মুম্বই হামলায় অভিযুক্ত তাহাউর রহমান রানা। —ফাইল চিত্র
মুম্বই হামলায় অভিযুক্ত পাকিস্তান বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তাহাউর রহমান রানাকে জামিন দিল না মার্কিন আদালত। ভারত সরকারের আবেদনে সাড়া দিয়ে মার্কিন প্রশাসন এ মাসের ১০ তারিখে লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে তাকে গ্রেফতার করেছিল। এ দিন আদালতে জামিনের জন্য ১৫ লক্ষ ডলার পর্যন্ত দিতে চেয়েছিলেন রানার আইনজীবীরা। কিন্তু বিচারক আবেদন খারিজ করে দেন।
মুম্বইয়ে ২০০৮-এ জঙ্গি হামলায় ৬ মার্কিন নাগরিক-সহ ১৬৬ জন মারা যান। বিস্তারিত তদন্তের পরে এই হামলার পরিকল্পনাকারী হিসেবে ডেভিড কোলম্যান হেডলি এবং তার বাল্যবন্ধু কানাডার ব্যবসায়ী রানার নাম উঠে আসে। শিকাগোয় রানার বাড়ি ও ব্যবসা রয়েছে জানতে পেরে ভারত সরকার তাকে প্রত্যর্পণের জন্য মার্কিন সরকারের কাছে দরবার করে। তার পরেই লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে এ মাসে গ্রেফতার করা হয় রানাকে। ভারতীয় পুলিশ ইতিমধ্যেই ফেরার ঘোষণা করেছে তাকে। এর পরে জামিনের আর্জি জানিয়ে লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি আদালতের দ্বারস্থ হয় রানা। কিন্তু ২৪ পাতার রায়ে বিচারক বলেন, ‘রানার অপরাধের যে মাত্রা, তাতে ভারতীয় আইনে
তার মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। যে হেতু সে কানাডার নাগরিক, তাই জামিন পেয়ে কানাডায় পালানোর খুবই সম্ভাবনা রয়েছে তার। কারণ, কানাডায় পৌঁছতে পারলে সে ভারতে প্রত্যর্পণ এড়ানোর সুযোগ পাবে।’ বিচারক রায়ে জানান, জামিন পাওয়ার জন্য অভিযুক্ত যখন এত বিপুল পরিমান অর্থব্যয়ে রাজি, ধরে নিতে হবে তার অন্য কোনও অভিসন্ধি রয়েছে। তাই তার জামিনের আর্জি খারিজ করা হল।
আরও পড়ুন: বাবরি কাণ্ড: ফাঁসি হলে আশীর্বাদ বলে মেনে নেব, বললেন উমা ভারতী
রানার আইনজীবীরা যুক্তি দিয়েছিলেন, জামিন পেয়ে যে পালাবে না, সেই গ্যারান্টি দিতেই রানা ১৫ লক্ষ ডলার জমা রাখতে রাজি হয়েছিল। কিন্তু সরকারি কৌঁসুলিরা আদালতে রানার জামিনের বিরোধিতা করে জানান, জঙ্গি কার্যকলাপ ও গণহত্যার মতো অপরাধে অভিযুক্ত রানাকে ভারত সরকারের আবেদনের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে জামিন পেয়ে উধাও হয়ে গেলে মার্কিন সরকারের যেমন মুখ পুড়বে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কেও তার প্রভাব পড়বে। সরকারি কৌঁসুলিরা জানান, ইউরোপের নানা দেশে রানার অনেক বাড়ি রয়েছে। গোটা পৃথিবী ঘুরে বেড়ায় বলে তার যোগাযোগও কম নয়। সাতটি ভাষায় কথা বলতে পারে পাকিস্তানের সামরিক মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডাক্তারি পড়ে সে দেশের সেনা বাহিনীতে চিকিৎসক হিসেবে কাজে ঢোকা রানা। পরে অবশ্য সে কানাডার নাগরিকত্ব নিয়ে পাকিস্তানি সেনা বাহিনীর কাজ ছেড়ে দেয়।
গ্রেফতারের পরে জানা যায়, রানা কোভিড-১৯-এ সংক্রমিত হয়েছিল। কিন্তু সংক্রমণ সেরে গিয়েছে। ধরা পড়ার পরে তিন বার করোনা পরীক্ষা হয়েছে রানার। প্রতিবারেই ফল নেগেটিভ এসেছে তার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy