নরেন্দ্র মোদি। ফাইল চিত্র।
ভয়াবহ বন্যায় ডুবেছে পাকিস্তানের এক-তৃতীয়াংশ জনপদ। অধিকাংশ কৃষিজমি জলের তলায় চলে যাওয়ায় ক্রমশ সে দেশে বাড়ছে খাদ্যসঙ্কট। পাক অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ভারত থেকে খাদ্যপণ্য আমদানির। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে এখনও পর্যন্ত মুখে কুলুপ এঁটে রয়েছে সাউথ ব্লক।
এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী প্রধানমন্ত্রীর পুরনো টুইটটিরই পুনরাবৃত্তি করেছেন। তাঁর কথায়, “পাকিস্তানের বন্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বেদনা প্রকাশ করেছেন। এই বন্যার ফলে যে বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার উল্লেখ করেছেন। যে সব পরিবার এই বন্যার শিকার, তাঁদের জন্য গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আপাতত পাকিস্তানকে সাহায্য করার ব্যাপারে এর থেকে বেশি আমাদের কিছু বলার নেই।”
প্রতিবেশী রাষ্ট্রের নাম পাকিস্তান। কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, সে কারণেই এর বেশি কোনও পদক্ষেপ এখনই করতে চাইছে না ভারত। এ ব্যাপারে সে দেশের অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, বিশ্বের একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বন্যাদুর্গতদের স্বার্থে খাদ্যবস্তু আমদানি করার জন্য তাঁদের কাছে অনুরোধ করেছেন। দেশের চাহিদার পরিমাণ যাচাই করে তিনি ভারত থেকে আনাজ আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তিনি এই মন্তব্য করার পরেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জানিয়েছেন, ভারত থেকে তখনই তিনি কিছু আমদানি করার কথা ভাববেন, যখন দু’দেশের মধ্যে সমস্যার (কাশ্মীর) জায়গাগুলির সমাধান হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বার্তার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ দেওয়ার পর উল্টে এই তীব্র সঙ্কটের মধ্যেও নয়াদিল্লির সমালোচনাই করতে দেখা গিয়েছে পাক প্রধানমন্ত্রীকে।
আগামী ১৪ তারিখ সমরখন্দে বসতে চলেছে শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজ়েশনের (এসসিও) শীর্ষ বৈঠক। সেই মঞ্চে মোদীর পাশাপাশি উপস্থিত থাকবেন শাহবাজও। তবে দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে আলাদা করে কোনও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সম্ভাবনা নেই বলেই খবর। ভারত আগ বাড়িয়ে পাকিস্তানকে খাদ্যপণ্য পাঠাবে, এমন সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। পাকিস্তানকে সহায়তা পাঠানোর পর সে দেশ থেকে ভারতে সন্ত্রাসবাদ পাচারের মতো ঘটনা ঘটলে তা ঘরোয়া রাজনীতিতে মোদী সরকারের প্রবল অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তা ছাড়া বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, পাকিস্তান নেতৃত্ব সহায়তার নেওয়ার বিষয়টির সঙ্গেও কাশ্মীরকে জড়িয়ে ফেলছেন। স্বাভাবিক ভাবেই এই নিয়ে আর কথা চলে না। ২০১৯-এর অগস্টে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করার পর প্রতিবাদে ভারত থেকে পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে পাকিস্তান। আজ পাকিস্তানের এই চরম দুরবস্থায় সেই বন্ধ হওয়া বাণিজ্য ফের শুরু করা হবে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরেও ভারত মুখ বুজেই থেকেছে। মুখপাত্র অরিন্দম বাগচীর কথায়, “এই বাণিজ্য চালু হওয়ার বিষয়ে আমরা কিছু বিবৃতি দেখেছি। তবে এই বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy