অনুপস্থিত: নোবেল শান্তি পুরস্কারের মঞ্চে। এএফপি-র ফাইল ছবি।
চিরকালীন ফ্রেম হয়ে গিয়েছিল মুহূর্তটা।
১০ ডিসেম্বর, ২০১০। দাঁড়িয়ে উঠে হাততালি দিচ্ছে নরওয়ের অসলো সিটি হল। ছোট্ট মঞ্চটায় নীল রঙের চেয়ারে রাখা শান্তির নোবেল পুরস্কারের পদক ও মানপত্র। তারও পিছনে চিনা মানবাধিকার কর্মী লিউ শিয়াওবোর বিশাল কাটআউট।
পুরস্কারটা নিজে নিতে পারেননি লিউ, কারণ সেই মুহূর্তে তিনি ১১ বছরের জেল খাটছিলেন। রাষ্ট্রক্ষমতায় ফাটল ধরানোর চেষ্টার অপরাধে তাঁকে কারাদণ্ড দিয়েছিল চিনা সরকার। স্ত্রী লিউ শিয়া-ও ছিলেন গৃহবন্দি। নোবেল কমিটি তাই ফাঁকা চেয়ারেই নোবেল পদক রেখে কুর্নিশ জানিয়েছিল তাঁকে।
৬১ বছর বয়সে লিউ আজ মারা গেলেন। তবে জেলে নয়। যকৃতের ক্যানসারে গুরুতর অসুস্থ লিউকে গত ২৬ জুন মেডিক্যাল প্যারোলে মুক্তি দিয়েছিল চিন সরকার। কারাদণ্ডের মেয়াদ শেষ হতে এখনও বাকি ছিল ৩ বছর। কোনও ছবি পাওয়া যায়নি তাঁর। কড়া পুলিশি পাহারায় ভর্তি ছিলেন উত্তর-পূর্ব চিনের শেনইয়াংয়ের এক হাসপাতালে। গত কালই চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, লিউয়ের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গই প্রায় বিকল হয়ে গিয়েছে। প্রবল শ্বাসকষ্টও রয়েছে। এ বার রাস্তা ভেন্টিলেশন।
তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ওয়েবসাইটে লিউয়ের মৃত্যুসংবাদ জানিয়ে দিল শেনইয়াংয়ের বিচার দফতর। প্যারোলে মুক্তির পর থেকেই আমেরিকা, জার্মানি এমনকী হংকংও দাবি তুলেছিল, বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করাতে দেওয়া হোক লিউকে। চিকিৎসার দায়িত্বও নিতে চেয়েছিল। কিন্তু সাড়া দেয়নি চিন সরকার।
১৯৫৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর চিনের জিলিন প্রদেশের রাজধানী চাংচুনে লিউয়ের জন্ম। ১৯৮৯-এ তিয়েনআনমেন বিক্ষোভের সময় থেকেই কার্যত উত্থান এই লেখক-অধ্যাপক তথা মানবাধিকার কর্মীর। বহুদলীয় নির্বাচন এবং বাক্স্বাধীনতা— মূলত এই দুই দাবিতেই তাঁর আন্দোলন, বারবার বন্দি হওয়া। ২০০৮ সালে চিনের সাড়ে তিনশোরও বেশি বিশিষ্ট জন ও মানবাধিকার কর্মীর সই-সংবলিত ‘সনদ-০৮’-এর অন্যতম প্রধান প্রণেতা ছিলেন তিনিই। তার পরেই জেল।
জেলে যাওয়ার আগে আদালতে লিউ বলেছিলেন, ‘‘আমি কোনও অপরাধ করিনি। তবে আমার কোনও অভিযোগও নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy