Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Joe Biden

অভিবাসীদের প্রতি ‘নরম’ বাইডেন, প্রভাব কি ভোটবাক্সে

বাইডেন হোন বা তাঁর পূর্বসূরিরা, এ দেশের সব সরকারই জানে যে, কোনও ‘মহাপ্রাচীর’-এরও ক্ষমতা নেই অভিবাসীদের অদম্য জনস্রোত রোখার।

জো বাইডেন।

জো বাইডেন। —ফাইল চিত্র।

শুভশ্রী নন্দী
আটলান্টা শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০২৪ ০৭:৩১
Share: Save:

আইনের চোখরাঙানি সত্ত্বেও প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক মানুষ মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশ থেকে, কখনও আলুর বস্তার ট্রাকে বা কাঁচা মাংসের ফ্রিজ়ারে লুকিয়ে, কখনও বা ডুবসাঁতার দিয়ে সমুদ্র পার হয়ে বা সীমান্তের কাঁটাতার-প্রাচীর ডিঙিয়ে আমেরিকায় প্রবেশ করার চেষ্টা করেন। অনেকেরই নতুন দেশে নতুন ঘর বাঁধার স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় মাঝপথেই, পণ্যবাহী ট্রাকে দমবন্ধ হয়ে বা সমুদ্রে ডুবে প্রাণ হারিয়ে। যাঁরা শেষ পর্যন্ত এ দেশে প্রবেশ করতে পারেন, তাঁদের পরিচয় হয় ‘অবৈধ অভিবাসী’।

গত কাল মধ্যরাতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অভিবাসী-কল্যাণে একটি নতুন ‘এগজ়িকিউটিভ অর্ডারে’ সই করেছেন। এই নির্দেশ অনুযায়ী, আমেরিকান নাগরিকদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ কিন্তু অভিবাসী হিসেবে অনথিভুক্ত, এমন যাঁরা রয়েছেন—তাঁদের আর পত্রপাঠ দেশে ফেরত পাঠানো হবে না। তাঁরা পাকাপাকি ভাবে আমেরিকায় বসবাস করতে এবং নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। অন্তত দশ বছর আমেরিকায় থাকলে চাকরির আবেদনের সুযোগও মিলতে পারে। ৪ লক্ষ ৯০ হাজার মানুষ এই প্রকল্পে উপকৃত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে।

এই রায়ে খুশি এ দেশের স্প্যানিশভাষী অভিবাসীদের একটা বড় অংশ। ফুল্টন কাউন্টি স্কুলের সাফাইকর্মীর স্ত্রী মারিয়া বললেন, “কাগজপত্র থাকায় এ বার আত্মসম্মান নিয়ে চলতে পারব।”

বাইডেন হোন বা তাঁর পূর্বসূরিরা, এ দেশের সব সরকারই জানে যে, কোনও ‘মহাপ্রাচীর’-এরও ক্ষমতা নেই অভিবাসীদের অদম্য জনস্রোত রোখার। এ দেশে ঢুকে পড়ার পরে এই অবৈধ অভিবাসীরা একটা নিজস্ব সমাজ গঠন করে নিজেদের মতো করে বাঁচার চেষ্টা করেন। এই সব অভিবাসী অনেক সময়েই আমেরিকান নাগরিকদের বিয়ে করে ‘নিশ্চিত’ করতে চান তাঁদের অবস্থান। কিন্তু যে-হেতু তাঁর অবৈধ ভাবে এ দেশে ঢুকেছেন, তাই ‘বিবাহ’ কোনও ভাবেই ‘নাগরিকত্ব’ নিশ্চিত করে না। সমস্যার সম্মুখীন হয় অবৈধ অভিবাসী মা-বাবার সন্তানরাও। ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে ফুল্টন কাউন্টির একটি স্কুলের একটি ক্লাস বন্ধ করে দিতে হয়েছিল, কারণ সেই এলাকার অভিবাসী সন্তানদের কোনও স্থায়ী বসবাসের প্রমাণপত্র ছিল না।

এ কথা মানতে দ্বিধা নেই যে, ‘ব্লু কলার জব’ অর্থাৎ, কম মজুরির কাজের মূল ভারটা এই অভিবাসীরাই সামলান। তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী শুভজিৎ রায় তাই মনে করেন, ‘‘অভিবাসী আইনের ক্ষেত্রে এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মানবিক ঘোষণা। যে কোনও দেশই তার নিজস্ব নৈতিকতার বুননে চলে। শুরু থেকেই অভিবাসীদের নিয়ে চলার কাঠামোয় এই দেশ বিশ্বাসী। দীর্ঘদিনের ভুক্তভোগীদের সমস্যা খানিকটা অন্তত মিটল।”

তবে বাইডেনের ‘সংবেদনশীল’ অভিবাসন নীতি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের ভোটবাক্সে বড়সড় গর্ত তৈরি করতে পারে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। কারণ, অনেকেই মনে করেন, এই সব বেআইনি অভিবাসী অধিকাংশই মাদকাসক্ত এবং অপরাধমূলক কাজকর্মে জড়িত। তাঁদের পিছনে করের টাকা ব্যয় করতে বিরক্ত হন তাঁরা। কাঠের মিস্ত্রি হেন্ডারসন মার্টিনেজ়ের কথায়, ‘‘এই আতিথেয়তার জন্য বাইডেন আজ অনেক প্রদেশেই অপ্রিয় হয়ে পড়েছেন।”

অন্য বিষয়গুলি:

Joe Biden USA Immigrants
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy