মস্কো দখল করে পুতিনকে (বাঁ দিকে) সরাতে অভিযান প্রিগেঝিন (ডান দিকে) ওয়াগনার বাহিনীর। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বিদ্রোহ নয়, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকার এবং তাঁর সেনার আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে পথে নেমেছিল ওয়াগনার বাহিনী। পুতিনের চাপের মুখে ‘রণে ভঙ্গ দেওয়ার’ ২৪ ঘণ্টা পরে সোমবার এক অডিয়ো বার্তায় এই দাবি করেছেন বাহিনীর প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোঝিন। তিনি বলেন, ‘‘রুশ ভাই-বোনেদের রক্ত ঝরার আশঙ্কা এড়াতেই আমরা মস্কোর রাজপথে প্রতিবাদের সিদ্ধান্ত বাতিল করেছিলাম।’’ তবে রুশ সেনা বা তাদের সহযোগীরা আক্রমণ করে ওয়াগনার যোদ্ধাদের প্রত্যাঘাত করতে অডিয়ো বার্তায় নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
শনিবার পুতিন জাতির উদ্দেশে ভাষণে তাঁর একদা ঘনিষ্ঠ হোটেল ব্যবসায়ী প্রিগোঝিনকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে চিহ্নিত করে গ্রেফতারির নির্দেশ জারি করেছিলেন। তার পরেই গোপনে রাশিয়া ছেড়ে প্রিগোঝিন বেলারুশে পাড়ি দিয়েছেন বলে পশ্চিমী সংবাদমাধ্যমের একাংশের খবর। পুতিনের ‘বার্তা’ পেয়ে তাঁর ঘনিষ্ঠ বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজ়ন্ডার লুকাশেঙ্কো আশ্রয় দিয়েছেন প্রিগোঝিনকে। তাঁর ওয়াগনার যোদ্ধারা রবিবারই ‘বিদ্রোহে’ ইতি টানার কথা ঘোষণা করেছিলেন। ইতিমধ্যেই ইউক্রেনের বিভিন্ন ‘ফ্রন্টে’ তাঁরা রুশ সেনার সহযোগী হয়ে লড়াইয়ে ফিরতে শুরু করেছে বলে প্রকাশিত বিভিন্ন খবরে জানানো হয়েছে।
প্রিগোঝিনের ওই ভাড়াটে বাহিনী রুশ সেনার অংশ নয়। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে ধারাবাহিক ভাবে তারা রুশ বাহিনীর সহযোগী হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। অতীতে লিবিয়া, সিরিয়া, মোজাম্বিক, সুদানের মতো দেশে গৃহযুদ্ধেও লড়েছে প্রায় ৪০ হাজার যোদ্ধার এই পেশাদার ভাড়াটে বাহিনী। ইউক্রেন যুদ্ধের কৌশল নির্ধারণ নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং সেনাপ্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভের সঙ্গে মতবিরোধ চলছিল প্রিগোঝিনের। রুশ সেনা পরিকল্পিত ভাবে ওয়াগনার যোদ্ধাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে সরাসরি মস্কোর বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে ধরেছিলেন প্রিগোঝিনের ভাড়াটে যোদ্ধারা। ইউক্রেনের সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডে বড় অভিযান শুরু করে বিদ্রোহী ওয়াগনার বাহিনীর কয়েক হাজার যোদ্ধা।
গত শুক্রবার ইউক্রেন সীমান্ত লাগোয়া রোস্তভ-অন-ডন শহরের দখল নেওয়ার পর শনিবার সকালে ইউক্রেন সীমান্তের অদূরে পশ্চিম রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শহর ভোরোনেজ় কব্জা করে বিদ্রোহী ভাড়াটে বাহিনী। ওই এলাকা থেকে মস্কোর দূরত্ব প্রায় হাজার কিলোমিটার। এর পর মস্কোর দিকে আরও কয়েকশো কিলোমিটার এগিয়ে লিপেৎস্কেতে ঢুকে পড়ে তারা। এর পরেই দ্রুত সক্রিয় হয় পুতিন সরকার। আকাশপথে ওয়াগনার যোদ্ধাদের উপর হামলা চালানোর পাশাপাশি ইউক্রেনে থাকা প্রিগোঝিনের বাহিনীর বিরুদ্ধে নামানো হয় নৃশংস চেচেন কমান্ডার রমজান কাদিরভের মিলিশিয়া বাহিনীকে। পাশাপাশি, লুকাশেঙ্কোকে ফোন করে তাঁর ঘনিষ্ঠ প্রিগোঝিনকে নিরস্ত করার বার্তা পাঠান পুতিন। আর তাতে ফল মেলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy