চিন-যাত্রার আগে চিকিৎসকদের নিয়ে টিম এয়ার ইন্ডিয়া। নিজস্ব চিত্র
করোনাভাইরাস সংক্রমণের আতঙ্ক নিয়ে চিনে আটকে থাকা ভারতীয় পড়ুয়াদের দেশে ফেরাতে আজ দুপুরে উহানে রওনা হল এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ বিমান। ফেরার পরে তাঁদের দিল্লির কাছে মানেসরে সেনা শিবিরে বিশেষ ওয়ার্ডে ‘কোয়ারেন্টাইন’ করে রাখা হবে। সেখানে প্রায় ৩০০ পড়ুয়াকে দু’সপ্তাহের জন্য কড়া নজরে রাখবে চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীদের দল। উদ্ধারে সহযোগিতার জন্য চিনের বিদেশমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
৪২৩ আসনের বিমানটিতে রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালের পাঁচ চিকিৎসক ও এক জন প্যারামেডিক রয়েছেন। শনিবার ভোররাত ১টা থেকে ২টোর মধ্যে দিল্লি ফিরবে বিমানটি। এয়ার ইন্ডিয়ার এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, শনিবার ভারতীয়দের উদ্ধারে আরও একটি বিমান যেতে পারে উহানে।
বিমানে ওঠার আগেই কোনও পড়ুয়ার সংক্রমণ রয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করা হবে। সংক্রমণ থাকলে তাঁকে দেশে না-ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। দিল্লিতে নামার পরেও ফের তাঁদের পরীক্ষা করবে এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষের চিকিৎসক দল ও সামরিক চিকিৎসক দলের যৌথ বাহিনী। সেই পরীক্ষার সময়ে পড়ুয়াদের তিনটি দলে ভাগ করে নেওয়া হবে। প্রথম দলে থাকবেন ‘সন্দেহজনকেরা’। অর্থাৎ, যে পড়ুয়াদের মধ্যে জ্বর, সর্দিকাশি বা শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণ রয়েছে। দ্বিতীয় দলে থাকবেন ‘ক্লোজ় কনট্যাক্ট কেস’। অর্থাৎ, সামুদ্রিক প্রাণী বা পশু মাংসের বাজারে গিয়েছেন, এমন ব্যক্তি যাদের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কোনও লক্ষণ নেই। বা সংক্রমণের লক্ষণ রয়েছে এমন কোনও ব্যক্তির সঙ্গে সংযোগ হয়েছে। এই দুই দলকে সরাসরি নির্দিষ্ট গাড়িতে বেস হসপিটাল দিল্লি ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হবে। তৃতীয় দলে থাকবে ‘নন কনট্যাক্ট কেস’ অর্থাৎ যাঁদের ভাইরাস সংক্রমণের কোনও লক্ষণ নেই বা সম্ভাব্য আক্রান্ত কোনও ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। তিন দলের প্রত্যেককেই ত্রিস্তরীয় মাস্ক পরে থাকতে হবে ও প্রতিদিন তাঁদের শারীরিক পরীক্ষা করা হবে। ১৪ দিন বাদে কারও মধ্যে সংক্রমণের লক্ষণ দেখা না-গেলে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে। এবং ‘কোয়ারেন্টাইন’-এ থাকাকালীন কারও মধ্যে সংক্রমণের লক্ষণ দেখা গেলে তাঁদের আইসোলেশন ওয়ার্ডে পাঠানো হবে।
এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানটিতে যে চিকিৎসক ও বিমানকর্মীরা থাকবেন, তাঁরা কেউ উহানে পৌঁছে বিমান থেকে নামতে পারবেন না। ফেরার পরে পাইলট, ইঞ্জিনিয়ার, বিমানকর্মী, চিকিৎসকদেরও এক সপ্তাহ বাড়িতে ‘বন্দি’ থাকতে হবে। বিমানকর্মীদের সঙ্গে যাত্রীদের যথাসম্ভব কম সংযোগ হবে। আসনের উপরেই রাখা থাকবে খাবার ও জল। উহান থেকে আসা ভারতীয়দের জন্য দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লির ছাবলাতেও শিবির তৈরি করেছে ভারত-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ (আইটিবিপি)। ৬০০ শয্যার ক্যাম্পে থাকবে ২৫ জন ডাক্তারের দল।
অন্য দিকে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের লক্ষণ নিয়ে ইতিমধ্যেই দিল্লির একটি হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি ছ’জনের উপরে নজর রাখা হচ্ছে। তাঁদের প্রত্যেকের রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। গত ১১ জানুয়ারি চিন থেকে ফিরেছিলেন ওড়িশার এক মেডিক্যাল পড়ুয়া। সর্দি-কাশির মতো প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যাওয়ায় তিনি নিজেই মুখ্য জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেম। কটকের এক হাসপাতলে ভর্তি রেখে নজরদারি চালানো হচ্ছে তাঁর উপরে। চিনে থাকা গুজরাতের
২১৫ জন পড়ুয়াকে উদ্ধারের জন্য বিদেশ মন্ত্রক ও চিনে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে সে রাজ্যের সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy