৭৪ বছর বয়সে ব্রিটেনের সিংহাসনে বসেছেন রাজা তৃতীয় চার্লস। ছবি: সংগৃহীত।
৭০ বছর পর বাকিংহাম প্যালেসের সিংহাসনে বসলেন নতুন রাজা। তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক উপলক্ষে লন্ডনে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন করা হয়েছিল শনিবার। আমন্ত্রিত ছিলেন দু’হাজার মানুষ। শুধু শনিবার নয়, টানা তিন দিন দেশ জুড়ে ভোজসভা পালিত হবে চার্লসের সম্মানে। কিন্তু এর মাঝেই রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে স্লোগান উঠল ইংল্যান্ডের রাস্তায়। বিরোধিতা করে গ্রেফতারও হলেন অনেকে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শনিবার রাজার রাজ্যাভিষেকের অনুষ্ঠান শুরুর আগেই রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে পথে নামা অন্তত ৫২ জনকে গ্রেফতার করে ব্রিটেনের পুলিশ। তাঁরা সকলেই রাজতন্ত্র-বিরোধী দল রিপাবলিকের সদস্য। ওই দলের নেতা গ্রাহাম স্মিথকেও গ্রেফতার করা হয়েছে বলে দাবি। যদিও পুলিশের তরফে এই গ্রেফতারির কথা স্বীকার করা হয়নি।
চার্লসের রাজ্যাভিষেকের দিন লন্ডনের রাস্তায় কিছু মানুষ রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তাঁদের মূল বক্তব্য, একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে ঘটা করে ৭৪ বছর বয়সি রাজার রাজ্যাভিষেক নিতান্তই অর্থহীন। এই অনুষ্ঠানে যে বিপুল অর্থ ব্যয় হচ্ছে, তা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করার পক্ষপাতী বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের দাবি, রাজ্যাভিষেক বন্ধ করে ওই টাকায় অভুক্তকে খাওয়ানো উচিত।
শনিবার লন্ডনে ‘রাজতন্ত্র নিপাত যাক’, ‘আমাদের কোনও রাজা নেই’ ইত্যাদি স্লোগান উঠতে শোনা গিয়েছে। বিভিন্ন রাজতন্ত্রবিরোধী প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভে শামিল হন অনেকে। কিন্তু পরিস্থিতি সামলাতে এবং রাজার অনুষ্ঠানে যাতে কোনও ব্যাঘাত না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ধরপাকড় শুরু করে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিশ আরও বেশি করে তাঁদের দাবিদাওয়াকে জনপ্রিয় করে তুলল।
বিক্ষোভকারী দল জানিয়েছে, তারা আশা রাখে, তৃতীয় চার্লসই শেষ বার ব্রিটেনের সিংহাসনে বসলেন। এর পর আর ব্রিটেনে রাজতন্ত্রের অস্তিত্ব থাকবে না।
শুধু লন্ডনে নয়, স্কটল্যান্ড, ওয়েলসের একাধিক এলাকাতেও রাজতন্ত্রবিরোধী বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে শনিবার। তবে প্রশাসনের দাবি, রাজার বিরোধীর তুলনায় সমর্থকের সংখ্যা অনেক বেশি, যাঁরা শনিবার রাজ্যাভিষেককে সমর্থন করেছেন।
চার্লসের এই রাজকীয় রাজ্যাভিষেকে কত খরচ হল, বাকিংহাম প্যালেসের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে তা জানানো হয়নি। তবে বিবিসি জানিয়েছে, সব মিলিয়ে খরচ প্রায় ৫০০ থেকে ১০০০ কোটি টাকা। ব্রিটেনে ক্ষমতাসীন সরকারই রাজ্যাভিষেকের খরচ বহন করে। অর্থাৎ, পরোক্ষ ভাবে সাধারণ নাগরিক তথা করদাতাদের টাকাতেই এই রাজসূয় যজ্ঞ। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে ‘বৃদ্ধ’ রাজার অভিষেক নিয়ে এই মাতামাতি এবং শুধুমাত্র পরম্পরা এবং ঐতিহ্যবহনের স্বার্থে এই অর্থনৈতিক ব্যয় কতটা যুক্তিযুক্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy