বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে রবিবার বৈঠক করলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ওমানের রাজধানী মাসকটে রবিবার থেকে শুরু হয়েছে ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলন (ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্স)। ওই সম্মেলনের জন্য বর্তমানে ওমানে রয়েছেন জয়শঙ্কর এবং তৌহিদ। সম্মেলন শুরুর দিকেই মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক সেরে নিলেন জয়শঙ্কর। বৈঠকের ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে বিদেশমন্ত্রী লিখেছেন, আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক। পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের সপ্তদেশীয় মঞ্চ ‘বিমসটেক’ নিয়েও আলোচনা হয়েছে উভয়ের।
বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যেসব চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে, সেগুলি মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বৈঠকে। বস্তুত, দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বর্তমানে যে পরিস্থিতিতে রয়েছে, তা রবিবারে বৈঠকের গুরুত্বকে আরও বৃদ্ধি করেছে। বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়। কখনও বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার প্রসঙ্গে, কখনও ধানমন্ডিতে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে হামলার প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। ইউনূসের প্রশাসনও বুঝিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের মন্তব্য তারা পছন্দ করছে না। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে এমন বিবৃতি এবং পাল্টা বিবৃতির নজির অতীতে দেখা যায়নি।
হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পরে সাময়িক আশ্রয় নেন ভারতে। তাঁর বিরুদ্ধে বাংলাদেশে ‘মানবতা বিরোধী অপরাধ’-এর অভিযোগে মামলা চলছে। হাসিনার প্রত্যর্পণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে সরব ঢাকা। দিল্লিতে এই মর্মে কূটনৈতিক বার্তা (নোট ভার্বাল)-ও পাঠিয়েছে ইউনূসের সরকার। ওই কূটনৈতিক বার্তার প্রাপ্তিস্বীকার করলেও প্রকাশ্যে বিস্তারিত কোনও মন্তব্য করেনি বিদেশ মন্ত্রক। সম্প্রতি হাসিনার বেশ কিছু ভার্চুয়াল ভাষণ নিয়েও নিজেদের আপত্তির কথা দিল্লিকে জানিয়েছে ঢাকা। এই কূটনৈতিক টানাপড়েনের আবহেই রবিবার বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টার সঙ্গে ওমানে মুখোমুখি বসলেন জয়শঙ্কর।
আরও পড়ুন:
গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফরে যান ভারতের বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী। ওই সময়েও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে ইউনূস প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা হয় তাঁর। পাশাপাশি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয়ও উঠে আসে ডিসেম্বরের আলোচনায়। ওই সময়ে ইউনূস প্রশাসনকে মিস্রী বুঝিয়ে দেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গেও আগের জমানার মতোই সুসম্পর্ক চায় নয়াদিল্লি।