫১৬
সে সময় দেশটি সবে মাত্র স্বাধীন হয়েছিল। স্বাধীনতা আনন্দের, চাপমুক্তির। কিন্তু দেশের পড়ুয়াদের উপর খুব মানসিক চাপ বেড়ে গিয়েছিল সে সময়।
১৬১৬
কারণ দেশ স্বাধীন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পড়ুয়াদের প্রতি আশা বেড়ে গিয়েছিল অভিভাবক এবং শিক্ষকদের। সে কারণেই মূলত পড়ুয়াদের মধ্যে এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল বলে মনে করা হয়।