রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ।
ওঁরা সকলেই নব্বই পেরিয়েছেন। ঠিক যেমন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ নিজে। ব্রিটেনের হয়ে, মুক্ত দুনিয়ার হয়ে ওঁদের ধন্যবাদ দিলেন রানি।
ওঁরা এসেছিলেন আজ পোর্টসমথে। ওঁরা প্রায় তিনশো জন। নবতিপর এই প্রাক্তন সেনারাই এক দিন ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে নেমেছিলেন ফ্রান্সের নর্মান্ডি উপকূলে। দিনটা ছিল ১৯৪৪ সালের ৬ জুন। ‘ডি-ডে’ নামে খ্যাত যে দিনে ব্রিটেন, আমেরিকা, কানাডা আর ফ্রান্সের ‘মিত্রশক্তি’-র অতর্কিত আক্রমণ আঁচই করতে পারেনি হিটলারের বাহিনী। ক্রমশ ফ্রান্স তথা ইউরোপে কর্তৃত্ব হারায় নাৎসিরা।
নর্মান্ডি অভিযানে অনেকগুলো জাহাজ ভেসেছিল ইংল্যান্ডের পোর্টসমথ বন্দর থেকে। আজ সেখানেই ‘ডি-ডে’-র ৭৫ বছর পূর্তি উদ্যাপন। যে অনুষ্ঠানে প্রবীণ যোদ্ধাদের সঙ্গে রইলেন রানি স্বয়ং। সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ, জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। আর ছিল গান, কবিতা, পাঠ, আকাশ চিরে যুদ্ধবিমানের উড়ে যাওয়া।
৯৩ বছরের রানি বলছিলেন, ‘‘এই দিনটার ৬০তম বর্ষ উদ্যাপনে এসেছিলাম। তখন ভেবেছিলাম এ রকম অনুষ্ঠানে হয়তো এই শেষ আসা। কিন্তু যুদ্ধের প্রজন্ম, আমার প্রজন্ম অনেক শক্তসমর্থ। আপনাদের সঙ্গে আজ থাকতে পেরে আমি আপ্লুত।’’ যুদ্ধের সময়ে জাতির উদ্দেশে বক্তৃতায় তাঁর বাবা, রাজা ষষ্ঠ জর্জ বলেছিলেন, ‘‘সময়টা হল সাহসের, সহ্যশক্তির।’’ দ্বিতীয় এলিজাবেথ বললেন, ‘‘ঠিক এই ভাবেই লড়েছিলেন মানুষগুলো। ওঁদের উপরে নির্ভর করছিল বিশ্বের ভবিষ্যৎ। অনেকেই আর ফেরেননি। ওঁদের আত্মত্যাগ কেউ ভুলবে না।’’
মঞ্চে পাঠ করা হল এক সেনার স্মৃতিকথা। মন্ত্রমুগ্ধ জনতা শুনল, প্রতিকূল আবহাওয়া, সমুদ্রসফর-জনিত অসুস্থতা আর আক্রমণের আশঙ্কা নিয়েই কী ভাবে ভেসেছিলেন ওঁরা। ডি-ডে-র অন্যতম সেনানী জন জেনকিন্স এখন ৯৯। প্রবল হর্ষধ্বনির স্বাগতবার্তার পরে বললেন, ‘‘তটস্থ ছিলাম। দিনটা ভুলব না।’’
ট্রাম্প পাঠ করলেন একটা পুরনো বক্তৃতা। ‘‘হে সর্বশক্তিমান, আমাদের ছেলেরা যুদ্ধে গেল। এ লড়াই আমাদের প্রজাতন্ত্র, ধর্ম, সভ্যতা, মানবজাতিকে রক্ষার। হয়তো পাল্টা আঘাত আসবে। কিন্তু আমরা ঘুরে দাঁড়াবই। আমাদের সন্তানেরা জয়ী হবেই।’’ নর্মান্ডি অভিযানের সময়ে বেতারে এই ‘প্রার্থনা’ তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাঙ্কলিন রুজ়ভেল্টের। টেরেসা পড়লেন স্ত্রীকে ব্রিটিশ ক্যাপ্টেন এন ডব্লিউ জি স্কিনারের লেখা চিঠি। স্কিনার আর ফেরেননি। ১৬ বছর বয়সে খুন হওয়া এক ফরাসি যোদ্ধার মাকে লেখা চিঠি পড়লেন প্রেসিডেন্ট মাকরঁ।
কাল মাকরঁর দেশে, নর্মান্ডিতেই অনুষ্ঠান। থাকবেন ট্রাম্পও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy