Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

নাৎসি নাকি! সৈকতের সুভাষ-পোশাকে বিতর্ক

ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য আলেকজ়ান্দ্রিয়া ওকাসিয়ো-কোর্তেজ়ের চিফ অব স্টাফ সৈকত চক্রবর্তী। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক সৈকত ২০১৫ থেকে সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত।

সেই টি-শার্ট পরে সৈকত চক্রবর্তী।

সেই টি-শার্ট পরে সৈকত চক্রবর্তী।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৯ ০৩:৩১
Share: Save:

বাঙালি ছেলের টি-শার্টে আর এক বাঙালির ছবি। তা-ই নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠল ক্যাপিটল হিলের অলিন্দে।

ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য আলেকজ়ান্দ্রিয়া ওকাসিয়ো-কোর্তেজ়ের চিফ অব স্টাফ সৈকত চক্রবর্তী। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক সৈকত ২০১৫ থেকে সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত। আমেরিকার মধ্যবর্তী নির্বাচনে আলেকজ়ান্দ্রিয়ার উত্থানের অন্যতম কারিগর তিনি। নভেম্বরে সেনেটর নির্বাচিত হওয়ার পরে আলেকজ়ান্দ্রিয়া সৈকতকেই চিফ অব স্টাফ হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন।

এই সৈকতেরই গত ডিসেম্বরের একটি ভিডিয়ো থেকে বিতর্কের জন্ম। ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, একটা জলপাই-সবুজ টি-শার্ট পরে রয়েছেন সৈকত। টি-শার্টে আঁকা সুভাষচন্দ্র বসুর মুখ। সেই ছবি ব্যবহার করে ‘জুইশ টেলিগ্রাফিক এজেন্সি’ নামে একটি মার্কিন সংবাদমাধ্যম সম্প্রতি একটি খবর প্রকাশ করেছে। শিরোনাম— ‘হিটলারের সহযোগী, সুভাষচন্দ্র বসুর ছবি দেওয়া টি-শার্ট পরেছিলেন আলেক‌জ়ান্দ্রিয়ার চিফ অব স্টাফ।’’ সেই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরেই বন্দুক বাগিয়েছেন রিপাবলিকানরা। তাঁরা বলছেন, ‘আলেকজ়ান্দ্রিয়া যে ইহুদি-বিদ্বেষী, সেটা তাঁর চিফ অব স্টাফের পোশাক থেকেই স্পষ্ট’!

সুভাষচন্দ্র সম্পর্কে কী বলা হয়েছিল মার্কিন সংবাদ সংস্থার খবরে? ‘জুইশ এজেন্সি’র দাবি, ‘‘কয়েক হাজার ভারতীয়কে নিয়ে সেনাবাহিনী গঠন করেছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। এই সেনাবাহিনী হিটলারের বাহিনীর অংশ ছিল। ভারতীয়দের স্বাধীনতা সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করতে যে সব রেডিয়ো-বার্তা সম্প্রচার করতেন সুভাষচন্দ্র, সেখানে অনেক সময়ে হিটলারের সম্পর্কে অনেক প্রশংসাসূচক কথাবার্তাও থাকত। ১৯৪২ সালে হিটলারের সঙ্গে জার্মানিতে সুভাষচন্দ্রের দেখা হয়।’’ সৈকতকে ক্ষমা চাইতে হবে, এই দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে আমেরিকার বিভিন্ন ইহুদি সংগঠন। র‌্যাবাই আব্রাহাম কুপারের কথায়, ‘‘ভারতে সুভাষচন্দ্র বসু এক জন জনপ্রিয় জননায়ক হতেই পারেন। কিন্তু হিটলারের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চালিয়ে নিয়ে যেতে জার্মানিকে সাহায্য করেছিলেন, এমন কারও ছবি দেওয়া জামা পরে ঘুরে বেড়ানোর আগে নিজেরই লজ্জা পাওয়া উচিত।’’ র‌্যাবাই কুপারের দাবি, ‘‘সৈকতকে এখনই ইহুদিদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। না হলে আলেকজ়ান্দ্রিয়ার উচিত, তাঁকে চিফ অব স্টাফের পদ থেকে বরখাস্ত করা।’’

আমেরিকায় বসবাসকারী ভারতীয়রা অবশ্য এই বিতর্কে ইন্ধন জোগাতে নারাজ। শশী তারুরের ছেলে, সাংবাদিক ঈশান তারুরের মতে, ‘‘সুভাষচন্দ্র বসু অবশ্যই এক জন বিতর্কিত চরিত্র। কিন্তু তাঁকে ‘নাৎসি মদতদাতা’ বলাটা সেই সময়ের ইতিহাসকেই অপমান করা।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE