যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়ার রাস্তায় নামলেন শত শত প্যালেস্টাইনি! তাঁদের কণ্ঠে হামাস বিরোধী স্বর। চান চলমান যুদ্ধের অবসান।
গত ১৮ মার্চ থেকে নতুন করে ইজ়রায়েলি হানায় উত্তপ্ত গাজ়া। বিশেষত, উত্তর গাজ়ায় একের পর এক ইজ়রায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়ছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। ইজ়রায়েল এবং হামাসের সংঘাতের মাঝে পড়ে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় গাজ়ার বাসিন্দাদের। কোথায় পালিয়ে বাঁচবেন, সেই চিন্তায় ঘুম উড়েছে অনেকেরই। সেই আবহেই উত্তর গাজ়ার বেইত লাহিয়ার রাস্তায় বিক্ষোভ দেখাতে দেখা গেল কয়েকশো প্যালেস্টাইনিকে।
মঙ্গলবার রাতে সমাজমাধ্যমে বিক্ষোভের একাধিক ভিডিয়ো ও ছবি ছড়িয়ে পড়ে (যদিও এই ভিডিয়ো এবং ছবির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)। তাতে দেখা গিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের মধ্যে অধিকাংশই পুরুষ। তাঁদের মুখে স্লোগান, হাতে ব্যানার। লেখা, ‘যুদ্ধ বন্ধ করো’, ‘আমরা শান্তিতে থাকতে চাই’! শুধু তা-ই নয়, প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধেই তাঁদের সুর চড়াতে দেখা গিয়েছে। গাজ়া ভূখণ্ডে হামাসদের চান না তাঁরা, সেটাই বোঝাতে চাইলেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁদের স্লোগান, ‘হামাস দূর হটো’।
স্থানীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বেইত লাহিয়ার রাস্তার বিক্ষোভ হটাতে বলপ্রয়োগ করে হামাস। অনেককে দেখা যায় কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে লাঠি হাতে বিক্ষোভকারীদের উপর হামলা চালাচ্ছেন। দাবি, এই হামলায় অনেকে আহত হয়েছেন। তবে কারা এই বিক্ষোভের নেপথ্যে রয়েছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এক বিক্ষোভকারীর কথায়, ‘‘আমি জানি না কে এই বিক্ষোভের আয়োজন করেছিলেন। সমাজমাধ্যম টেলিগ্রামের এক বার্তা দেখে রাস্তায় নেমেছিলাম।’’ তবে তিনিও চান যুদ্ধ শেষ হোক। বিক্ষোভকারীদের দাবি, চলমান যুদ্ধপরিস্থিতিতে তাঁরা ক্লান্ত। আরও এক বিক্ষোভকারীর প্রশ্ন, ‘‘যদি হামাসের গাজ়া ছেড়ে যাওয়াই সমাধানের শেষ কথা হয়, তবে কেন তারা চলে যাচ্ছে না?’’
আরও পড়ুন:
২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে ইজ়রায়েল এবং প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের যুদ্ধ চলছে। সম্প্রতি শর্তসাপেক্ষে উভয়পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছিল। গত ১৯ জানুয়ারি থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। কিন্তু আচমকা তার শর্ত লঙ্ঘন করে গাজ়ায় আবার হামলা শুরু করেছে ইজ়রায়েল। রমজ়ান মাস চলাকালীনই প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নির্দেশে গত ১৮ মার্চ আবার গাজ়ায় শুরু হয়েছে গোলাবর্ষণ। বার বার এই ইজ়রায়েলি হামলায় ‘ক্লান্ত’ প্যালেস্টাইনিরাই পথে নামলেন হামাসের বিরুদ্ধে।