নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন এই ছবিটি প্রকাশ করেছে।
চোখের নীচে একটা ফোলাভাব ক’দিন ধরেই লক্ষ্য করছিলেন রাশিয়ার বাসিন্দা এক মহিলা। ভয়ানক ঘটনাটা ঘটল তারও সপ্তাহ দু’য়েক পরে। ফোলা অংশটা থেকে জ্যান্ত কিছু একটা বেরিয়ে ক্রমশ মুখ জুড়ে ঘোরাফেরা শুরু করে দিল। ত্বকের ভিতর দিয়েই। সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসকের কাছে ছুটলেন ৩২ বছরের ওই মহিলা। চিকিৎসকেরা জানান, এটা এক ধরনের গোলকৃমি। মশার কামড় থেকে যার লার্ভা ওই মহিলার দেহে প্রবেশ করেছিল!
বৃহস্পতিবার নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন-এ এই ঘটনার কেস রিপোর্ট ছবি-সহ প্রকাশিত হয়। তার পরই এই ভয়ঙ্কর ঘটনার কথা সামনে আসে। নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন সূত্রে খবর, আক্রান্ত মহিলার অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তিনি এখন সুস্থ আছেন। তবে মানসিকভাবে এই ঘটনার ভয়াবহতা কাটিয়ে উঠতে তাঁর এখনও কিছুটা সময় লাগবে।
ঠিক কী হয়েছিল?
জার্নালে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এই কৃমি আসলে একটা পরজীবী। যার বিজ্ঞানসম্মত নাম ডাইরোফাইলারিয়া রিপেনস। সাধারণত মশার কামড় থেকেই এই পরজীবী অন্য প্রাণীর শরীরে প্রবেশ করে। আক্রান্ত মহিলা কর্মসূত্রে মস্কো থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে একটি গ্রাম্য অঞ্চলে গিয়েছিলেন। সেখানে প্রচুর মশার কামড় খেতে হয়েছে তাঁকে। সেখান থেকে ফিরে আসার কয়েক দিন পর থেকেই তিনি চোখের নীচে ওই ফোলা ভাব লক্ষ্য করেন। ফোলা অংশের পাশাপাশি ত্বকে জ্বালাভাবও ছিল। তারও দু’সপ্তাহ পরে দেখেন, মুখ জুড়ে ত্বকের ভিতরেই জীবন্ত কিছু একটা ঘোরাফেরা করছে। সঙ্গে প্রচণ্ড যন্ত্রণা এবং মুখ ফুলে যাওয়া।
আরও পড়ুন: মাধ্যমিকে ভাল ফল করায় স্মার্টফোন, ছাত্রীর আত্মহত্যার কারণ হল সেটাই
এর থেকে কী ভাবে আক্রান্ত হয় মানুষ?
আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের তথ্য অনুযায়ী, ডাইফাইলোরিয়া প্যারাসাইট প্রাইমারি হোস্ট মশা। আর সেকেন্ডারি হোস্ট কুকুর, বিড়ালের মতো মাংসাশী প্রাণী। মশার কামড়ে লার্ভা সেকেন্ডারি হোস্টের দেহে প্রবেশের পর তা পরিণত হয় এবং বংশবিস্তার করে অসংখ্য মাইক্রোফাইলেরিয়ার জন্ম দেয়। মশা যখন প্রাণীর রক্ত খায়, সেই সময় মাইক্রোফাইলেরিয়াগুলো পুনরায় মশার দেহে প্রবেশ করে এবং আক্রান্ত মশা প্রাণীকে কামড়ানোর সঙ্গে মাইক্রোফাইলেরিয়াগুলো তাদের দেহে প্রবেশ করে এবং সঙ্গে সঙ্গে ওই কৃমির ফের নতুন করে আরও একটি জীবনচক্র শুরু হয়।
আরও পড়ুন: রেস্তরাঁ থেকে বের করে দেওয়া হল হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিবকে!
তবে জীবনচক্র সম্পূর্ণ হতে সেকেন্ডারি হোস্ট হিসাবে কুকুর, বিড়ালের মতো মাংসাশী প্রাণীর প্রয়োজন। মানুষ কিন্তু এর সেকেন্ডারি হোস্ট নয়। তাই মানুষ আক্রান্ত হলেও মানুষের দেহে লার্ভা বেড়ে উঠে প্রাপ্ত বয়স্ক হতে পারে না। তবে দেহের এই পরজীবীর উপস্থিতির জন্য নানা রকম লক্ষণ দেখা যায়। যা ওই মহিলার সঙ্গে ঘটেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy