—প্রতীকী চিত্র।
উড়ান সংস্থা বোয়িং-এ দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে কাজ করেছেন তিনি। স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটছে জানিয়ে ২০১৭ সালে অবসর নিয়ে নেন জন বারনেট। সম্প্রতি সংস্থার উৎপাদনের গুণমান নিয়ে প্রকাশ্যে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগের প্রমাণ দাখিলও করেছিলেন জন। এর পরেই অনেকের নজরে পড়ে যান ‘হুইসলব্লোয়ার’ জন। চাপ আসতে থাকে বিভিন্ন দিক থেকে। গত ৯ মার্চ সাউথ ক্যারোলাইনার চার্লসটনে ট্রাকের ভিতরে দেহ মেলে জনের। এই ঘটনার এক সপ্তাহ পরে আজ আরও চাঞ্চল্য ছড়াল তাঁর বন্ধুর বয়ান। সংবাদমাধ্যমে জেনিফার নামে এক মহিলা দাবি করেছেন, জন তাঁকে বলেছিলেন, ‘‘আমার যদি কিছু হয়, জানবে সেটা আত্মহত্যা নয়।’’
জনের মৃতদেহে ক্ষত ছিল। যা দেখে প্রাথমিক তদন্তে জানানো হয়, ৬২ বছর বয়সি বৃদ্ধ ‘আত্মঘাতী’ হয়েছেন। কিন্তু তাঁর বন্ধু জেনিফার সেই দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছেন। জেনিফারের কথায়, ‘‘জন কিছুতেই আত্মহত্যা করতে পারেন না।’’
বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে মামলা চলছে। জেনিফার জানতেন, জন তাঁর বয়ানের সমর্থনে আদালতের কাছে বেশ কিছু প্রমাণ দাখিল করেছেন। জন জানিয়েছিলেন, বোয়িংয়ের কর্মীদের ক্রমাগত চাপে রাখা হয়। ডেডলাইন ছুঁতে গিয়ে কাজের গুণমান ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। দায়সারা ভাবে কাজ শেষ করতে গিয়ে বোয়িংয়ের বিমানগুলিতে খারাপ জিনিস ব্যবহার করা হচ্ছে। যেমন, যে অক্সিজেন সিস্টেম রয়েছে ৭৮৭ ড্রিমলাইনারে, তার ২৫ শতাংশ খারাপ। অর্থাৎ, কোনও জরুরি পরিস্থিতি দেখা দিলে, এক-চতুর্থাংশ অক্সিজেন মাস্ক কাজ করবে না। জন আদালতে জানিয়েছিলেন, তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টা নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।
আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার পর থেকে সংস্থাটির দিক থেকে জনের উপরে চাপ আসতে থাকে। সম্প্রতি জনের সঙ্গে দেখা হয়েছিল জেনিফারের। সে সময়ে মামলা নিয়ে দু’জনের আলোচনা হয়। জেনিফার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শেষ বার যখন দেখা হয়েছিল, তিনি জনকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, তাঁর ভয় লাগছে কি না। উত্তরে জন বলেছিলেন, ‘‘না, আমি ভয় পাচ্ছি না। তবে আমার যদি কিছু হয়, জানবে আমি আত্মহত্যা করিনি।’’ জেনিফার আরও বলেন, ‘‘জন কিছুতেই আত্মহত্যা করতে পারেন না। উনি জীবনকে ভালবাসতেন, প্রাণবন্ত ছিলেন।’’
জেনিফারের দাবি, ওঁর মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করে যাচ্ছিল কেউ বা কারা। বোয়িং সম্পর্কে জন যা ফাঁস করে দিয়েছিলেন, তা অনেকেরই পছন্দ হয়নি। জেনিফার বলেন, ‘‘ওঁর মৃত্যুটাকে কায়দা করে আত্মহত্যা হিসেবে দেখানো হয়েছে।’’
২০১০ থেকে বোয়িংয়ের নর্থ চার্লসটন কারখানায় কোয়ালিটি ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন জন। এই কারখানায় ৭৮৭ ড্রিমলাইনার তৈরি করা হয়। দূরের পথে যাত্রা করত এই বড়সড় আকারের জেটটি। এ মাসের গোড়ায় সাক্ষ্য দিয়েছিলেন জন। বোয়িংয়ের আইনজীবীরা তাঁকে প্রশ্ন করেন। যে দিন ট্রাকের ভিতরে জনের দেহ মেলে, সি দিনও সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার কথা ছিল জনের। তিনি সাক্ষ্য দিতে না-যাওয়ায় তাঁর সন্ধান শুরু হয়। সে সময়ে চার্লসটনে যে হোটেলে জন ছিলেন, সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার পরেই হোটেলের কার-পার্কিংয়ে ট্রাকের ভিতরে জনের দেহ মেলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy