ভারত এবং তার দুই প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ‘যৌথ অর্থনীতি’ গড়ে তুলতে চান বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। সম্প্রতি একটি সম্মেলনে গিয়ে এ কথা জানিয়েছেন তিনি। এই যৌথ অর্থনীতি গড়ে তোলার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে বলে দাবি তাঁর। যদিও ভারতের তরফে এ বিষয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। ইউনূস জানিয়েছেন, চার দেশের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এই যৌথ অর্থনীতি গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের ২০২৫ সালের সম্মেলনে যোগ দিতে রবিবার ঢাকার বাংলাদেশ-চিন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে গিয়েছিলেন ইউনূস। সেখানে প্রধান অতিথি হিসাবে ভাষণ দেন তিনি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নাহিদ ইসলাম, সালেউদ্দীন আহমেদ, আসিফ নজরুলের মতো অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা। ইউনূস জানান, ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভুটান ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকে কাছাকাছি। তাই এই চার দেশের মধ্যে যৌথ অর্থনীতি গড়ে তোলা দরকার। তাতে চার দেশই লাভবান হবে। ইতিমধ্যে সেই প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন:
বাংলাদেশের সঙ্গে নেপাল বা ভুটানের সরাসরি কোনও সীমান্ত নেই। দু’টিই ভারতের প্রতিবেশী দেশ। বাংলাদেশের সঙ্গে সীমান্ত রয়েছে কেবল ভারত এবং মায়ানমারের। ভারতের পাশাপাশি তার দুই পড়শি দেশের সঙ্গেও অর্থনীতিক বন্ধন নিবিড় করতে আগ্রহী ইউনূসের সরকার।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে রবিবার বৈঠক সেরেছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলন (ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্স) উপলক্ষে তাঁরা দু’জনেই বর্তমানে ওমানে রয়েছেন। জয়শঙ্কর রবিবার জানান, তৌহিদের সঙ্গে ভারত এবং বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে তাঁর। দুই দেশের সম্পর্কে সম্প্রতি কিছু কূটনৈতিক টানাপড়েন দেখা দিয়েছে। ফলে জয়শঙ্করের সঙ্গে তৌহিদের বৈঠকের গুরুত্ব আরও বেড়েছে। প্রতিকূলতার মোকাবিলায় দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে জোর দিয়েছে বলে খবর।
উল্লেখ্য, গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ভারতে চলে আসেন শেখ হাসিনা। পড়শি দেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয় ৮ অগস্ট। তার পর থেকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। কিছু দিন আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৩২ ধানমন্ডির বাড়ি ক্রেন দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বার্তা দেয় নয়াদিল্লি। পরে বাংলাদেশ জানায়, তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের উদ্বেগ প্রকাশ ‘অনভিপ্রেত’। হাসিনাকে ফেরত চেয়েও ইতিমধ্যে নয়াদিল্লিকে চিঠি দিয়েছে ঢাকা। প্রত্যর্পণের জন্য প্রয়োজনীয় নথি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে এখনও ভারত কোনও জবাব দেয়নি।