গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
ভারতের মতোই চিনা অ্যাপ টিকটক-সহ চিনা অ্যাপগুলি নিষিদ্ধ করার পথে হাঁটতে পারে আমেরিকা— এই ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু এ বার এমন হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যা নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। ট্রাম্প স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে টিকটক বিক্রি করুন, নয়তো নিষিদ্ধ করে দেওয়া হবে। কিন্তু তার সঙ্গেই বলেছেন, বিক্রির যে চুক্তি হবে, তার একটা বড় অংশ জমা দিতে হবে মার্কিন কোষাগারে। আর এই নির্দেশ ঘিরেই বিতর্ক। অনেকেই বলছেন, এ তো রীতিমতো কাটমানি দাবি করা।
টিকটক-ইউ এস বিক্রি নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা মাইক্রোসফটের সঙ্গে বেশ কিছু দিন ধরেই কথাবার্তা চলছিল টিকটকের মূল সংস্থা চিনের ‘বাইটড্যান্স’-এর। তার মধ্যেই রবিবার মাইক্রোসফট কর্তা সত্য নাদেলার সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তার পরেই তাঁর হুমকি, ‘‘১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিক্রি করে দিতে হবে টিকটক। তার মধ্যে বিক্রির চুক্তি না হলে আমেরিকায় টিকটক বন্ধ করে দেওয়া হবে।’’
কিন্তু তার সঙ্গেই ট্রাম্প বলেছেন, বিক্রির একটা বড় শতাংশ আমেরিকার পাওয়া উচিত, কারণ আমরাই এটা সম্ভব করছি।’’ তার সঙ্গে আরও বলেন, ‘‘এটা আসবে বিক্রির টাকা থেকে, যেটা কেউ জানে না, শুধু আমি জানি। আমি এ ভাবেই ভাবি এবং এর মধ্যে কোনও বেআইনি বিষয় নেই।’’
চিন সরকারকে তথ্য সরবরাহ করার অভিযোগ তুলে এবং আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক উল্লেখ করে শুধু টিকটক নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় সমস্ত চিনা অ্যাপ বন্ধ করার হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছিল হোয়াইট হাউস। তার পর থেকেই চাপে রয়েছে টিকটক। সেই সূত্রেই মাইক্রোসফটের সঙ্গে কথাবার্তাও চালিয়ে যাচ্ছিলেন বাইটড্যান্স কর্তৃপক্ষ। তার পর একে তো দেড় মাসের সময় বেঁধে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, তার সঙ্গে আবার বিক্রির চুক্তির টাকা দাবি করায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ চিনা সংস্থা।
আরও পড়ুন: এইচ-১বি ভিসা নির্দেশে সই ট্রাম্পের, সমস্যায় পড়বেন ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীরা
ক্ষোভ উগরে দিয়েছে বেজিংও। ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরের দিনই চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েবিন তীব্র আক্রমণ করে বলেছেন, ‘‘জাতীয় নিরাপত্তার ভ্রান্ত ধারণার কথা বলছে আমেরিকা। কোনও তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই অপরাধের অনুমান করছে এবং সেই অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে (চিনা) হুমকি দিচ্ছে।’’ ওয়েবিন আরও বলেন, ‘‘এটা বাজার অর্থনীতির পরিপন্থী এবং স্বাধীন ও স্বচ্ছতার ধ্বজাধারী আমেরিকার ভণ্ডামি ও দ্বিচারিতার নমুনা।’’ চিনের সরকারি সংবাদপত্রেও ট্রাম্পের এই বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিনা তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাকে এ ভাবে ‘চুরি’ করে নেওয়া মেনে নেবে না। পাশাপাশি চিনেরও পাল্টা জবাব দেওয়ার অনেক পন্থা রয়েছে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
আরও পড়ুন: সুশান্তের মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ বিহার সরকারের
আমেরিকার সংশ্লিষ্ট মহলের বিশেষজ্ঞদের একাংশও বলছেন, কোনও বেসরকারি বাণিজ্য চুক্তিতে এ ভাবে সরকারের অর্থ দাবি করা অনৈতিক। আমেরিকায় কোম্পানি বিষয়ক বিশিষ্ট আইনজীবী নিকোলাস ক্লেইন বলেন, ‘‘দু’টি বেসরকারি সংস্থার মধ্যে কোনও চুক্তিতে এ ভাবে অর্থ দাবি করার কোনও অধিকার নেই সরকারের।’’
যদিও ট্রাম্প-নাদেলা টেলি-কথোপকথনের পরেও মাইক্রোসফটের তরফে রবিবার একটি বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, টিকটকের সঙ্গে সম্ভাব্য চুক্তির বিষয়ে কথাবার্তা চালিয়ে যাবে সংস্থা। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মাইক্রোসফট কর্তার কী কথোপকথন হয়েছে, তা নিয়ে কিছু জানানো হয়নি ওই বিবৃতিতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy