মুহাম্মদ ইউনূস। —ফাইল চিত্র।
২৫ অগস্ট: কবে নির্বাচন হবে বাংলাদেশে, তার কোনও সুষ্ঠু পথরেখা জাতির উদ্দেশে নিজের প্রথম বক্তৃতায় দিতে পারলেন না অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। রবিবার সন্ধ্যায় খানিকটা আচমকা জাতির উদ্দেশে ভাষণের সিদ্ধান্ত নেন ইউনূস। আগের দিনই বিএনপি-র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, সুষ্ঠু ভাবে একটা নির্বাচন করে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার জন্য এই সরকার গঠিত হয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, “এই সরকার নির্বাচনী পথরেখা নিয়ে কী ভাবছে, স্পষ্ট
করে জানাক।”
এ দিন প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস তাঁর ভাষণে বলেন, “দেশের সঙ্কট কালে ছাত্রদের আহ্বানে আমরা সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। কখন নির্বাচন হবে, সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, আমাদের সিদ্ধান্ত নয়।” ইউনূসের কথায়, “দেশবাসীকে ঠিক করতে হবে আপনারা কখন আমাদের ছেড়ে দেবেন। আমরা ছাত্রদের আহ্বানে এসেছি। তারা আমাদের প্রাথমিক নিয়োগকর্তা। জনসাধারণ আমাদের নিয়োগ সমর্থন করেছে। তারা যখন বলবে আমরা চলে যাব।” অর্থাৎ নির্বাচন নিয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট কথা ইউনূস বললেন না। তবে বলেছেন, সংস্কার প্রক্রিয়ার অঙ্গ হিসাবে তাঁরা নির্বাচন কমিশনেরও সংস্কার করবেন। কমিশনকে যে কোনও সময়ে নির্বাচনের জন্য তৈরি রাখবেন। কিন্তু সেই কাজ কবে হতে পারে, তার কোনও ইঙ্গিত দেননি ইউনূস।
বস্তুত আগের সরকারের নেতাদের বিরুদ্ধে ঢালাও খুনের মামলা দিয়ে হেনস্থা করার বিষয়েও একটি কথা বলেননি প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস। বিশিষ্ট আইনজীবী সারা হোসেন শনিবার এ ধরনের মামলার বিরোধিতা করে বলেছেন, হেনস্থা করাই যে মামলা দেওয়ার উদ্দেশ্য, তা জলের মতো পরিষ্কার। আন্দোলনের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে এই সব মামলায়। কারণ, এ ধরনের মামলা বিচারের প্রাথমিক ধাপই পার হতে পারবে না, এতটাই দুর্বল। বিশিষ্ট আইনজীবী কামাল হোসেনের কন্যা সারা বলেন, “মামলা প্রতিহিংসা দেখানোর জায়গা নয়। ক্ষোভ ঝাড়ার জায়গা নয়।” এ দিন এ বিষয়ে নিজের প্রথম ভাষণে একটি কথাও বলেননি ইউনূস।
রবিবারই বাংলাদেশের বিভিন্ন ইসলামি দলের নেতারা বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বাংলাদেশে ইসলামি শাসনব্যবস্থা প্রণয়নের জন্য তাঁরা জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে জোট বেঁধে আন্দোলন শুরু করবেন। এই বৈঠকে জামায়াতের আমীর শফিকুর রহমান ছাড়া হেফাজতে ইসলামের একঝাঁক নেতা, ইসলামি ঐক্যজোটের একাংশের নেতারা ছিলেন। জামায়াতে ইসলামীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে নতুন ইসলামী শক্তির যাত্রা শুরু হল এ দিন। এঁদের লক্ষ্য হবে বাংলাদেশে ইসলামি শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস এই বিষয়েও এ দিন কোনও কথা বলেননি। তবে তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য একটিই। উদার, গণতান্ত্রিক, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy