বালোচিস্তানে জাফর এক্সপ্রেস অপহরণের ঘটনার পর থেকেই উত্তাপ বাড়ছে পাকিস্তানে। মনে করা হচ্ছে, এ বার বিদ্রোহীদের উপর পুরো শক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে পাক সেনা। স্থানীয় বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, ট্রেন অপহরণের ঘটনার জেরে তাঁদের উপর হামলা হতে পারে, এমন আশঙ্কা করছেন বিদ্রোহীরাও। বৃহস্পতিবারই পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বালোচিস্তানে গিয়েছিলেন অপহৃত ট্রেন থেকে উদ্ধার হওয়া যাত্রীদের সঙ্গে দেখা করতে। তিনি বলেন, ‘‘এই ধরনের কাজ করে পাকিস্তানের শান্তির উদ্যোগকে কেউ নষ্ট করে দিতে পারবে না।’’ তার পরই ইঙ্গিত দেন, এই হামলার সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।
কিন্তু পাক সেনা যদি তাঁদের উপর হামলা করে, তাঁদের গায়ে যদি কোনও আঁচ লাগে, তা হলে তাঁরাও পাল্টা হামলা চালাতে পিছপা হবেন না। ‘আল জাজিরা’য় এমনই দাবি করেছেন বালোচ বিদ্রোহীদের এক কমান্ডার। তিনি বলেন, ‘‘যদি পাক সেনা আমাদের উপর হামলার চেষ্টা করে, তা হলে পরবর্তী নিশানা হবে ইসলামাবাদ, লাহোর অথবা রাওয়ালপিন্ডি।’’
ওই কমান্ডার সংবাদমাধ্যমে দাবি করেন, বালোচ শিশুদের উপর নির্মম অত্যাচার করে পাক সেনা। মহিলাদের তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয়। এ বার যদি এই ধরনের কাজ করার চেষ্টা করে পাক সেনা, তা হলে তাদের জবাব দিতে প্রস্তুত তাঁরা। বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)-র ওই কমান্ডার আরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, যদি বালোচদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হয়, তাঁরাও পাল্টা চাপের কৌশল নেবেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের মানুষকে মারলে, আমরাও পাক সেনাদের মারব। ওদের শিক্ষা দিতে চাই যে, মারের বদলে মার দিতে জানি আমরাও।’’ তাঁর দাবি, প্রতিনিয়ত বালোচদের উপর অত্যাচার হয়। কিন্তু এই অত্যাচার আর সহ্য করবেন না তাঁরা। যদি অত্যাচারের চেষ্টা করে পাক সেনা, তাঁদের লোকজনদের যদি হত্যা করে, তা হলে বিদ্রোহীদের পরবর্তী নিশানা যে ইসলামাবাদ হবে, তা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিতে চেয়েছেন ওই কমান্ডার। তাঁর আরও হুঁশিয়ারি, সময় থাকতে পাক সেনা নিজেদের শুধরানোর চেষ্টা করুক, না হলে পরিণতি আরও ভয়ানক হতে পারে।
গত মঙ্গলবার বালোচিস্তানের বোলানে মাশকাফ সুড়ঙ্গে জাফর এক্সপ্রেস অপহরণ করে বালোচ বিদ্রোহীরা। প্রায় ৩০ ঘণ্টা ধরে পাক সেনার অভিযানে উদ্ধার হন যাত্রীরা। পাক সেনার দাবি, সব বিদ্রোহীর মৃত্যু হয়েছে এই অভিযানে। বিদ্রোহীদের পাল্টা দাবি, ৩০ জন সেনার মৃত্যু হয়েছে সংঘর্ষে।