Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

সব দরজা উন্মুক্ত, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে প্যারিস

এখনও বাতাসে ভাসছে পোড়া বারুদের গন্ধ। রাজপথে ভীষণ টাটকা রক্তের দাগ। মোড়ে মোড়ে ওত পেতে বসে আছে চাপা আতঙ্ক। সন্ত্রাস প্রাণ কেড়েছে মানুষের। কিন্তু নৃশংসতার এই আবহও কাড়তে পারেনি মানবতা। প্রমাণ করল প্যারিস, প্রমাণ করল গোটা পৃথিবীটাই।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৫ ১৮:০১
Share: Save:

এখনও বাতাসে ভাসছে পোড়া বারুদের গন্ধ। রাজপথে ভীষণ টাটকা রক্তের দাগ। মোড়ে মোড়ে ওত পেতে বসে আছে চাপা আতঙ্ক। সন্ত্রাস প্রাণ কেড়েছে মানুষের। কিন্তু নৃশংসতার এই আবহও কাড়তে পারেনি মানবতা। প্রমাণ করল প্যারিস, প্রমাণ করল গোটা পৃথিবীটাই।

মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে শেষ হয়েছে হত্যালীলা। সরকারি আদেশে ফ্রান্সের রাজধানীতে জারি কারফিউ। এসেছে দ্রুত রাস্তা ফাঁকা করে দেওয়ার নির্দেশও। অসহায় মানুষ যখন আশ্রয়ের খোঁজে এদিক ওদিক পালিয়ে বেড়াচ্ছে, তখন এগিয়ে এল মানুষই। শহরের মানুষ নিজেদের বাড়ির দরজা খুলে দিলেন নিরাশ্রয় পথচারীদের জন্য। ব্যবহার করলেন সোশ্যাল মিডিয়ার। এই মুহূ্র্তে প্যারিসের বাসিন্দাদের ফেসবুক, টুইটার অ্যাকাউন্টে ঘুরে বেড়াচ্ছে একটা শব্দ। #পোর্তেওভার্তে। যার বাংলা করলে দাঁড়ায় ‘উন্মুক্ত দরজা’। হ্যাঁ, এই ভাবেই নিরাশ্রয়দের দিকে সাহায্যের হাত বাড়ালো নাগরিক জীবন, প্রতিশ্রুতি দিল নিরাপদ আশ্রয়ের। এ ভাবেই সন্ত্রাসকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিল মানুষই।

হামলার এক ঘণ্টার মধ্যে তৈরি হয়েছিল পোর্তেওভার্তে হ্যাশট্যাগটি। এই কয়েক ঘণ্টায় মধ্যে অন্তত ৪ লক্ষ টুইটে ব্যবহার হয়েছে এই হ্যাশট্যাগ। এই হ্যাশট্যাগের সঙ্গেই দেওয়া হচ্ছে ব্যক্তিগত ফোন নম্বর, অ্যাপার্টমেন্ট নম্বর। ‘দরকার পড়লে চলে এস, সঙ্কোচ কোরো না’- পোস্টে পোস্টে প্রকাশ্য আহ্বান। মাত্র কয়েকটা শব্দ। কিন্তু, এর ব্যপ্তি, গভীরতা, ভালবাসা এখন আকাশ ছুঁয়েছে।

প্যারিস যে সন্ত্রাসের কাছে হার মানছে না, তার ইঙ্গিত তো মিলেছিল আগেই। জঙ্গি হানায় কিছুক্ষণ আগেই কেঁপে উঠছে স্তাদে দ্য ফঁস স্টেডিয়াম। কয়েক মিনিট আগে যে মাঠ মেতেছিল ফুটবলের দ্রুত ছন্দে, গর্জন করছিল গ্যালারি, হঠাত্ সন্ত্রাসে সেখানে নেমে আসে স্তব্ধতা। আতঙ্ক গ্রাস করল উচ্ছ্বাসকে। কিন্তু কিছুক্ষণ মাত্র। ফের শুরু হল খেলা। হল শেষ পর্যন্ত। খেলার শেষে এক জন, এক জন করে গ্যালারি থেকে মাঠে নেমে আসতে শুরু করেন উপস্থিত দর্শকরা। এক জনের হাতের মুঠোয় তখন বন্দী পাশের জনের হাত। কাঁধে মিলল কাঁধ। এক সঙ্গে সবাই গেয়ে উঠলেন জাতীয় সঙ্গীত। যার প্রত্যয়ের কাছে তখন খানিক আগের বিস্ফোরণের ভয়ের শব্দ হারতে শুরু করেছে...

দু’দিন আগেই বেইরুটে সন্ত্রাসের বলি হয়েছেন ৪৩ জন। বাগদাদে ১৮। আজ প্যারিসে হত ১২৭ জন। কিন্তু, মানুষ খুন হলে কি জীবন থেমে যায়? যায় না বোধহয়। ভাবনা, সাহস, বেঁচেই থাকে। ২৬/১১ হামলার পরের দিনই জীবনের স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে এসে সেটাই প্রমাণ করেছিল মুম্বই। আজ আবার এই ভয়ানক হামলাকে দাঁতে দাঁত চেপে মোকাবিলা করে একই প্রমাণ দিল প্যারিস। আসলে মানুষ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy