Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Pakistan

বয়স নয়, ঋতুমতী হলেই বিয়ের যোগ্য, বিতর্কিত মন্তব্য পাক আদালতের

মেয়েকে ফিরে পেতে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন হুমার বাবা ইউনিস এবং মা নাগিনা মাসিহ্।

হুমা ইউনুস। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

হুমা ইউনুস। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
করাচি শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৪:৩২
Share: Save:

মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক না হলে ক্ষতি নেই, শুধু ঋতুমতী হতে হবে। তা হলেই তাকে বিয়ে করা যাবে। সংখ্যালঘুদের জোর করে ধর্মান্তরিত এবং অপহরণ করে বিয়ের অভিযোগে পাকিস্তান যখন জেরবার, ঠিক তখনই এমন মন্তব্য করল সে দেশের একটি আদালত। তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ফের এক বার মুখ পুড়ল ইমরান খান সরকারের।

ঘটনার সূত্রপাত গত বছর। অভিযোগ, ২০১৯-এর গত ১০ অক্টোবর খ্রিস্টান পরিবারের মেয়ে ১৪ বছরের হুমা ইউনুসকে বাড়ি থেকে অপহরণ করেন বছর আঠাশের আব্দুল জব্বার। জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করে হুমাকে বিয়ে করেন তিনি।

মেয়েকে ফিরে পেতে সেই থেকে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন হুমার বাবা ইউনিস এবং মা নাগিনা মাসিহ্। তাঁদের দাবি, ২০০৫ সালের ২২ মে হুমার জন্ম। গির্জা এবং স্কুলের নথিপত্রেও তার প্রমাণ রয়েছে। সেই হিসাবে হুমার বয়স ১৪ বছর। সিন্ধ বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী, বিয়ের ন্যূনতম বয়স যেখানে ১৮ বেঁধে দেওয়া হয়েছে, সেখানে হুমা ও আব্দুলের বিবাহ আইনত বৈধ নয়। কিন্তু, সোমবার এই মামলার শুনানি চলাকালীন তাঁদের যুক্তিকে আমল দেননি সিন্ধ হাইকোর্টের দুই বিচারপতি মহমম্দ ইকবাল কালহোরো এবং ইরশাদ আলি শাহ। বরং শরিয়ৎ আইনকে উল্লেখ করে তাঁরা জানান, হুমা প্রাপ্তবয়স্ক কি না, তা আদৌ গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং ঋতুমতী বলেই আব্দুলের সঙ্গে তার বিবাহ বৈধ।

আরও পড়ুন: করোনাভাইরাসে উহানে মৃত্যু প্রথম বিদেশি নাগরিকের, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭২৪, আক্রান্ত ৩৪ হাজারেরও বেশি​

আগামী ৪ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি। তবে, ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হুমার পরিবারের আইনজীবী তবস্সুম ইউসুফ। তিনি বলেন, ‘‘অপহরণ এবং জোর করে বিয়ে রুখতেই ২০১৪ সালে বাল্য বিবাহ রদ আইন আনা হয় সিন্ধ প্রদেশে। কিন্তু হাইকোর্টের মন্তব্য সেই আইনের পরিপন্থী। তদন্তকারীরা ইচ্ছাকৃত ভাবে আব্দুলের হয়ে পক্ষপাতিত্ব করছেন বলে নিশ্চিত মেয়েটির পরিবার। এমনকি হুমার বয়স নিয়েও মিথ্যা তথ্য পেশ করা হতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের। বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’’

সুপ্রিম কোর্টে মামলা না ওঠা পর্যন্ত, হুমাকে সরকারি হোমে রাখার আর্জি জানিয়েছে হুমার পরিবার। সেই সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে অনলাইনে আন্তর্জাতিক মহলের সাহায্যও চেয়েছেন হুমার মা। তিনি বলেছেন, ‘‘বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা রাখতে পারছি না। খ্রিস্টানদের এ দেশের নাগরিক হিসাবে মর্যাদা দিতে ব্যর্থ সরকার।’’

আরও পড়ুন: দিল্লি লাইভ: কাকে ভোট দেবেন ঠিক করে ফেলেছেন মহিলারা, স্মৃতিকে কটাক্ষ কেজরীর​

জোর করে ধর্মান্তরণ এবং বিয়ের ঘটনা পাকিস্তানে নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ প্রায়শই এর শিকার হন সেখানে বলেই অভিযোগ। গত এক মাসে এই সিন্ধ প্রদেশ থেকেই দু’দু’টি ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে দুই হিন্দু মেয়েকে ধর্মান্তরিত করে, জোরপূর্বক বিয়ের অভিযোগ উঠেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Pakistan Minor Girls Sindh High Court Imran Khan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE