জেনিভায় রাষ্ট্রপুঞ্জের দফতরের সামনে সিএএ-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
যাকে বলে ত্র্যহস্পর্শযোগ। জেনিভায় শনিবারের তাপমাত্রা ছিল বড়জোর তিন-চার ডিগ্রি। এর সঙ্গে বৃষ্টি আর প্রবল ঠান্ডা হাওয়া। গোটা ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা প্রতিবাদী ভারতীয়েরা তবু টেরই পাননি তিনটি ঘণ্টা কী করে পেরিয়ে গেল।
রাষ্ট্রপুঞ্জের দফতরের ঠিক সামনে ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) নিয়ে প্রতিবাদ-সভায় শামিল হয়েছিলেন গোটা ইউরোপের প্রবাসী ভারতীয়দের একাংশ। পরে ভিডিয়ো রেকর্ডিং দেখে হাসছিলেন হেলসিঙ্কির সঙ্গীতা শেষাদ্রি, জেনিভার সুচরিতা সেনগুপ্তেরা। অত ঠান্ডাতেও তো দিব্যি জোরে শোনা যাচ্ছিল, আজাদির স্লোগান, সংবিধানের প্রস্তাবনা পাঠ কিংবা জাতীয় সঙ্গীতের কোরাস!
ইউরোপে পাঠরত পড়ুয়ারা কেন প্রতিবাদে শামিল হবেন বলে প্রশ্ন তুলে মাসখানেক আগেই জার্মানির প্রবাসী ভারতীয়দের একটি ফেসবুক পেজে নালিশও করেছিলেন কেউ একজন। দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউনিয়নের নেত্রী ঐশী ঘোষের উপরে হামলা নিয়ে জার্মানির আখেন শহরের একটি প্রতিবাদ-সভা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার নানা কটাক্ষ নজরে আসছিল প্রতিবাদীদের। এর মধ্যে ফ্রাঙ্কফুর্টের কনসাল জেনারেলের তরফে একটি মন্তব্যে এই সব অভিযোগ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানোর আশ্বাসও দেওয়া হয়। যা অনেকেই পরোক্ষ হুমকি হিসেবে ধরেছিলেন। তা বলে জেনিভায় নির্দিষ্ট দিনের প্রতিবাদে
পিছু হটেননি কেউই। এই সভার অন্যতম আহ্বায়ক, কোলনে কর্মরত অলোকপর্ণা রায় বলছিলেন, ‘‘সব মিলিয়ে শ’দেড়েকের বেশি লোক হয়েছিল। অনেকেই দূর দূর থেকে জেনিভায় এসেছেন। একবেলা প্রতিবাদ সেরেই ফিরেও গিয়েছেন। ছাত্রদের পক্ষে এতটা খরচ করে আসাটাও বেশ ঝক্কির ছিল।’’
পোল্যান্ডের ক্র্যাকাও থেকে আসা সোশ্যাল সাইকলজির তামিলভাষী শিক্ষক সিন্ধুজা শঙ্করণ থেকে শুরু করে ইতালি, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, সুইডেন, ফ্রান্স, জার্মানির বিভিন্ন শহরের প্রতিবাদীরা কেউ উৎসাহে কম যান না। পদত্যাগী আইএএস কর্তা কান্নন গোপীনাথন, দলিত-সমাজকর্মী চন্দ্রশেখর আজাদ রাবণদের বার্তাও এসে মেশে জেনিভার প্রতিবাদে। ‘হম কাগজ নেহি দিখায়েঙ্গে’ বা ‘হম দেখেঙ্গে’র সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের ‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য’র বাংলা-ইংরেজি আবৃত্তিও হয়ে ওঠে প্রতিবাদের ভাষা। প্রতিবাদীদের দাবি, দেশে ও দেশের বাইরে বার্তা দিতে আরও প্রতিবাদ কর্মসূচিরও পরিকল্পনা করা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy