বরফ গলে মিশছে সমুদ্রে। ছবি উপগ্রহ চিত্র।
নদীর মতো একেবেঁকে বয়ে চলেছে জলের স্রোত। সেই জলের স্রোতের কিছু অংশ সাদা। তার পর তা আস্তে আস্তে আস্তে তা নীল হয়ে গিয়েছে। কোপার্নিকাস উপগ্রহের তোলা এই ছবি দেখলে মনে হবে নির্ভেজাল কোনও প্রকৃতিক দৃশ্য। নদীর খাঁড়ি অঞ্চল। পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, আসলে ছবির মধ্যে লুকিয়ে আছে ‘ভবিষ্যতের আতঙ্ক’।
এই ছবি উত্তর গ্রিনল্যান্ডের। অতিরিক্ত উত্তাপে টন টন বরফ গলে যাওয়ার ছবি। যে দুধ সাদা বরফ এসে মিশছে নীল সমুদ্রে। তথ্য বলছে, চলতি মাসে প্রবল উত্তাপের জেরে ৬০০ কোটি টন বরফ গলেছে গ্রিনল্যান্ডে, যা কি না আমেরিকার পশ্চিম ভার্জিনিয়া শহরকে এক ফুট জলের নীচে ডুবিয়ে দিতে পারে।
পরিবেশবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গত ১৫ থেকে ১৭ জুলাইয়ে মধ্যে তীব্র উত্তাপে গ্রিনল্যান্ডে বরফের চাদর গলতে শুরু করে ব্যাপক হারে। এর ফলে কয়েক কোটি গ্যালন মিষ্টি জল মিশেছে সমুদ্রে।
চলতি মাসে আন্টার্কটিকা অঞ্চলে তাপমাত্রা ছিল ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা নজিরবিহীন বলেই জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ, গ্রীষ্মকালেও ওই অঞ্চলের তামমাত্রা হিমাঙ্কের নীচেই থাকে। বড়জোর তা শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস হতে পারে। কিন্তু, সেই সব হিসাবকে ছাপিয়ে গিয়েছে চলতি মাসের তাপমাত্রা। আর তার জেরেই ব্যাপক হারে বরফ গলে মিশছে সমুদ্রের জলে।
কেন বেড়েছে উত্তাপ? তার কারণ হিসাবে বিজ্ঞানী ও পরিবেশবিদেরা আঙুল তুলেছেন বিশ্ব উষ্ণায়নের দিকে। নাসার সতর্কবার্তা, যে হারে বরফ গলছে তাতে এক দিন যদি গ্রিনল্যান্ডের সব বরফ গলে যায়, তবে পৃথিবীর মহাসাগরগুলোর জলস্তরের উচ্চতা ২৩ ফুট বেড়ে যাবে।
কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ট্রেড স্ক্যাম্বোসের মতে, ‘‘গত সপ্তাহে গ্রিনল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে যে হারে বরফ গলেছে তা স্বাভাবিক নয়। গত ৩০ থেকে ৪০ বছরের জলবায়ুর গড় দেখে সে রকমই মনে হয়।’’ কোপার্নিকাস উপগ্রহের তোলা ছবিতে আসলে রয়েছে ‘অশনিসঙ্কেত’— তেমনটাই মনে করছেন ট্রেড।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy