গোয়েন্দাদের দাবি, বাইডেনকে কালিমালিপ্ত করে আমেরিকার জনমানসে তাঁর ভাবমূর্তি খাটো করার চেষ্টায় ছিল রুশ সরকার। ছবি: সংগৃহীত।
২০১৬ সালের পর ২০২০। ফের আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কলকাঠি নাড়ানোর অভিযোগ উঠল রাশিয়ার বিরুদ্ধে। ২০১৬ সালে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনকে হারানোর চেষ্টা করেছিল বলে রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিন সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল। ফের একই অভিযোগে বিদ্ধ হলেন পুতিন। আমেরিকার গোয়েন্দাদের দাবি, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করে জো বাইডেনকে পরাস্ত করতে চেয়েছিলেন পুতিন ও তাঁর আধিকারিকেরা। মঙ্গলবার একটি রিপোর্টে এমনটাই দাবি করেছেন আমেরিকার গোয়েন্দারা। তবে এই বিষয়ে জো বাইডেন সরকারের তরফে মুখ খোলা হয়নি। এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত মুখে কুলুপ রাশিয়ারও।
মঙ্গলবার আমেরিকার ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স কাউন্সিল-এর একটি রিপোর্টে গোয়েন্দাদের দাবি, ডোনাল্ড ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠদের দিয়ে গত বছরের নির্বাচনের আগে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের ছেলের উপর দুর্নীতির কালি ছেটানোর চেষ্টা করেছিল রাশিয়া, যাতে বাইডেনকে কলঙ্কিত করা যায়। গোটা বিষয়ে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পেরও সমর্থন ছিল বলেও দাবি গোয়েন্দাদের। যদিও গোয়েন্দাদের মতে, “২০১৬ সালের নির্বাচনের মতো (২০২০-র) নির্বাচনী পরিকাঠামো ভেদ করার ক্ষেত্রে রাশিয়ার সাইবার জগতের জোরালো ভূমিকা ছিল না বলেই মনে করা হচ্ছে।”
ওই রিপোর্টে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, বাইডেনের ছেলে হান্টার বাইডেনের উপর তাঁর ইউক্রেনের ব্যবসায়িক সংযোগ নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক অভিযোগ আনার চেষ্টা করেছিলেন পুতিন এবং তাঁর সহযোগীরা। ওই অভিযোগ অসমর্থিত হলেও তাতে বাইডেনকে জড়িয়ে আমেরিকার জনমানসে তাঁর ভাবমূর্তি খাটো করার চেষ্টায় ছিল রুশ সরকার। এবং এতে ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠদেরও সমর্থন ছিল বলে দাবি। রিপোর্টে লেখা হয়েছে, ‘আমাদের মতে, ২০২০ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পুতিন তথা রাশিয়ার সরকার এই অপারেশনে অনুমোদন দিয়ে তা পরিচালনা করেছিলেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেন এবং ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে কলঙ্কিত করা, ট্রাম্পকে সমর্থন যোগানো-সহ আম জনতার উপর নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে বিশ্বাস টলিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি আমেরিকায় আর্থসামাজিক বিভাজন করাই এর উদ্দেশ্য ছিল’।
ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ কোন কোন ব্যক্তি রাশিয়ার এই প্রচেষ্টার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তা খোলসা না করলেও গোয়েন্দাদের নজরে উঠে এসেছে ট্রাম্পের ব্যক্তিগত অ্যাটর্নি রুডি জিউলিয়ানির নাম। সেই সঙ্গে আমেরিকার নাগরিক নন, এমন কয়েক জনের নামও উঠে এসেছে ওই রিপোর্টে। গোয়েন্দাদের দাবি, তাঁদের মধ্যে এক জন হলেন অ্যান্দ্রি ডেকরাখ নামে ইউক্রেনের আইনসভার এক সদস্য। রাশিয়ার আধিকারিক তথা সে দেশের গোয়েন্দাদের সঙ্গে ডেকরাখের ভালই যোগাযোগ ছিল বলেও দাবি আমেরিকার গোয়েন্দাদের। সেই সঙ্গে কনস্তানতিন কিলিমনিক নামে রাশিয়ার এক প্রভাবশালী এজেন্টও এতে জড়িত বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
আমেরিকার গোয়েন্দাদের মতে, রুডির সঙ্গে রাশিয়ার এজেন্টদের যোগাযোগ ছিল। এবং নির্বাচনের আগে বাইডেনের ছেলে হান্টারকে ইউক্রেনে তাঁর এক ব্যবসায়িক সংস্থার মাধ্যমে কেলেঙ্কারিতে ফাঁসাতে চেষ্টা করেছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই ওই প্রচেষ্টায় রুডি সফল হলে তা ডেমোক্র্যাট তথা বাইডেনের জয়ের পথে বাধা তৈরি করত বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy