Advertisement
E-Paper

‘সব আফগান শরণার্থীকে ফেরত পাঠানো হবে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে’! শাহবাজ সরকারের নিশানায় তালিবান

রাষ্ট্রপুঞ্জের তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানে এখন ‘আফগান সিটিজ়েন কার্ড’ রয়েছে প্রায় আট লক্ষ মানুষের। প্রথম দফায় তাঁদের নিশানা করেছে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সরকার।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৫ ১০:৫৭
Share
Save

উত্তেজনার আবহে আফগানিস্তানের শাসক তালিবানের উপর নতুন করে চাপ বাড়াল পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সরকার। পাক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তাল্লাল চৌধরি আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সব ‘অবৈধ অভিবাসী’ এবং ‘আফগান সিটিজ়েন কার্ড’ধারীদের ফেরত পাঠানোর ঘোষণা করলেন। তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আরও কোনও সময়সীমা বাড়ানো হবে না।’’ এরই মধ্যে অন্তত পাঁচ হাজার শরণার্থীকে ফেরতও পাঠিয়েছে পাক সরকার।

এর আগে মার্চের গোড়ায় পাক সরকার সব ‘অবৈধ অভিবাসী’ এবং ‘আফগান সিটিজ়েন কার্ড’ধারী লোকজনকে ৩১ মার্চের মধ্যে দেশ ছেড়ে যেতে বলেছিল। অন্যথায় তাঁদের নিজের দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। নির্দেশিকায় জানানো হয় যে, ‘বেআইনি বিদেশি নাগরিক প্রত্যাবর্তন কর্মসূচি’র অংশ এটি। যদিও কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে বালোচিস্তানের বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং খাইবার-পাখতুনখোয়ায় সক্রিয় তেহরিক-তালিবান পাকিস্তান ধারাবাহিক ভাবে আফগানিস্তানের ঘাঁটি গেড়ে পাকিস্তান-বিরোধী কার্যকলাপ চালিয়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ ইসলামাবাদ এই পদক্ষেপ করেছে।

এর আগে ২০২৩ সালের শেষ পর্বে আফগান শরণার্থীদের ফেরত পাঠাতে তৎপর হয়েছিল পাকিস্তান। সে সময় কয়েক লক্ষ অবৈধবাসীকে জোর করে সীমান্তে ‘পুশ ব্যাক’ করানো হয় বলে অভিযোগ। প্রসঙ্গত, আশির দশকে আফগানিস্তানে সোভিয়েত সেনার অনুপ্রবেশ এবং মুজাহিদ বাহিনীর সঙ্গে তাদের লড়াই শুরুর পর থেকে পাকিস্তানে মূলত পাশতুন জনগোষ্ঠীর শরণার্থীদের ভিড় শুরু হয়েছিল। দু’দশক আগে আফগানিস্তানে আমেরিকার সেনা অভিযান শুরুর পরেও কয়েক লক্ষ আফগান নাগরিক প্রাণভয়ে পাকিস্তানে চলে এসেছিলেন।

মূলত পাক-আফগান সীমান্ত লাগোয়া খাইবার-পাখতুনখোয়া এবং বালুচিস্তান প্রদেশে আফগান শরণার্থীদের বসবাস। দু’বছর আগে অবৈধবাসী বিতাড়নের সময় শাহবাজ সরকার দাবি করেছিল, পাকিস্তানের মাটিতে প্রায় ৪০ লক্ষ আফগান রয়েছেন। যদিও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সমীক্ষায় তা সাড়ে ১৭ লক্ষের আশপাশে বলা হয়েছিল। রাষ্ট্রপুঞ্জের তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানে এখন ‘আফগান সিটিজ়েন কার্ড’ রয়েছে প্রায় আট লক্ষ মানুষের। ঠিকানা প্রমাণের কার্ড রয়েছে ১৩ লক্ষ আফগানের। ২০২৩ সালের ১ নভেম্বর কার্যকর হওয়া ‘বেআইনি বিদেশি নাগরিক প্রত্যাবর্তন কর্মসূচি’তে এ পর্যন্ত আট লক্ষ আফগানকে নিজের দেশে ফেরত পাঠিয়েছে পাকিস্তান।

পাক সংবাদমাধ্যমের দাবি, মূলত দু’টি কারণে অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামাবাদ। প্রথমত, দেশের বেহাল অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বাড়তি ব্যয়বহনে অক্ষমতা। দ্বিতীয়ত, নিরাপত্তা সংক্রান্ত সঙ্কট। তালিবান প্রধান হায়বাতুল্লা আখুন্দজাদা বর্তমানে অসুস্থ। নেতৃত্বের রাশ প্রধানমন্ত্রী হাসান আখুন্দ, উপপ্রধানমন্ত্রী আব্দুল গণি বরাদর এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মহম্মদ ইয়াকুবের হাতে। তাঁদের সঙ্গে টিটিপির সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ। অন্য দিকে, পাকপন্থী তালিবান নেতা সিরাজুদ্দিন হক্কানি গত কয়েক মাসে অনেকটাই কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। এই আবহে কাবুলের উপর চাপ বাড়াতেই শরণার্থী বিতাড়নের প্রক্রিয়া বলে মনে করা হচ্ছে।

Refugees Afghan Taliban Pakistan Shehbaz Sharif Afghanistan Afghanistan War Immigrants

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}