ব্রিটেনের রাজকুমার হ্যারি। —ফাইল চিত্র।
‘মিরর গ্রুপ অব নিউজ়পেপারস’ নামে একটি ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থার বিরুদ্ধে অনৈতিক ভাবে খবর করা, ফোনে আড়ি পাতার মামলা করেছিলেন ব্রিটেনের রাজকুমার হ্যারি। যদিও আজ মামলার প্রথম দিনের শুনানিতেই আদালতে উপস্থিত হলেন না তিনি। রাজকুমারের এ হেন আচরণে ক্ষুব্ধ বিচারপতি। হ্যারির আইনজীবী আদালতে জানিয়েছেন, মেয়ের দু’বছরের জন্মদিন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন রাজকুমার, তাই আদালতে আসতে পারেননি। তাঁর ব্যাখ্যা, রবিবার রাতে লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন হ্যারি, কিন্তু সোমবার দুপুরের মধ্যে কিছুতেই আদালতে পৌঁছতে পারতেন না তিনি।
এ ধরনের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয় কোর্ট। আদালতের তরফে আগে থেকেই বলা হয়েছিল, আজ দুপুর তিনটের মধ্যে কোর্টে উপস্থিত হতে হবে হ্যারিকে। শুরু হবে মামলার শুনানি। মঙ্গলবার হ্যারির কাছে থাকা প্রমাণ আদালতে জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু রাজকুমারের অনুপস্থিতিতে পুরো বিষয়টাই আর সে ভাবে এগোয়নি। বিচারপতি ফ্যানকোর্ট প্রকাশ্যে সরাসরি ক্ষোভ প্রকাশ না করলেও বলেছেন, ‘‘আমি একটু বিস্মিত হয়েছি।’’ মিরর গ্রুপের আইনজীবী অ্যান্ড্রু গ্রিন বলেন, ‘‘অসাধারণ বিষয়... ওঁর নিজের করা মামলার শুনানিতে উনি নিজেই থাকতে পারছেন না।’’
বেশ কয়েক জন সেলেব্রিটির পাশাপাশি হ্যারিও মিরর গ্রুপের বিরুদ্ধে অনৈতিক ভাবে খবর সংগ্রহের মামলা করেছিলেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছিল, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১১ সাল, এই সময়ে সংবাদ সংস্থাটি আইন ভেঙে রাজকুমারের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছিল। তাঁর ফোনে আড়ি পেতেছিল নিয়মিত ভাবে। এবং সে কথা সংস্থাটির সম্পাদক ও অন্য শীর্ষস্থানীয় আধিকারিকেরা সকলেই জানতেন।
অনৈতিক ভাবে সংগ্রহ করা খবরের ভিত্তিতে লেখা ১৪৭টি প্রবন্ধের বিষয়ে আদালতকে জানিয়েছেন হ্যারির আইনজীবী। ‘ডেলি মিরর’, ‘সানডে মিরর’ এবং ‘দ্য পিপল’-এ প্রকাশিত ৩৩টি নমুনা পরীক্ষা করে দেখবেন বিচারপতি। খবরগুলির বেশির ভাগই হ্যারির ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে। দাদা উইলিয়ামের সঙ্গে তাঁর প্রাক্তন প্রেমিকার ঝগড়া, হ্যারির পার্টি করা ইত্যাদি। মিররের একটি প্রবন্ধের বিষয় ছিল, ১৯৯৬ সালে হ্যারির ১২ বছরের জন্মদিনে তাঁর মা রাজকুমারী ডায়ানা মাত্র ২০ মিনিট সময় কাটিয়ে ছিলেন ছেলের সঙ্গে। ২০০০ সালের নভেম্বর মাসের একটি প্রবন্ধের বিষয় ছিল, ফুটবল খেলতে গিয়ে চোট লেগেছে হ্যারির। তার জন্য ছোট একটি অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে হাতে। তবে ‘কাঠগড়ায়’ ওঠা বেশির ভাগ প্রবন্ধের বিষয়ই হল, হ্যারির প্রেম, প্রাক্তন প্রেমিকা চেলসি ডেভির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক, বিতর্ক।
এই মামলার সূত্রে ব্রিটিশ রাজপরিবারের কোনও সদস্য প্রথম কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে সাক্ষ্য দেবেন। মামলা লড়তে মিরর গ্রুপ-ও তাবড় আইনজীবীদের নিয়োগ করেছে। অনেকেরই আশঙ্কা, রীতিমতো অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হতে পারে হ্যারিকে। কারণ অনেক বিতর্কিত বিষয়েই লেখা হয়েছিল মিরর-এ। যেমন একবার পার্টিতে নাৎসি পোশাক পরে গিয়েছিলেন হ্যারি, মাদক নেওয়ার কথা স্বীকার করেছিলেন নিজের মুখে। সে সব প্রসঙ্গ ফের উঠে আসবে। এই মামলা নিয়ে রাজপরিবারও কিছুটা আতঙ্কে। রাজপরিবারের সঙ্গে হ্যারির সম্পর্ক মোটেই সহজ নেই। কোন গোপন বিষয় সামনে চলে আসবে, তা নিয়ে চিন্তায় তারা। তবে অস্বস্তি এড়াতে আদালতের বাইরে মামলার নিষ্পত্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল হ্যারিকে। তিনি নিজেই কোর্টের রাস্তা বেছে নিয়েছেন। ফের মামলার সূত্রে ব্রিটিশ দৈনিকগুলোতে তাঁকে নিয়ে নিয়মিত খবর বেরোবে। ‘মুকুট’ খোয়ানো রাজকুমারের দেশের মানুষের ভালবাসা হারানোর আশঙ্কাও প্রবল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy