রিখটার স্কেলে ৪ মাত্রার ভূমিকম্প সাড়া ফেলে দিয়েছে দিল্লিতে। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সমাজমাধ্যমে এই ভূমিকম্প নিয়ে পোস্ট করেছেন। বাসিন্দাদের সতর্ক থাকার অনুরোধ করেছেন। সোমবার ভোরে কম্পন দেখে দিল্লির মানুষ রাস্তায় নেমে পড়েছিলেন। এখনও আতঙ্ক কাটেনি অনেকের। এই ভূমিকম্পের পর দিল্লির অনেকে বলছেন, তাঁরা কম্পনের সময়ে মাটির নীচ থেকে ‘গর্জনের মতো শব্দ’ পেয়েছেন। যা আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু কেন এই শব্দ? ভূমিকম্পে শব্দ হওয়া কি স্বাভাবিক? কী বলছে বিজ্ঞান?
সোমবারের ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল দিল্লিতেই। দক্ষিণ দিল্লির ধৌলাকুঁয়ায় দুর্গাবাই দেশমুখ কলেজ অফ স্পেশ্যাল এডুকেশনের জমির ঠিক নীচে ভূমিকম্প হয়েছে। মাটি থেকে তার গভীরতা মাত্র পাঁচ কিলোমিটার। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ভূমিকম্পের গভীরতা কম থাকলে অনেক ক্ষেত্রে শব্দ হতে পারে।
আরও পড়ুন:
আমেরিকার জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) অনুযায়ী, ভূমিকম্পের সময়ে ভূমি কাঁপে। এর ফলে ছোট ছোট ভূকম্পীয় তরঙ্গ তৈরি হয়। এগুলি মাটির উপরে হাওয়ার সংস্পর্শে এলে শব্দতরঙ্গ তৈরি করে। ভূমিকম্পের ফলে উৎপন্ন প্রথম তরঙ্গের নাম পি-ওয়েভ। এগুলি শব্দতরঙ্গের মতোই। মাটির উপরেও সেই কম্পনের শব্দ শোনা যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ভূমিকম্পের কেন্দ্র যত বেশি অগভীর হবে, তার শক্তি মাটির উপরে ধাক্কা দেবে তত বেশি। উচ্চ কম্পাঙ্কের ভূকম্পীয় তরঙ্গ যদি মাটির নীচে তৈরি হয়, তবে তার শব্দ উপর থেকেও শোনা যেতে পারে। জমি শক্ত হলে গর্জন-শব্দ বেশি হতে পারে। দিল্লির ক্ষেত্রেও তেমনটাই ঘটেছে বলে মত অনেকের।
দিল্লির বাসিন্দারা অনেকেই মানতে পারছেন না, রিখটার স্কেলে সোমবারের ভূমিকম্পের মাত্রা মাত্র ৪। উৎসস্থল অগভীর হওয়ার কারণে মাত্র ৪ মাত্রাতেই এত কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ভোর ৫টা ৩৬ মিনিটে বেশ কয়েক সেকেন্ড কম্পন স্থায়ী হয়। প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘দিল্লি এবং আশপাশের এলাকায় কম্পন অনুভূত হয়েছে। সকলের কাছে আমার অনুরোধ, আপনারা শান্ত থাকুন। ভূমিকম্প-পরবর্তী কম্পন হতে পারে, তার জন্য সতর্ক থাকুন। পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।’’ বাসিন্দারা অনেকেই সমাজমাধ্যমে অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নিয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, এই ধরনের কম্পন এর আগে কখনও অনুভব করেননি।