বিক্ষোভের আগুনে পুড়ছে লস এঞ্জেলস। ছবি-টুইটারের সৌজন্যে।
মিনিয়াপোলিসে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ যুবক খুনের ঘটনায় উত্তাল আমেরিকা। বিক্ষোভ, অগ্নিসংযোগের একের পর এক ঘটনা ঘটে চলেছে মিনিয়াপোলিস, লস এঞ্জেলস, শিকাগো, আটলান্টা-সহ আমেরিকার বিভিন্ন শহরে। মিনিয়াপোলিসে টানা পাঁচ রাতের হিংসা রুখতে পুলিশকে শনিবার কাঁদানে গ্যাস ও গ্রেনেড ছুড়তে হয়েছে বিক্ষোভকারীদের দিকে। লস এঞ্জেলস, শিকাগো-সহ আমেরিকার ১৩টি শহরে রাতের কার্ফু জারি হয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে বহু শহরে তলব করা হয়েছে জাতীয় নিরাপত্তারক্ষী।
পুলিশের হেফাজতে জর্জ ফ্লয়েড নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে সিয়াটেল থেকে নিউ ইয়র্ক পর্যন্ত লক্ষ লক্ষ বিক্ষোভকারী নেমে পড়েছেন পথে। পুলিশের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের ও গ্রেফতারের দাবি উঠেছে।
শনিবার লস এঞ্জলসে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। পুলিশও বিক্ষোভকারীদের উপর বেধড়ক লাঠি চালায়। পরে রবার বুলেটও ছোড়ে পুলিশ। ফিলাডেলফিয়ায় দোকান ভাঙচুর করেন বিক্ষোভকারীরা। শিকাগো ও নিউ ইয়র্কে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাথর ও লঙ্কার গুঁড়ো ছোড়েন বিক্ষোভকারীরা।
গত কাল নিউ ইয়র্কের বার্কলেস সেন্টারে কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যেও ঢুকে পড়ে বিক্ষুব্ধ জনতা। পুলিশি অত্যাচার নিয়ে সশস্ত্র পুলিশের সঙ্গেই উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের। ঘটনাস্থল নিউ ইয়র্ক। কোথাও আবার প্রতিবাদী মিছিলে একাকার হয়ে দেল হিপ-হপও। ব্রুকলিনে রাস্তায় দেখা গেল, সার দিয়ে দাঁড় করানো বাসে ধৃত কয়েকশো বিক্ষোভকারীকে পর-পর তুলছে পুলিশ।
আরও পড়ুন- হংকং ইস্যু নিরাপত্তা পরিষদে তুলল আমেরিকা, ব্রিটেন
আরও পড়ুন- বার বার বেফাঁস বলে দিল্লির অস্বস্তি বাড়ান ট্রাম্প
‘আমার দম আটকে আসছে’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভকারীদের দেখা যায় করোনায় লকডাউন হোয়াইট হাউসের বাইরেও। কার্ফু ভেঙেই নিউ ইয়র্ক, আটলান্টা, লাস ভেগাসের রাস্তায় রাস্তায় চলল দেদার ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ঘটনা। নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সমবেদনা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ‘থার্ড ডিগ্রি’ খুনের মামলা দায়েরও হয়েছে। করোনা-বিধি শিকেয় তুলে বিক্ষোভ তবু চলছেই।
‘আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে, আর পারছি না। মরে যাচ্ছি আমি’— সোমবার ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে এ ভাবেই কাতরাতে দেখা গিয়েছিল জালিয়াতির দায়ে ধৃত বছর ছেচল্লিশের কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডকে। তাঁর গলায় হাঁটু দিয়ে চেপে রাখা শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার ডেরেক শভিনের আক্রোশ তবু মেটেনি। প্রায় মিনিট পাঁচেক পরে শ্বাসরোধ হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ যায় জর্জের। মোবাইল ফুটেজ সামনে আসার পর-পরই ওই ঘটনায় জড়িত চার পুলিশকে বরখাস্ত করা হয়। তবু প্রতিবাদের আগুন নেভেনি।
একাংশের অভিযোগ, পরিস্থিতি আজ এতখানি অগ্নিগর্ভ প্রেসিডেন্টের কারণেই। কার্যত জনতাকে দুষেই ট্রাম্পকে সম্প্রতি বলতে শোনা যায়, ‘লুটপাট চললে শুটিং তো হবেই’! ‘হিংসাকে প্রশ্রয়’ দেওয়ার অভিযোগে শুক্রবারই ট্রাম্পের একটি টুইট হাইড করেছিল টুইটার। শনিবার অবশ্য পরিস্থিতি আঁচ করে খানিকটা সুর নরম করেই প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘নিহত কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের পরিবারের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। ওঁরা সবাই খুব ভাল মানুষ।’’ তবে এ নিয়ে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের নামে লাগাতার চলতে থাকা বিশৃঙ্খলা যে তিনি সহ্য করবেন না, তা-ও জানান ট্রাম্প। বর্ণবিদ্বেষী পুলিশের অত্যাচার নিয়ে সরব হলেও আটলান্টা-সহ গোটা দেশের প্রতিবাদীদের অহিংস পথে থাকারই আর্জি জানিয়েছেন প্রবাদপ্রতিম মানবাধিকারকর্মী মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের কনিষ্ঠ কন্যা বার্নিস কিং। আটলান্টাতেই বেশ কিছু গাড়িতে আগুন ধরিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। যার মধ্যে অন্তত একটি গাড়ি পুলিশের বলে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy