কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডের স্মরণে মার্কিন কংগ্রেসের হাউস অব রিপ্রেজ়েন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ও ডেমোক্র্যাট সেনেটর চাক শুমার (বাঁ দিকে)। সোমবার ওয়াশিংটনে। রয়টার্স
নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডকে মাটিতে শুইয়ে ন’মিনিটেরও বেশি সময় ধরে তাঁর ঘাড়ের উপরে চাপিয়ে রেখেছিলেন নিজের হাঁটু। দমবন্ধ হয়ে মারা যান জর্জ। মিনিয়াপোলিসের পুলিশ বিভাগের সেই অফিসার ডেরেক শভিনের এই আচরণের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে গোটা আমেরিকা। বছরের পর বছর ধরে নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গদের উপরে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে রাস্তায় নেমেছে গোটা আমেরিকা। কাঠগড়ায় শুধু মিনিয়াপোলিস নয়, গোটা মার্কিন মুলুকের পুলিশ বিভাগ। জর্জের মৃত্যুর ঠিক তেরো দিনের মাথায় এ বার বড়সড় সিদ্ধান্ত নিল মিনিয়াপোলিসের সিটি কাউন্সিল। তারা গত কাল ঘোষণা করেছে, সংস্কার নয়। ভেঙে ফেলা হবে তাদের পুলিশ বিভাগ। নতুন আদর্শে, নতুন নীতিতে একেবারে নতুন করে সাজানো হবে এমন এক পুলিশ বিভাগ, যা শহরের সব রঙের মানুষকে সুরক্ষা দিতে পারে।
শহরের সিটি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট লিসা বেন্ডার সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “মিনিয়াপোলিসের পুলিশ বিভাগ ভেঙে ফেলতে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। জনসুরক্ষায় এমন মডেল আমরা আনতে চাই, যাতে সব সম্প্রদায় নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন।” বিনা ভিটোয় সব সিটি কাউন্সিলর ভোট দিয়ে এই সিদ্ধান্তে এসেছেন বলে টুইট করে জানিয়েছেন আর এক কাউন্সিল সদস্য আলোন্ড্রা ক্যানো।
এ দিকে, প্রতিবাদ থেমে নেই। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণও। সিঁদুরে মেঘ দেখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা আর্জি জানিেয়ছে, প্রতিবাদ হোক যাবতীয় সুরক্ষাবিধি মেনে। তবু কার্যত সব বিধি শিকেয় তুলেই শহরে শহরে এখনও বর্ণবৈষম্য আর পুলিশি অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে মার্কিন জনতা। তবে আঁচ কিছুটা হলেও কম। ওয়াশিংটনে শনিবার এমনই শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ দেখাচ্ছিল একটা দল। তাঁদের আটকাতে সামনের সারিতে যথারীতি সার দিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন পুলিশ ও মার্কিন সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যেরা। এক কৃষ্ণাঙ্গ সিক্রেট সার্ভিস সদস্যকে দেখে বিক্ষোভকারীরা তাঁকেও তাঁদের মতো হাঁটু মুড়ে প্রতিবাদ করতে বলেন। কিন্তু সেই কৃষ্ণাঙ্গ অফিসার জবাব দেন, “আমি তোমাদের এই কাজের প্রশংসা করি। কিন্তু... তাতে শামিল হতে পারি না।” শুধু ওই সিক্রেট সার্ভিস সদস্যই নন, এত দিন ধরে চলা বিক্ষোভ-প্রতিবাদ সামলাতে অনেক ক্ষেত্রেই আফ্রো-মার্কিন পুলিশ অফিসারদের মাঠে নামতে হয়েছে। তাঁদের মধ্যেই অনেকে জানাচ্ছেন, এই প্রতিবাদ তাঁদের অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে। শনিবার হোয়াইট হাউসের পাশে ট্রেজ়ারি বিভাগের সামনে সেই বিক্ষোভে শামিল এক জন বললেন, “আমি সেনায় চাকরি করি। উর্দিতে থাকলে এমন অনেক কাজই করা যায় না, যা আমাদের হৃদয় চায়।”
কাল রাতে সিয়্যাটলে এক বিক্ষোভ-মিছিলের মধ্যে আচমকা গাড়ি নিয়ে ঢুকে পড়ে এক বন্দুকবাজ। তার গুলিতে এক বছর কুড়ির যুবক আহত হয়েছেন। গ্রেফতার করা হয়েছে হামলাকারীকে, উদ্ধার হয়েছে অস্ত্র। কী কারণে হামলা, স্পষ্ট করেনি পুলিশ। এ দিকে, ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলকেও ‘বর্ণবিদ্বেষী’ বলে দেগে দিলেন বিক্ষোভকারীরা। রবিবার লন্ডনের পার্লামেন্ট স্কোয়ারে চার্চিলের মূর্তির মূর্তির গায়ে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ লেখা পোস্টারও সেঁটে দেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: কাজ না করেও পাচ্ছেন মোটা মাইনে, তবুও কোটি টাকার ক্ষতিপূরণের দাবি!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy